বলছে পুলিশ
এলাকা দখলে খুন সিটু নেতা
দিনের আলো নিভলেই অলিতে গলিতে বসে মদের আসর। জুয়ার আসর বসিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকার কারবার করে দুষ্কতীরা। দেহ ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত মহিলাদেরও দেখা মেলে মাল্লাগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজারে। যেন দুষ্কৃতীদের স্বর্গরাজ্য। শিলিগুড়ি, ইসলামপুর, রায়গঞ্জ, মালদা, জলপাইগুড়ি, কোচবিহার তো বটেই বিহার, নেপাল থেকেও দুষ্কৃতীরা এসে আড্ডা বসায় নিয়ন্ত্রিত বাজারে। অভিযোগ, সেই বাজারের নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিতে ছয় মাস ধরে সক্রিয় হয়ে উঠেছিল সঞ্জীব যাদব, মোহন যাদবের দল। হুমকি, ভয় দেখানো তো বটেই তাদের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে দাপিয়ে বেড়ানোর অভিযোগও তুলেছেন ব্যবসায়ীরা। সিটু নেতা রাজকুমার যাদব ও তাঁর আত্মীয় সুরেন্দ্র যাদব খুনের তদন্তে নেমে ক্রমশ সে তথ্য উঠে আসছে পুলিশের হাতে। বিহারে খুন, ছিনতাইয়ের মতো অপরাধের সঙ্গে যুক্তদের অনেকের আনাগোনা রয়েছে ওই বাজারে। দার্জিলিংয়ের পুলিশ সুপার দেবেন্দ্র প্রকাশ সিংহ বলেন, “তদন্তে বিভিন্ন তথ্য উঠে আসছে। আমরা সবই তদন্ত করে দেখছি। একজন অভিযুক্ত পালিয়ে গিয়েছে। তার খোঁজেও তল্লাশি চলছে। কী কারণে ২ জনকে খুন করা হয়েছে তা দ্রুত জানা যাবে বলে আশা করছি।” শিলিগুড়ির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি বলেন, “ব্যবসায়ীরা অভিযুক্ত ২ জনের নামে স্মারকলিপি দিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগ করেছিলেন। সেই সময় তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। গুলি করে খুনের অভিযোগ ওঠার পর ২ জনকে আমরা গ্রেফতার করেছি। বিহারে সমস্তিপুর জেলার দুটি থানায় তাদের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ রয়েছে বলে জানা গিয়েছে। পুরো বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” শনিবার রাতে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতির গুদামপট্টিতে গুলি করে খুন করা হয় সিটু নেতা রাজকুমার যাদবের আত্মীয় সুরেন্দ্র যাদবকে। গুলিবিদ্ধ সিটু নেতা রাজকুমারবাবুও চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, নিহত সুরেন্দ্র যাদব ও অভিযুক্ত ২ জনের বিরুদ্ধে বিহারের সমস্তিপুর জেলার দুটি থানাতে খুন ও ছিনতাইয়ের একাধিক অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সুরেন্দ্র আত্মীয়ের বাড়িতে ঘুরতে এলেও অভিযুক্ত মোহন ও সঞ্জীব এক বছরের বেশি সময় ধরে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে কাজ করছে। প্রশ্ন উঠেছে, বিহারের দুষ্কর্মের সঙ্গে যুক্ত এরকম ২ জন দুষ্কৃতী দীর্ঘদিন ধরে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতিতে আশ্রয় নিলেও পুলিশ কেন বিষয়টি জানতে পারেনি? ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, নিয়ন্ত্রিত বাজারে দীর্ঘদিন ধরে শ্রমিকের কাজ করে সঞ্জীব ও মোহন। কখনও ভ্যানচালক হিসেবে কাজ করে। আবার কখনও ট্রাকে জিনিসপত্র ওঠানো-নামানোর কাজও করে। বাজার সংলগ্ন পোখাইজোতে তাদের বাড়ি। সেখানে রাজকুমার যাদবেরও বাড়ি। সঞ্জীব ও মোহনের বিরুদ্ধে গত ছয় মাস ধরে চুরি, দাদাগিরির অভিযোগ উঠেছে। গত ১৩ জুলাই নিয়ন্ত্রিত বাজারের ব্যবসায়ীরা প্রধাননগর থানায় স্মারকলিপি দিয়ে অভিযুক্ত ২ জন সহ ৫ জনের বিরুদ্ধে আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে ভয় দেখানোর অভিযোগও তোলা হয়। তার পরেই গত শনিবার রাতে গুলি চালিয়ে ২ জনকে খুন করার অভিযোগ ওঠে সঞ্জীব ও মোহনের বিরুদ্ধে। দুষ্কৃতীরা ছয় রাউণ্ড গুলি করে। পাইপগান ও নাইন এমএম পিস্তল থেকে ওই গুলি ছোঁড়া হয় বলে পুলিশ সন্দেহ করছে। এই অবস্থায় ব্যবসায়ীরা যৌথভাবে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সন্ধ্যা ৬টার পরে অপ্রয়োজনীয় গাড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারে যাতে না রাখা হয় সে ব্যপারে দাবি জানাবে তাঁরা। এ ছাড়াও রাতে নিয়ন্ত্রিত বাজারের ভিতরে যারা থাকবে তাঁদের পরিচয় পত্র দেওয়ার দাবি তুলেছেন ব্যবসারীয়া। তাঁরা বলেন, “রাতে নানা জায়গার মানুষ ভিড় করেন নিয়ন্ত্রিত বাজরে। অধিকাংশই অপরিচত। পুলিশের ভ্যান একবার টহল দিয়েই ফিরে যায়। রাতে দুষ্কৃতীরা সক্রিয় হয়ে পড়ায় বেসরকারি নিরাপত্তারক্ষীরা লাঠি হাতে বাইরে বেরোতে সাহক পান না।” মাছ বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক বাপি চৌধুরী ও সবজি বাজারের পক্ষে তপন সাহা বলেন, “প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপযুক্ত ব্যবস্থা না নিলে নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি দুষ্কৃতী মুক্ত করা যাবে না। সে কথা জানানো হয়েছে।”
Previous Story Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.