|
|
|
|
সর্বদল বৈঠক |
প্রস্তাব উঠল দঃ ২৪ পরগনা, মুর্শিদাবাদ ভাগেরও |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
জেলা ভাগ করলে কেন্দ্রের থেকে বেশি আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়। জেলা ভাগ এবং রাজ্যের নাম বদল নিয়ে সর্বদল বৈঠকের পরে এ কথা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
পশ্চিমবঙ্গের নাম বদল এবং জেলা ভাগ নিয়ে বুধবার বেলা ১টা নাগাদ মহাকরণের রোটান্ডায় বিরোধী নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে বসেন মুখ্যমন্ত্রী। বৈঠক চলে ঘণ্টা দু’য়েক। বৈঠকের শেষে জেলা ভাগ প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “অন্যান্য রাজ্যে অনেক দিন আগেই জেলার সংখ্যা বেড়েছে। জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও ভৌগোলিক দূরত্বের কথা ভেবে এর প্রয়োজন দেখা দিয়েছে।” এ প্রসঙ্গে বিহারের উদাহরণও দেন তিনি। এবং জানান, বর্ধমান, জলপাইগুড়ি, পশ্চিম মেদিনীপুর ও উত্তর চব্বিশ পরগনা জেলা ভাগের প্রস্তাব আগেই উঠেছিল। বৈঠকে মুর্শিদাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাও ভাগের প্রস্তাব উঠেছে।
শিল্পমন্ত্রী পার্থবাবু জানান, জনপ্রশাসনিক অসুবিধা দূর করতে, বড় জেলার বাসিন্দাদের ভিন্ন ভিন্ন চারিত্রিক গঠন এবং উন্নয়নের কাজে গতি আনতে জেলা ভাগের প্রয়োজন হয়। পার্থবাবুর কথায়, “আগের সরকারও দু’টি ২৪ পরগনা, দু’টি দিনাজপুর, দু’টি মেদিনীপুর ভাগ করেছিল। এটা একটা চলমান ধারা।” তাঁর আরও বক্তব্য, “এ দিন জেলা ভাগের বিষয়ে আলোচনাকে ঠিক প্রস্তাব বলা যায় না। এ নিয়ে চিন্তাভাবনা হয়েছে বলাই ভাল।” জেলা ভাগের পক্ষে যুক্তির ব্যাখ্যা করে পার্থবাবু বলেন, “বর্ধমান একটি গ্রামীণ এলাকা নিয়ে। একটি শিল্পাঞ্চল নিয়ে। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের মধ্যে চারিত্রিক ভিন্নতা রয়েছে। ঝাড়গ্রামকে একটি পূর্ণাঙ্গ জেলা করার ভাবনা চলছে। উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁ ও বসিরহাটকে নিয়ে একটি। ব্যারাকপুর, বারাসত ও বিধাননগরকে নিয়ে একটি জেলা করার ভাবনা রয়েছে।” তিনি জানান, বৈঠকে বিরোধীরা মুশির্দাবাদ ও দক্ষিণ ২৪ পরগনাকেও ভাগ করার পক্ষে মতামত দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে একান্ত বৈঠকের পর সূর্যবাবু জানান, রাজ্যের নাম পরিবর্তন ও জেলা ভাগের বিষয়ে সরকারি প্রস্তাব নিয়ে তাঁরা দলীয় পর্যায়ে আলোচনার পর তাঁদের মতামত জানাবেন। মুখ্যমন্ত্রী-সহ এ দিনের বৈঠকে হাজির সব রাজনৈতিক দল ওই প্রস্তাব মেনে নিয়েছে বলেও তিনি জানান।
সূর্যবাবু বলেন, “জেলা ভাগের পরিকাঠামো গড়ে তুলতে অনেক সময় লাগে। তখন নতুন জেলার মানুষরা প্রচুর অসুবিধায় পড়েন। পরিকাঠামো গড়তে অর্থেরও প্রয়োজন। তাই রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিক এখনই তারা কতগুলি জেলা ভাগ করতে পারবে। এটা ঠিক যে, জেলার সংখ্যা বাড়লে কিছু আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায়।”
রাজ্যের নাম পরিবর্তন ও জেলা ভাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে কমিশন গড়ার প্রস্তাব দেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি তথা সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। পরে কংগ্রেস পরিষদীয় দলনেতা মহম্মদ সোহরাব ওই কথা জানিয়ে বলেন, “কংগ্রেস মনে করে পশ্চিমবঙ্গ নামটি পরিবর্তন করার দরকার নেই। বরং ইংরেজিতে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল’ না লিখে ইংরেজিতেই ‘পশ্চিমবঙ্গ’ লেখা হতে পারে।” বৈঠকে আরএসপি এবং ফরোয়ার্ড ব্লকের প্রতিনিধিরা মুখ্যমন্ত্রীকে বলেন, রাজ্য সরকার আর্থিক-ভৌগোলিক-ঐতিহাসিক, কীসের ভিত্তিতে জেলা ভাগ করতে চাইছে, তার নথি দেওয়া হোক। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী জানান, বেশি আর্থিক সুবিধা, প্রশাসনিক ও ভৌগোলিক সুবিধার কথা ভেবেই রাজ্য সরকার ওই ভাবনাচিন্তা করছে। |
|
|
|
|
|