হাতি তাড়াতে গিয়ে লাইনে শুয়ে ট্রেনের চাকায় মৃত ৩
রাতে হাতি তাড়াতে বেরিয়েছিলেন পাঁচ জন। কিন্তু বাড়ি না ফিরে শুয়েছিলেন রেললাইনের উপরে। সেই লাইনে চলে এল ট্রেন। কাটা পড়ে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হল তিন যুবকের। গুরুতর জখম দুই বালক। কিন্তু মঙ্গলবার গভীর রাতে ডুয়ার্সের বানারহাটে, বিন্নাগুড়ি স্টেশন থেকে ১ কিলোমিটার দূরে কেন ওই পাঁচ জন লাইনে শুয়েছিলেন, স্পষ্ট নয়।
প্রাথমিক তদন্তের পরে রেল পুলিশ মনে করছে, মৃত ও আহতেরা ‘আচ্ছন্ন অবস্থায়’ লাইনে ঘুমিয়ে পড়াতেই ওই কাণ্ড। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্ট মেলার আগে তারা পুরোপুরি নিশ্চিত নয়। তা ছাড়া, বিন্নাগুড়ি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আহত দুই বালক বুধবার দিনভর সংজ্ঞাহীন থাকায়, জানা যায়নি ওই রাতে ঠিক কী ঘটেছিল।
রেল পুলিশ জানিয়েছে, মৃতেরা হলেন শেরবাহাদুর ছেত্রী (৩০), অভয় মুন্ডা (২৬) এবং কৃষ্ণ তামাং (২২)। ওই তিন জন এবং আহত জোসেফ মুন্ডা ও ফুলচরণ মাহালির বাড়ি বিন্নাগুড়ি স্টেশনের কাছে একটি বস্তিতে। তাঁরা বিন্নাগুড়ি সেনা ছাউনিতে দিনমজুরির কাজ করতেন। জোসেফের হাতের একাংশ কাটা পড়েছে। মারাত্মক চোট লেগেছে ফুলচরণের পায়ে।
দুর্ঘটনায় মৃতদের পরিজনেরা। রাজকুমার মোদকের তোলা ছবি।
রবিবার রাতে অসমের কোকরাঝাড়ে একটি নাশকতার প্রেক্ষিতে শিলিগুড়ি-আলিপুরদুয়ার লাইনে ট্রেন চলাচলের সময়সূচির সাময়িক ভাবে বদলেছে। ৫৫৭২৫ আপ এনজেপি-আলিপুরদুয়ার প্যাসেঞ্জার সাধারণত রাত পৌনে ৯টা নাগাদ বিন্নাগুড়ি স্টেশনে পৌঁছয়। কিন্তু পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেটি বিন্নিগুড়ি পৌঁছয় মঙ্গলবার রাত ১টা ২০ মিনিটে। রেল সূত্রের খবর, বিন্নাগুড়ি ছেড়ে ট্রেনটি যখন দলগাঁ স্টেশনের উদ্দেশে যাচ্ছে, তখন রাত ১টা ৪০ মিনিট নাগাদ দুর্ঘটনাটি ঘটে। দলগাঁ স্টেশনে দুর্ঘটনার কথা জানান প্যাসেঞ্জারের চালক। উত্তর-পূর্ব সীমান্ত রেলের আলিপুরদুয়ার ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার অলকানন্দা সরকার বলেন, “সাধারণত রাত সাড়ে ৯টার পরে ওই লাইন দিয়ে যাত্রীবাহী গাড়ি চলে না। কিন্তু মালগাড়ি যায়।
স্থানীয় বাসিন্দারা তা জানেন। ফলে, রাতে রেললাইনে শোওয়ার ঝুঁকি কেউ নেবেন না। ট্রেন চালক যখন ওই পাঁচ জনকে লাইনে শুয়ে থাকতে দেখেন, তখন ব্রেক কষে গাড়ি থামানোর পরিস্থিতি ছিল না। কেন ওই পাঁচ জন লাইনের উপরে ছিলেন, তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। রেল পুলিশ খোঁজ নিচ্ছে।”
মৃতদের আত্মীয়েরা এ দিন দাবি করেছেন, বিন্নাগুড়ি চা বাগানে হাতি ঢুকেছে খবর পেয়ে ওই পাঁচ জন মঙ্গলবার রাত সওয়া ৮টা নাগাদ সে দিকে যান। মৃত কৃষ্ণ তামাংয়ের স্ত্রী অঞ্জলি বলেন, “আমার স্বামী বলে গেলেন, হাতি তাড়াতে যাচ্ছেন।
কিন্তু কেন ওঁরা লাইনে শুয়ে থাকতে গেলেন, বুঝতে পারছি না। এখন সংসার কী করে চালাব?” বিন্নাগুড়ি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বলরাম রায়ের আশ্বাস, “পঞ্চায়েতের সাধ্য অনুযায়ী মৃতদের পরিবারকে সাহায্য করা হবে।”
Previous Story Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.