|
|
|
|
‘আশ্রয়’ প্রকল্পের টাকা পড়েই |
আনন্দ মণ্ডল • তমলুক |
টাকা আছে। শুধুমাত্র উদ্যোগের অভাবেই কাজটা হচ্ছে না। পূর্ব মেদিনীপুর জেলায় ‘আশ্রয়’ প্রকল্পে বরাদ্দ টাকার মাত্র সাড়ে ২৭
শতাংশ খরচ হওয়ায় তাই প্রশ্ন উঠছে তৃণমূল পরিচালিত ত্রিস্তর পঞ্চায়েতের ভূমিকা নিয়ে।
জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা সিপিএমের নিরঞ্জন সিহির অভিযোগ, “তৃণমূল জনপ্রতিনিধিদের ব্যর্থতার কারণেই অর্থ বরাদ্দ হওয়া সত্ত্বেও গরিব মানুষদের জন্য বাড়ি তৈরি হচ্ছে না। এই ভাবেই জেলার উন্নয়নের ধারা ব্যাহত হচ্ছে।” যদিও জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি মামুদ হোসেনের বক্তব্য, “অর্থ বরাদ্দ হওয়ার পরেই নির্বাচনী বিধি কার্যকর হওয়ার কারণে ওই প্রকল্পের কাজ ব্যাহত হয়েছে। ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পরে ফের কাজ শুরু করা হয়েছে। ব্যর্থতার অভিযোগ ঠিক নয়।”
বিপিএল তালিকায় নাম নেই, অথচ দরিদ্র, এমন পরিবারগুলিকে পাকা বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য ‘আশ্রয়’ প্রকল্প চালু করেছিল রাজ্য সরকার। এই প্রকল্পে প্রতিটি বাড়ি তৈরি করতে ৩৫ হাজার টাকা বরাদ্দ করে রাজ্য সরকারের আবাসন দফতর। উপভোক্তাদের তালিকা তৈরির জন্য পঞ্চায়েতের সম্পদ কর্মীরা গ্রামে-গ্রামে সমীক্ষা চালায় প্রথম দফায়। পঞ্চায়েত পিছু পাঁচটি করে দরিদ্র পরিবারকে পাকা বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হবে বলে ঠিক হয়। পূর্ব মেদিনীপুর জেলার ২৫টি ব্লকের মধ্যে ১৪টি ব্লকের জন্য গত ফেব্রুয়ারি মাসে ১ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়। বিধানসভা নির্বাচন এসে পড়ায় সেই টাকা বিলি করা যায়নি তখন। ভোটের পরে পঞ্চায়েত সমিতিগুলিকে টাকা বরাদ্দ করা হয়। কিন্তু বরাদ্দ করা ওই অর্থ বিলির ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত সমিতির ভূমিকা যথেষ্ট হতাশাজনক বলেই অভিযোগ। গত ২৬ জুলাই পূর্ব মেদিনীপুরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের অগ্রগতি নিয়ে একটি পর্যালোচনা বৈঠক হয় জেলা পরিষদে। সেখানেই জানা যায়, ১৪টি ব্লকের জন্য যে ১ কোটি ৯৬ লক্ষ টাকা পেয়েছিল জেলা, তার মধ্যে মাত্র ৫৩ লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। ১৪টি ব্লকের মধ্যে সুতাহাটা, রামনগর, এগরা ২ পটাশপুর ২ পঞ্চায়েত সমিতি বরাদ্দ টাকার ৫০ শতাংশ অর্থ খরচ করতে পেরেছে। মহিষাদল, নন্দীগ্রাম ২, হলদিয়া ও ভগবানপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি বরাদ্দ অর্থের ৪০ শতাংশের কাছাকাছি খরচ করতে পেরেছে। নন্দীগ্রাম ১ পঞ্চায়েত সমিতি ২৭.৭৮ শতাংশ ও চণ্ডীপুর ২৫ শতাংশ টাকা খরচ করেছে। আর ময়না, শহিদ মাতঙ্গিনী, এগরা ১ ও পটাশপুর ১ পঞ্চায়েত সমিতি এই প্রকল্পে কোনও টাকাই খরচ করতে পারেনি। অর্থাৎ এই সব ব্লকে আশ্রয় প্রকল্পে বাড়ি তৈরির কাজ শুরুই হয়নি এখনও। শহিদ মাতঙ্গিনী পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি বিভাস করের জবাব, “আমাদের ব্লকে চলতি মাসেই অর্থ এসেছে। দেরিতে অর্থ বরাদ্দ হয়েছে বলে তা বণ্টন করতে কিছুটা সময় লেগেছে।” একই কথা বলে দায় এড়িয়েছেন ময়না পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি রাধানাথ গাঁতাইৎ। |
|
|
|
|
|