জলাভাবে পশ্চিমে বিপর্যস্ত খরিফ চাষ
লের অভাবে এ বারও মার খেতে পারে খরিফ চাষ। এখনও পর্যন্ত পশ্চিম মেদিনীপুর জেলায় মাত্র ৩৭ শতাংশ জমিতে চাষ শুরু সম্ভব হয়েছে বলে কৃষি দফতর সূত্রের খবর। বিস্তীর্ণ এলাকায় বীজতলা লাগানোর পরও পর্যাপ্ত জলের অভাবে তা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি যে উদ্বেগের, তা স্বীকার করে নিয়েই জেলা কৃষি দফতরের সহ-কৃষি অধিকর্তা (তথ্য) দুলাল দাস অধিকারী বলেন, “বৃষ্টি না হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হবে। সব থেকে খারাপ পরিস্থিতি খড়গপুর ও ঘাটাল মহকুমায়।”
জেলায় সাধারণত ৫ লক্ষ ৪০ হাজার হেক্টর জমিতে খরিফ চাষ হয়। এ বার যা অবস্থা তাতে এর অর্ধেক জমিতেও ফসল ফলানো যাবে না বলে আশঙ্কা। ফলে কৃষকদের বিস্তর ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে। বর্ষার গোড়ায় অবশ্য কৃষি দফতর মনে করেছিল, এ বার জেলায় খরিফ চাষ ভালই হবে। অন্তত জলের সমস্যা হবে না। জুন মাসে অতিরিক্ত বৃষ্টি হয়। তা থেকেই এই ধারণা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু প্রথম বর্ষার জল সে ভাবে কাজে লাগেনি বলে এখন কৃষি দফতরের আধিকারিকেরাই জানাচ্ছেন। তাঁদের বক্তব্য, সাধারণত জুলাইয়ের গোড়ায় বীজতলার কাজ চলে। এই সময়েই জলের সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন। কিন্তু জুনে পর্যাপ্ত বৃষ্টি হলেও জুলাইয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলেই পরিস্থিতি জটিল হয়েছে।
মহকুমা ভিত্তিক চাষ-ছবি
মেদিনীপুরে চাষ শুরু হয়েছে ৪৮ শতাংশ জমিতে
খড়্গপুরে চাষ শুরু হয়েছে ২৫ শতাংশ জমিতে
ঘাটালে চাষ শুরু হয়েছে ২৭ শতাংশ জমিতে
ঝাড়গ্রামে চাষ শুরু হয়েছে ৫২ শতাংশ জমিতে
গত ২৬ বছরের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে, জানুয়ারি থেকে জুলাইএই সাত মাসে জেলায় গড় বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৮২০ মিলিমিটার। এ বছর সেখানে ৮৪৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ, স্বাভাবিকের থেকেও বেশি। তা-ও জলের অভাবে বিস্তীর্ণ এলাকায় চাষ মার খাচ্ছে কেন? দুলালবাবুর ব্যাখ্যা, “জুলাই পর্যন্ত স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃষ্টি হলেও শুধু জুলাই মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক কম বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলেই এই পরিস্থিতি।” কৃষি দফতরের মতে, খরিফ চাষ শুরুর জন্য জুলাইয়ের শুরুতে পর্যাপ্ত জলের প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ বার সেই সময়েই তেমন বৃষ্টি হয়নি। পরিসংখ্যান অনুসারে, গত ২৬ বছরে শুধু জুলাইয়ে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৩১৮ মিলিমিটার। অথচ এ বার সেখানে বৃষ্টি হয়েছে মাত্র ১৫৫ মিলিমিটার। শুধু জুনে বৃষ্টি হয়েছে ৪৬৪ মিলিমিটার। এর মধ্যে আবার প্রথম বর্ষায় অর্থাৎ ১৬ থেকে ১৯ জুন, এই চার দিনে বৃষ্টি হয়েছে ২৬৪ মিলিমিটার! কিন্তু এই জল সে ভাবে চাষের কাজে লাগানো যায়নি। গত বছরই পশ্চিম মেদিনীপুরে খরা হয়েছিল। ক্ষতির মুখে পড়েছিলেন কৃষকরা। এ বার সেই ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার আশায় ছিলেন কৃষকেরা। কিন্তু পরিস্থিতি এ বারও অনুকূল নয়। জেলা কৃষি দফতর সূত্রে খবর, মেদিনীপুর মহকুমায় সাধারণত ১ লক্ষ ২৪ হাজার ৮৪৪ হেক্টর জমিতে খরিফ চাষ হয়। এখনও পর্যন্ত চাষ শুরু হয়েছে মাত্র ৫৯ হাজার ৫৫০ হেক্টর জমিতে। ঝাড়গ্রাম মহকুমার পরিস্থিতি তুলনায় ভাল। এখানে ১ লক্ষ ৪৩ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমির মধ্যে ধান রোঁয়া হয়েছে ৭৫ হাজার ৩৭৫ হেক্টর জমিতে। ঘাটাল ও খড়গপুর মহকুমার পরিস্থিতিই সব থেকে উদ্বেগজনক। খড়গপুরে ২ লক্ষ ১৬ হাজার ৯২৩ হেক্টর জমির মধ্যে চাষ শুরু হয়েছে মাত্র ৫৩ হাজার ৪৫৯ হেক্টর জমিতে। আর ঘাটালে ৫৯ হাজার ৬৩২ হেক্টর জমির মধ্যে ধান রোঁয়া হয়েছে মোটে ১৫ হাজার ৯৭০ হেক্টর জমিতে। অবিলম্বে পর্যাপ্ত বৃষ্টি না হলে অবস্থা সঙ্গিন হয়ে পড়ারই আশঙ্কা।
First Page Medinipur Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.