|
|
|
|
খাদ্যে ভেজাল রোধে ক্রেতার হাতে ক্ষমতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
খাদ্যে ভেজাল মিশিয়েদের বিরুদ্ধে এ বার সরাসরি ব্যবস্থা নিতে পারবেন ক্রেতারা। এমনটা এই প্রথম ঘটতে চলেছে ভারতে। ২০০৬ সালে পাশ হয়ে যাওয়া খাদ্যের সুরক্ষা ও মান বিষয়ক আইনটি সারা দেশে কার্যকর করা হয়েছে গত ৫ অগস্ট। এই আইনের বলেই এ বার সাধারণ মানুষ খাবার কিনে, স্বাদ নিয়ে তাতে কোনও গরমিল দেখলে সরাসরি নমুনা নিয়ে অভিযোগ জানাতে পারবেন বিক্রেতার বিরুদ্ধে।
সংশ্লিষ্ট আইনটি ২০০৬ সালে পাশ হয়ে গেলেও খাদ্যের আদর্শ মান কেমন হবে তা নির্ধারিত না হওয়ার কারণেই এতদিন কার্যকর করা যায়নি। নতুন আইনে খাদ্যে ‘নিউট্রাসিউটিক্যালস’-এর মাত্রা যথাযথ রাখার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি মানুষের স্বাস্থ্য ও সুস্থতার উপর নির্ভরশীল। এ ক্ষেত্রে ডায়েটশিয়ানরা খাদ্যের অত্যাবশ্যক গুণাগুণ সম্পর্কে যে যে বিষয়ের উপর জোর দিয়েছেন সেগুলি খাদ্যে রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখা হবে।
কোনও ক্রেতা খাদ্যের ব্যাপারে অভিযোগ জানানোর পর খাদ্য পরিদর্শক যাতে দ্রুত ব্যবস্থা নেন সে দিকেও জোর দেওয়া হয়েছে আইনে। অভিযোগ জমা পড়ার এক বছরের মধ্যে বিচার প্রক্রিয়া শুরু করতে বলা হয়েছে। খাদ্যে ভেজাল সংক্রান্ত প্রায় এক লক্ষ মামলা দেশের বিভিন্ন আদালতে ঝুলে রয়েছে। সে দিকে লক্ষ রেখেই বিচার প্রক্রিয়া দ্রুত নিষ্পত্তি করায় জোর দেওয়া হয়েছে। আইনে বলা হয়েছে, ভেজাল মেশানোর অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে অপরাধীর সর্বোচ্চ ১০ লক্ষ টাকা জরিমানা বা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। খাদ্য সংক্রান্ত যে সব বিষয়ে মামলা রুজু করা যেতে পারে তার মধ্যে রয়েছে খাদ্যে অখাদ্য মেশানো, লাইসেন্স ছাড়া খাবার বিক্রি, নিচু মানের খাবার বিক্রি, অস্বাস্থ্যকর ভাবে খাবার তৈরি, খাদ্যের গুণাগুণ সম্পর্কে মিথ্যে প্রচার, বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন, আদর্শ মান অনুযায়ী খাবার পরিবেশন না করা, মিথ্যে ব্র্যান্ডে খাবার বিক্রি ইত্যাদি। অভিযোগ খতিয়ে দেখার জন্য দেশের বিভিন্ন খাদ্য-পরীক্ষা গবেষণাগারগুলিকে উন্নত করার ভাবনা-চিন্তাও চলছে।
আইনটি যথাযথ কার্যকর করতে ২১ জন সদস্যের খাদ্য কর্তৃপক্ষ গড়ে তোলা হয়েছে। এর প্রতিনিধি থাকবেন সাতটি মন্ত্রকে। মন্ত্রকগুলি হল-স্বাস্থ্য, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, বাণিজ্য, ক্ষুদ্র শিল্প, আইন মন্ত্রক এবং ক্রেতা বিষয়ক মন্ত্রক। বিভিন্ন রাজ্যে আইনটি কার্যকর করা হচ্ছে খাদ্য নিরাপত্তা কমিশনের মাধ্যমে। দেশের ২২টি রাজ্য ইতিমধ্যেই ‘খাদ্য-নিরাপত্তা কমিশনার’ নিয়োগ করেছে। পশ্চিমবঙ্গের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেছেন, “আমরাও চাই ভেজালকারীদের কড়া শাস্তি হোক। নানা কারণে ভেজালের দায়ে অভিযুক্তরা পার পেয়ে যাচ্ছেন।” তবে এ রাজ্যে এখনও ‘খাদ্য-নিরাপত্তা কমিশনার’ নিয়োগ হয়নি কেন? তিনি বলেন, “এ ব্যাপারে কেন্দ্রের কোনও নির্দেশিকা এসেছে কি না, খোঁজ নিতে হবে।” |
|
|
|
|
|