বাড়ছে লুঠপাট, নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন শহরবাসীর
মোটরবাইকে করে এসে সেপকো টাউনশিপে এক মহিলার হার ছিনতাই করে পালাল দুষ্কৃতীরা। শনিবার বিকেলের এই ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, দুর্গাপুর থানা এলাকায় বাড়ছে মহিলাদের হার ছিনতাইয়ের ঘটনা। বাড়ছে চুরি-ডাকাতিও। তার উপরে বেশ কিছু দিন পরে ফের হার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে সেপকো টাউনশিপে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শুভঙ্কর সিংহ সরকার অবশ্য জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। শীঘ্রই দুষ্কৃতীদের ধরে ফেলা হবে।
বছরখানেক আগে মোটরবাইকে চড়ে মহিলাদের হার ছিনতাই চক্রের দৌরাত্ম্যে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন শহরের বাসিন্দারা। সিটি সেন্টার, সেপকো ও ইস্পাত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েক বার হার ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। মার্কনির ৪ নম্বর স্ট্রিটে মোটরবাইক নিয়ে এসে দুষ্কৃতীরা এক প্রৌঢ়ার গলার হার ছিনতাই করে। টানা-হ্যাঁচড়ায় তাঁর গলা থেকে রক্ত ঝরতে থাকে। এমন পরিস্থিতিতে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়। বেড়ে গিয়েছিল চুরি-ডাকাতির পরিমাণও। টহলদারি বাড়িয়ে কোনও রকমে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। কিন্তু সম্প্রতি সেপকো, সিটি সেন্টারের মতো এলাকায় ডাকাতির ঘটনা বাড়ছে। বেনাচিতি এলাকায় টাকা ছিনতাইয়ের একাধিক ঘটনা ঘটছে। শনিবার সেপকো এলাকায় ফের হার ছিনতাইয়ের ঘটনায় নতুন করে পুলিশের ভুমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছেন শহরবাসী।
সেপকো টাউনশিপের বাসিন্দা কোয়েল দত্ত জানান, শনিবার বিকেল সাড়ে ৫টা নাগাদ ১৮ নম্বর স্ট্রিট ধরে আড়াই বছরের ছেলেকে নিয়ে পার্কে যাচ্ছিলেন তিনি। হঠাৎ একটি মোটরবাইক এসে দাঁড়ায়। পিছনের সিটে বসে থাকা এক যুবক হ্যাঁচকা টানে তাঁর গলা থেকে হার ছিঁড়ে নিয়ে বাইক চালিয়ে উধাও হয়ে যায়। তিনি চিৎকার করলে আশপাশের বাসিন্দারা ছুটে আসেন। কিন্তু ততক্ষণে দুষ্কৃতীরা হাওয়া। বিষয়টি নিয়ে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, “বিকেলেই রাস্তায় যদি এই ধরনের ঘটনা ঘটে, তাহলে রাতে কী হবে? নিরাপত্তা কোথায়?”
সিটি সেন্টারের ম্যাক্সমুলার রোডে শ্যামলকুমার সিংহের বাড়ির পিছনের দরজা ভেঙে গত ২ অগস্ট সর্বস্ব লুঠ করে নিয়ে যায় দুষ্কৃতীরা। যাওয়ার সময়ে দুষ্কৃতীরা গ্যারাজ খুলে গাড়িটিও নিয়ে পালায়। তবে সকালে রাজবাঁধের কাছে সেটির হদিস মেলে। ডাকাতির কোনও কিনারা করতে পারেনি পুলিশ। এর আগে ১ অগস্ট বেনাচিতির আমবাগানের কাছে এক হোটেল কর্মীর পথ আটকে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে চম্পট দেয় দুষ্কৃতীরা। অন্য দিকে, ২৯ জুলাই বেনাচিতিতে এক ব্যক্তি ব্যাঙ্ক থেকে টাকা তুলে তা মোটরবাইকের ডিকিতে রেখে একটি মোবাইল সংস্থার অফিসে গিয়েছিলেন। ফিরে দেখেন ডিকি ভাঙা, টাকা উধাও। ২২ জুলাই রাতে সেপকো টাউনশিপে আশিসকুমার ঘোষের বাড়িতে চুরি হয়। একটি ঘরের লোহার জানলা ভেঙে ভিতরে ঢোকে দুষ্কৃতীরা। আলমারি খুলে গয়না, নগদ টাকা, জামাকাপড় নিয়ে চম্পট দেয়। শনিবার দিনের আলোয় মোটরবাইকে চড়ে এসে সেপকো টাউনশিপে এক মহিলার হার ছিনতাই হয়।
সেপকো এলাকার বাসিন্দা কৌশিক দত্ত, শিবশঙ্কর দত্তরা বলেন, “এলাকায় যে ভাবে একের পর এক চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে তাতে পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।” সিটি সেন্টারের বাসিন্দা শ্যামল খাস্তগির বলেন, “বাড়ি ফাঁকা রেখে বাইরে বেরোনোর কোনও প্রশ্নই নেই।” বেনাচিতির তুষার বণিক, সন্দীপন মল্লিকেরা জানান, দিনে-দুপুরে যে ভাবে ছিনতাই হচ্ছে, তাতে রাস্তাঘাটে সাধারণ মানুষের আদৌ কোনও নিরাপত্তা আছে বলে মনে হয় না।
পুলিশ অবশ্য বাসিন্দাদের অভিযোগ মানতে চায়নি। তাদের বক্তব্য, ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশকর্মীরা ছুটে গিয়েছেন ঘটনাস্থলে। সূত্রের খোঁজে বাসিন্দাদের সঙ্গে কথাও বলেছেন। প্রতিটি অপরাধের ঘটনারই তদন্ত শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু সূত্র মিলেছে বলে দাবি করেছেন এক পুলিশ অফিসার। তবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, “কিছু এলাকায় পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। দুষ্কৃতীদের খোঁজে তল্লাশি চলছে। খুব শীঘ্র তাদের ধরে ফেলা হবে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.