ব্যারাকপুর প্রশাসনিক ভবন
জলের অপচয় রোধে জরিমানা, পুলিশ-পাহারাও
রিমানা ছাড়া অনেককেই সু-অভ্যাস শেখানো যায় না এখনও। সেই জরিমানাও বহু ক্ষেত্রে এতই লঘু কিংবা জরিমানা আদায়ে এতটাই ফাঁকি থাকে যে, সু-অভ্যাসে ফেরাটা আর রপ্ত হয় না বেশির ভাগেরই। কলকাতা বা শহরতলির এই চেনা ছবিটাই পাল্টে ফেলার একটা চেষ্টা দেখল ব্যারাকপুর মহকুমা। জলের অপচয়ে জরিমানাই নয়, তা আদায়ও নিশ্চিত করেছে ব্যারাকপুর প্রশাসনিক ভবন। শুধু নজরদারির দায়িত্বপ্রাপ্ত রক্ষীরাই নন, জলের অপচয় দেখলে এখন রুখে দাঁড়াচ্ছেন সেখানকার অন্য কর্মীরাও।
প্রশাসনিক ভবনের পানীয় জলের কলে হাত-মুখ ধুয়ে জল নষ্ট করলে কিংবা নোংরা করলে আদায় করা হচ্ছে ১০০ টাকা জরিমানা। নিতান্ত গরিব বা স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা রক্ষীর ধমক শুনে ছাড় পেলেও সরকারি চাকুরে বা অন্যদের জরিমানা বাধ্যতামূলক। কড়া পুলিশি নজরদারিতে জলের কল থেকেই দিনে ৫০০ টাকারও বেশি আয় হচ্ছে বলে প্রশাসনিক কর্তারা জানিয়েছেন। ইন্ডিয়ান রেডক্রসের তহবিলে সেই টাকা দুঃস্থদের জন্য উন্নয়নমূলক কাজে লাগানো হচ্ছে বলে জানান মহকুমাশাসক অজয় পাল।
ব্যারাকপুর চিড়িয়ামোড়ের কাছে প্রশাসনিক ভবনে একাধিক সরকারি দফতরে প্রতিদিন শিল্পাঞ্চলের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ বিভিন্ন কাজ নিয়ে আসেন। ভবনের তিন দিকে তিনটি পরিস্রুত পানীয় জলের কল। একতলায় রয়েছে দু’টি। তার মধ্যে লাউঞ্জের একপাশে পানীয় জলের কলটিতেই ভিড় হয় বেশি। দোতলায় মহকুমাশাসকের দফতরের কাছেও একটি কল আছে। তবে নজরদারি বেশি নীচের তলার কল দু’টিতেই। রক্ষীরা জানান, বাইরের লোক কলে জল খেতে এসে নোংরা করেন। হাত-মুখ ধুয়ে অনর্থক জল নষ্ট হয়। অথচ পাশেই শৌচাগারে বেসিন ও কল রয়েছে। কিন্তু সেখানে যেতে চান না অনেকেই। বহিরাগতদের যথেচ্ছ ব্যবহারে উপচে পড়া জল কোষাগার ও আদালতে ঢুকছিল। বারণ করলে উল্টে রক্ষীদেরই চোটপাট করা হত বলে অভিযোগ। তাই বিধিনিষেধ জারি করেন মহকুমাশাসক।
জল পাহারায় পুলিশ। —নিজস্ব চিত্র
অজয়বাবু বলেন, “শুধু চোখে-মুখে জল দিলেও না হয় ছাড় দেওয়া যেত। কিন্তু যেখানে হিন্দি, বাংলা ও ইংরেজিতে পরিষ্কার লেখা আছে, পান করা ছাড়া অন্য কাজে জল ব্যবহার করলে জরিমানা হবে, তার পরেও থুতু ফেলে, নাক ঝেড়ে কলের মুখ নোংরা করে নির্দ্বিধায় চলে যান অনেকে। এঁদের শায়েস্তা করতেই জরিমানার ব্যবস্থা হয়েছে।” মাত্র দেড় মাস হল চালু হয়েছে জরিমানা প্রথা। রক্ষী ছাড়া অফিসের অন্য কর্মীরাও এখন প্রতিবাদ করেন জলের অপচয় দেখলে।
কোষাগারের পাহারায় থাকা পুলিশের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব-ইনস্পেক্টর বিজ্ঞানবন্ধু ভট্টাচার্য এখন জল পাহারার দায়িত্বে। নতুন কাজে খুশি এই পুলিশ অফিসার বলেন, “কোষাগার পাহারার পাশাপাশি এই কাজটা করতে বেশ ভাল লাগে। কেউ নোটিস উপেক্ষা করে জল নষ্ট করলে জরিমানার সঙ্গে অনেকক্ষণ দাঁড় করিয়ে রেখে দিই। প্রতিদিনই কিছু জরিমানা আদায় হয়।”
তবে জলের অপচয় বন্ধ করতে জরিমানা আদায়ের ব্যবস্থা থাকলেও মহকুমাশাসক বলেন, “জরিমানার থেকেও বড় কথা হল, মানুষের মধ্যে জলের অপচয় রোধ সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা। তা ছাড়া, জরিমানা বাবদ আদায় করা টাকা তো সরকারি কোষাগারেই জমা হচ্ছে। বিনিময়ে রসিদও দিচ্ছি আমরা। এর থেকে যদি কিছু মানুষ শিক্ষা নেন, সেটাই কাজের কাজ হবে।”

Previous Story South
Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.