|
|
|
|
ক্ষুব্ধ হাইকোর্ট, তলব সচিবকে |
শিক্ষক হাজিরার নীতি জানাতে পারেনি রাজ্য |
অরুণোদয় ভট্টাচার্য • কলকাতা |
কলেজে শিক্ষকদের হাজিরা এবং নিয়মিত ক্লাস নেওয়ার ব্যাপারে রাজ্য সরকার তাদের নীতি জানাতে না-পারায় ক্ষুব্ধ কলকাতা হাইকোর্ট। এই ব্যাপারে রাজ্য সরকারকে তাদের নীতি হাইকোর্টকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছিল বিচারপতি কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্ত ও বিচারপতি জয়মাল্য বাগচির ডিভিশন বেঞ্চ। ক্ষুব্ধ ডিভিশন বেঞ্চ বুধবার নির্দেশ দেয়, রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের প্রধান সচিব, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার এবং রাজ্যের শিক্ষা অধিকর্তাকে আগামী ১০ অগস্ট হাইকোর্টে হাজির থাকতে হবে। ডিভিশন বেঞ্চ তাঁদের কাছে জানতে চাইবে, বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি কেন।
কয়েক দিন আগে ‘ডিসকলেজিয়েট’ হওয়া এক ছাত্রী হাইকোর্টে মামলা করেন। তিনি পরীক্ষায় বসার অনুমতি চেয়ে আবেদন করেন আদালতে। সেই সময় কল্যাণজ্যোতি সেনগুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ ওই ছাত্রীকে জানায়, ডিসকলেজিয়েট হয়ে গেলে তাঁকে পরীক্ষায় বসার অনুমতি দেওয়ার এক্তিয়ার হাইকোর্টের নেই।
ডিভিশন বেঞ্চ ওই ছাত্রীর আবেদন নাকচ করে দিলেও তাঁর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু প্রশ্ন তুলেছিল। ওই ছাত্রী জানিয়েছিলেন, ছাত্রছাত্রী ক্লাসে হাজির না-থাকলে শাস্তি হয়। তাঁদের নন-কলেজিয়েট বা ডিসকলেজিয়েট করা হয়। কিন্তু তিনি দেখেছেন, দিনের পর দিন বহু শিক্ষকও ক্লাসে আসেন না। ফলে ক্লাস হয় না। হয়তো সারা দিনে একটি ক্লাস করে বসে থাকতে হয় ছাত্রছাত্রীদের। আবার অনেক সময় কলেজে হাজির থাকলেও শিক্ষক বা শিক্ষিকা ক্লাসে আসেন না।
আবেদনকারিণী ছাত্রীর তোলা প্রশ্ন এবং বক্তব্য বিচারপতিকে ভাবায়। তিনি মনে করেন, গরহাজির থাকায় ছাত্রছাত্রীরা শাস্তি পান। অনেক ক্ষেত্রে সেই শাস্তির জেরে তাঁদের বছর নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গরহাজিরার জন্য কী ব্যবস্থা রয়েছে? ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্য সরকারের কৌঁসুলি (জিপি) অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই ব্যাপারে জানতে চান। অশোকবাবু সেই সময় জানান, উচ্চশিক্ষা মন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছে। উচ্চশিক্ষা মন্ত্রী উচ্চশিক্ষার সব বিষয় খতিয়ে দেখে সামগ্রিক উন্নয়নের পরামর্শ দেওয়ার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছেন। সেই কমিটি শিক্ষকদের গরহাজিরার বিষয়টিও দেখবে। ডিভিশন বেঞ্চ সেই সময় শিক্ষকদের গরহাজিরা এবং ক্লাস না-নেওয়ার জন্য সরকার কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা এক মাসের মধ্যে হাইকোর্টকে জানাতে বলে।
বুধবার মামলার শুনানির সময় সরকারি আইনজীবী জানিয়ে দেন, কলেজের শিক্ষক-শিক্ষিকাদের গরহাজিরা এবং ক্লাস না-নেওয়ার ক্ষেত্রে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়ার নীতি আছে বা আদৌ আছে কি না, সেই ব্যাপারে তিনি কিছুই বলতে পারছেন না। কারণ তাঁর কাছে এই বিষয়ে কোনও সরকারি নির্দেশ নেই। তার পরেই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় এবং রাজ্যের উচ্চশিক্ষা দফতরের দুই কর্তাকে সশরীরে হাইকোটের্র্ হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয় ডিভিশন বেঞ্চ। |
|
|
|
|
|