|
|
|
|
সুভাষের ‘প্রতিরোধ’ তত্ত্বেই সিলমোহর বামেদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
পশ্চিমবঙ্গে বামেদের ‘প্রতিবাদ থেকে প্রতিরোধে’র পথে যাওয়ার ‘লাইনে’র পাশে দাঁড়ালেন দেশের একমাত্র বাম-শাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা সিপিএম পলিটব্যুরোর সদস্য মানিক সরকার। পশ্চিমবঙ্গে বামেরা যে ভাবে হৃত জমি পুনরুদ্ধার করতে ঘুরে দাঁড়াচ্ছেন, তাকেই ‘জীবনের চ্যালেঞ্জ’ বলে স্বাগত জানিয়েছেন মানিকবাবু। বস্তুত, সুভাষ চক্রবর্তীর স্মরণসভাকে সামনে রেখে প্রতিরোধের আন্দোলন গড়ে তোলার পক্ষেই বৃহস্পতিবার জোরালো সওয়াল করেছেন বাম নেতৃত্ব। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু যেমন বলেছেন, প্রতিবাদ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তোলার অঙ্গীকারই সুভাষবাবুর প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হবে, তেমনই মানিকবাবুর বক্তব্য, মানুষের আন্দোলনের স্রোতেই সুভাষবাবু ‘জীবিত’ থাকবেন। সুভাষবাবুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে বিমানবাবুরা কেউ যাননি। এ দিনের মঞ্চকে অবশ্য তাঁরা বর্তমান পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্যই ব্যবহার করেছেন। অনুষ্ঠানের আয়োজক ‘সুভাষ চক্রবর্তী ফাউন্ডেশনে’র তরফে সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য তড়িৎ তোপদার বলেছেন, “সত্যি কথা সাহস করে বলতে জানত সুভাষ। নির্বাচন কমিশনও নিরপেক্ষ নয়, এই কথাটা ২০০৬-এর ভোটের সময় বলতে পেরেছিল সুভাষই।”
সুভাষবাবুর দ্বিতীয় মৃত্যুবার্ষিকীতে এ দিন রবীন্দ্র সদনে ‘বামপন্থী আন্দোলনের প্রাসঙ্গিকতা ও সুভাষ চক্রবর্তী’ শীর্ষক বিষয়ে মানিকবাবু বলেন, “পশ্চিমবঙ্গে যা চলছে, এটা একটা পর্যায়। অনেকেই এর জন্য প্রস্তুত ছিলেন না। বিশেষ করে নতুন প্রজন্ম। কিন্তু পুরনো লোকেরা জানেন, পশ্চিমবঙ্গ আগেও এই ধরনের আক্রমণ প্রতিহত করে এগিয়েছে।” এখনও আক্রমণের মধ্যেও বামপন্থীরা হাতছাড়া জমি পুনরুদ্ধার করছেন বলে জানিয়ে মানিকবাবু পশ্চিমবঙ্গের মানুষের এই ‘প্রতিহত’ করার মনোভাবকে সাধুবাদ জানান। তাঁর মতে, ‘একটা আতঙ্ক’ থেকেই কিছু মানুষ ‘বামপন্থার প্রাসঙ্গিকতা’ নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। তাঁর কথায়, “পশ্চিমবঙ্গে রক্তের নদী বইয়ে দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু তাতে বামফ্রন্টের সাফল্য ধুইয়ে দেওয়া যাবে না।”
বিমানবাবু বলেন, “যদি আমরা এখানে অঙ্গীকার করি, বামপন্থার প্রতি যে হামলা হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এবং প্রতিবাদ থেকে প্রতিরোধ গড়ে তুলব, তবেই সুভাষের প্রতি প্রকৃত শ্রদ্ধাজ্ঞাপন হবে।” সুভাষবাবু বামপন্থী দলের শৃঙ্খলা মেনে-চলা অনুগত সৈনিক ছিলেন কি না, তা নিয়ে তাঁর জীবদ্দশাতেই বিতর্ক ছিল। বিমানবাবু অবশ্য এ দিন বলেন, “সুভাষের আদর্শ বামপন্থার বাইরে নয়। সমাজ বদলের লক্ষ্যের বাইরে আন্দোলন সুভাষ করেনি। এটা মাথায় রেখেই আমাদের আগুয়ান হতে হবে।”
বামফ্রন্টের প্রবীণ নেতা, ফরওয়ার্ড ব্লকের রাজ্য সম্পাদক অশোক ঘোষ বলেন, “কমিউনিস্ট হয়েও কোনও সঙ্কীর্ণতা ছিল না সুভাষের। অন্য মতাদর্শের মানুষকেও যে ভাবে মান্য করতে দেখেছি, তা বিরল। আমাকে যে ভাবে কাছে টেনে নিয়েছিল, আমিও ওর ভক্ত হয়ে উঠেছিলাম।” উপস্থিত ছিলেন ক্ষিতি গোস্বামী, প্রতিম চট্টোপাধ্যায়, মিহির বাইন-সহ অন্য শরিক নেতারাও। |
|
|
|
|
|