|
|
|
|
ভবিষ্যতের নেতা গড়ার ‘ক্লাসে’ শিক্ষক রাহুল |
সন্দীপন চক্রবর্তী • কলকাতা |
নেতা তৈরির পাঠশালায় এ বার শিক্ষকের ভূমিকায় রাহুল গাঁধী!
এত দিন তিনি কাজ করে এসেছেন ‘আম আদমি কা সিপাহি’দের নিয়ে। এ বার ‘আম আদমি’র জন্য দলের জনপ্রতিনিধিরা যাতে আরও ভাল করে কাজ করতে পারেন, সেজন্য উদ্যোগী হয়েছেন এআইসিসি-র সাধারণ সম্পাদক এবং কংগ্রেসের তরুণ প্রজন্মের ‘মুখ’ রাহুল।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নব নির্বাচিত তরুণ বিধায়কদের ভবিষ্যতের দক্ষ নেতা হিসাবে প্রশিক্ষিত করতে শিবিরের আয়োজন করছে কংগ্রেস। জনসংযোগ, অর্থনীতির প্রাথমিক পাঠের পাশাপাশি আন্দোলন এবং সংগঠন গড়ে তোলার প্রক্রিয়া শেখানো ওই শিবিরের উদ্দেশ্য। অর্থনীতির গোড়ার কথার মধ্যে থাকছে মূলত বাজেট বিশ্লেষণের পদ্ধতি। এ রাজ্যের কংগ্রেস বিধায়কদের ‘ক্লাসে’ যা ইতিমধ্যেই এক প্রস্ত ব্যাখ্যা করে গিয়েছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। ‘কর্পোরেট’ ধাঁচের শিবিরে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন পেশাদার বিশেষজ্ঞেরা। আর রাজনীতি ও সংগঠনের ব্যাপারে পরামর্শ দেওয়ার জন্য হাজির থাকার কথা খোদ রাহুলের। যে শিবির নিয়ে এ রাজ্যের নবীন কংগ্রেস বিধায়কেরা যথেষ্ট উৎসাহিত।
গুড়গাওঁয়ের জওহরলাল নেহরু লিডারশিপ ইনস্টিটিউট (জেএনএলআই)-এ আগামী ৮ থেকে ১১ অগস্ট এমনই এক শিবিরে ডাক পেয়েছেন এ রাজ্যের তরুণ কয়েক জন কংগ্রেস বিধায়ক। শিবিরে এক দিন থাকার কথা রাহুলের। বাকি দিনগুলিতে জেএনএলআই-এর প্রশিক্ষকেরা নবীন বিধায়কদের ‘ক্লাস’ নেবেন। তা ছাড়া, শুধু গুড়গাওঁয়ের প্রতিষ্ঠানের চার দেওয়ালের মধ্যে আবদ্ধ না-রেখে যুব কংগ্রেস কর্মীদের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গোটা দেশ জুড়েই ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন রাহুল। পশ্চিমবঙ্গ প্রদেশ যুব কংগ্রেসের সভানেত্রী মৌসম বেনজির নূরের কথায়, “প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে আমাদের কর্মীদের জন্য একটা করে প্রশিক্ষণ শিবির চলছে। জেএনএলআই-এর প্রশিক্ষকেরাই সেখানে থাকছেন। কী ভাবে মানুষের কাছে পৌঁছতে হবে, আন্দোলন করতে হবে, সংগঠনকে আরও ভাল ভাবে তৈরি করতে হবে সে সব শেখানো হচ্ছে এই শিবিরগুলিতে। এ বার বিধায়কদের জন্যও আলাদা করে একটা শিবির হওয়ার কথা।” তবে গুড়গাঁওয়ের ওই শিবিরের বিষয়ে প্রদেশ যুব কংগ্রেসের কাছে আনুষ্ঠানিক ভাবে কোনও সূচি এখনও পৌঁছয়নি।
কংগ্রেস বিধায়কেরা অবশ্য খবর পেয়ে তাঁদের মতো করে প্রস্তুত হতে শুরু করেছেন। যেমন, বাঁকুড়ার কোতুলপুরের নবীন বিধায়ক সৌমিত্র খান বলছেন, “যুব কংগ্রেস করতে গিয়ে বিভিন্ন শিবিরে গিয়েছি। কিন্তু পেশাদার প্রশিক্ষণ বলতে যা বোঝায়, সেটা এ বারই প্রথম হবে। রাহুলজি’ও এক দিন থাকবেন।” মালদহের চাঁচলের তরুণ বিধায়ক আসিফ মেহবুবের কথায়, “দলের পাশাপাশি প্রশাসন পরিচালনার শিক্ষাও আমাদের নিতে হবে। ওখানে (গুড়গাঁও) বিশেষজ্ঞেরা এই বিষয়গুলি শেখাবেন। গোটা পরিকল্পনাটিই খুব ভাল।” কংগ্রেস সূত্রের খবর, ৪৫ বছর পর্যন্ত বয়সের বিধায়কদের পর্যায়ক্রমে ওই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তার জন্য সংশ্লিষ্ট বিধায়ক যুব কংগ্রেসের সংগঠনের আওতাধীন কি না, তা দেখা হবে না।
যুব কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, “একেবারে কর্পোরেট কায়দায় পঞ্চায়েত থেকে শুরু করে লোকসভা পর্যন্ত আমাদের দলের জনপ্রতিনিধিদের প্রশিক্ষিত করে তোলার কাজটাই করা হয় জেএনএলআই-এ। পঞ্চায়েত প্রতিনিধি হয়ে কোনও একটি রাজ্যের সুদূর একটি গ্রামে এক মহিলার কী রকম অভিজ্ঞতা হচ্ছে, তফসিলিরাই কী মনে করছেন এই রকম আলাদা আলাদা বিভাগে প্রতিনিধিদের সঙ্গে আদানপ্রদান চালানো হয়। প্রশিক্ষকেরা যেমন পরামর্শ দেন, প্রতিনিধিরাও তাঁদের বাস্তব অভিজ্ঞতার নিরিখে তা যাচাই করে নেন।” প্রসঙ্গত, পশ্চিমবঙ্গের যুব কংগ্রেসের জন্য জেএনএলআই-এরই সহায়তায় দুর্গাপুরে একটি রাজ্য স্তরের প্রশিক্ষণ শিবির হয়ে গিয়েছে। জনপ্রতিনিধি হয়ে এসে কংগ্রেস কর্মীরা কী ভাবে দুর্নীতি নামক ব্যাধির মোকাবিলা করবেন সেই টোটকাও শেখানোর চেষ্টা হচ্ছে গুড়গাঁওয়ের প্রতিষ্ঠানে। নেপথ্যে রাহুল। কারণ তিনি বিলক্ষণ জানেন, তাঁদের নেপথ্যে আন্না হাজারেরা মাথা তুলছেন! |
|
|
|
|
|