|
|
|
|
শিল্পের জন্য জমির অভাব হবে না, দাবি পার্থর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
‘জমি ব্যাঙ্ক’ তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি, তবে এই মুহূর্তে রাজ্যের কাছে যতগুলি শিল্প বিনিয়োগের প্রস্তাব রয়েছে তার জন্য জমির অভাব হবে না। বুধবার এ কথা জানানোর পাশাপাশি রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় এ-ও দাবি করেছেন যে, ভবিষ্যতেও শিল্পের জন্য যথেষ্ট পরিমাণ জমি সরকারের হাতে মজুত থাকবে।
সরকারের হাতে এখন কতগুলি শিল্প-প্রস্তাব রয়েছে, তা অবশ্য জানাতে চাননি শিল্পমন্ত্রী। তবে মহাকরণ সূত্রে খবর, আড়াই মাস বয়সী সরকারের হাতে বড়-মাঝারি-ছোট মিলিয়ে প্রায় ৫০টি বিনিয়োগের প্রস্তাব এসেছে। খনি প্রকল্পের প্রস্তাব যেমন রয়েছে, তেমনই তথ্যপ্রযুক্তি থেকে ভারী শিল্প, এমনকী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ‘গেল’-এর গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পও আছে। সরকারের এক মুখপাত্রের কথায়, অন্তত দশটি প্রকল্প-প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা অনেক দূর এগিয়েছে। যে কোনও দিন তা চূড়ান্ত আকার নিতে পারে।
এই সব প্রকল্পের জন্য জমি কোথা থেকে পাওয়া যাবে তার ইঙ্গিত দিয়ে শিল্পমন্ত্রী জানান, রাজ্যের বিভিন্ন শিল্পবিকাশ কেন্দ্রে অনেক প্রকল্প বহু দিন আগেই বন্ধ হয়ে গিয়েছে। আবার অনেক ক্ষেত্রে জমি নিলেও কোনও দিন প্রকল্প চালুই হয়নি। এই ধরনের জমি চিহ্নিত করে তা ফিরিয়ে নিয়ে ভবিষ্যতের বিনিয়োগকারীদের দেওয়া হবে। তাঁর কথায়, “রাজ্যে বড় ধরনের বিনিয়োগ হতে পারে মূলত পরিষেবা ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে। এ জন্য যে পরিমাণ জমির প্রয়োজন, তা সহজেই মেটানো যাবে।”
ক্ষমতায় এসেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর সরকারি শীঘ্রই একটি ‘জমি ব্যাঙ্ক’ তৈরি করবে। শিল্পমন্ত্রী জানিয়েছিলেন, কোনও বেসরকারি সংস্থা শিল্প করতে এলে ‘জমি ব্যাঙ্ক’ থেকে তাদের জমি দেওয়া হবে। সরকারের সেই ‘খাস’ জমি তারা কিনে নেবে। বেসরকারি শিল্পের জন্য কোনও অবস্থাতেই নতুন করে জমি অধিগ্রহণ করা হবে না। কেন্দ্রীয় সরকারের নতুন জমি নীতির খসড়া সম্পর্কেও এই একই অবস্থান নিতে চলেছে রাজ্য সরকার। পুরোপুরি বেসরকারি উদ্যোগই শুধু নয়, সরকারি কাজের দায়িত্ব পাওয়া বা সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সামিল হওয়া (পিপিপি) বেসরকারি সংস্থার জন্যও জমি অধিগ্রহণে যে রাজ্য সরকারের আপত্তি রয়েছে, সে কথা শীঘ্রই কেন্দ্রকে জানিয়ে দেওয়া হবে বলে মহাকরণ সূত্রের খবর।
তবে বেসরকারি শিল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের প্রবল বিরোধী হলেও শিল্পায়নের লক্ষ্যে রাজ্যের সব জেলায় খালি পড়ে থাকা ‘খাস’ জমি চিহ্নিত করে ‘জমি ব্যাঙ্ক’ তৈরির কাজে হাত দিয়েছে ভূমি সংস্কার দফতর। বিভিন্ন সরকারি দফতর, স্বশাসিত সংস্থা ও জেলাশাসকদের হাতে থাকা ফাঁকা জমির পরিমাণ জানতে চেয়ে কয়েক দফায় চিঠি পাঠিয়েছে রাজ্য। ভূমিসচিব রামদাস মিনা জানিয়েছেন, বেশির ভাগ জেলাশাসক রিপোর্ট পাঠালেও কয়েকটি দফতর এখনও তাদের হাতে থাকা ফাঁকা জমির পরিমাণ জানায়নি। কিন্তু যে রিপোর্ট হাতে এসেছে, তা একত্রিত করে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। সব মিলিয়ে সেই জমির পরিমাণ কয়েক লক্ষ একর বলে ভূমি দফতর সূত্রে খবর।
অন্য এক প্রসঙ্গে পার্থবাবু জানান, বাম আমলের শেষ পাঁচ বছরে রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগম, শিল্পপরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম এবং ম্যাকিনটস বার্নের মতো সরকারি সংস্থা যৌথ উদ্যোগে যে সব প্রকল্পের অংশীদার হয়েছে, তার ‘অডিট’ করা হবে। তাঁর কথায়, “যৌথ উদ্যোগের প্রকল্পে ওই তিন সংস্থার কী ধরনের অংশীদারিত্ব ছিল, তার প্রেক্ষিতে কী লাভ করেছেতা খতিয়ে দেখতেই ‘অডিট’ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”
শালবনিতে জিন্দল গোষ্ঠীর ইস্পাত কারখানার হালহকিকৎও বুঝতে চান শিল্পমন্ত্রী। এ জন্য আগামী শুক্রবার প্রকল্পের অগ্রগতির বিস্তারিত তথ্য জানতে সংস্থার কর্তাদের ডেকে পাঠিয়েছেন তিনি। পার্থবাবুর অভিযোগ, “আগের সরকারের অবহেলায় মালিকদের জমি এবং বিভিন্ন সরকারি অনুমতি পেতে দেরি হয়েছে। কিন্তু ওরা কাজ শুরু করেছে। ইতিমধ্যে জমি ঘিরে ৩৬ কিলোমিটার প্রাচীর দেওয়া হয়েছে।” |
|
|
|
|
|