জেতার খিদেটা ফিরে পেতে হবে ধোনিদের
প্রথমে আমি ইয়ান বেলের রান আউট বিতর্ক নিয়ে কিছু বলতে চাই। ক্রিকেটের স্পিরিটের কথা মাথায় রেখে বলব, আবেদন ফিরিয়ে নিয়ে ঠিকই করেছে ধোনি। নিয়ম অনুযায়ী বেল অবশ্যই রান আউট ছিল। কিন্তু বেলকে ফিরিয়ে আনার জন্য ধোনি এবং ভারতীয় দলের প্রশংসা করতেই হবে।
এ বার ম্যাচের কথায় আসি। ভারতীয় ব্যাটিং সত্যিই আমাকে হতাশ করেছে। পরিস্থিতি অনুযায়ী রাহুল ছাড়া কেউ সে ভাবে নিজেকে মেলে ধরতে পারেনি। ভারতীয় টিমকে ভাল করতে গেলে তিন সিনিয়রের সফল হওয়াটা খুব জরুরি ছিল। ফলে চাপ এবং প্রত্যাশাটা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। রাহুল ছাড়া প্রথম ইনিংসে কিছুটা লক্ষ্মণ এবং দ্বিতীয় ইনিংসে সচিন ওদের ক্লাস দেখিয়েছে, কিন্তু সেটা যথেষ্ট ছিল না।
ট্রেন্টব্রিজে প্রথম দু’দিন একটা সময় যথেষ্ট ভাল জায়গায় থাকার পর ভারত ম্যাচটা থেকে ছিটকে যায়। এর পিছনে বেশ কয়েকটা কারণ আছে। টিমটাকে মাঝে মাঝেই ক্লান্ত দেখিয়েছে। বিশেষ করে বোলারদের। মানছি, ইশান্ত এবং প্রবীণ সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজ থেকে টানা খেলে চলেছে। কিন্তু ওদের বুঝতে হবে যখন খেলা থাকে না, তখন শরীরকে ঠিক মতো তৈরি করতে হয়। এই শৃঙ্খলাটা খুব দরকার।
বেশ কয়েকটা জিনিসের যোগফল হল ট্রেন্টব্রিজে ৩১৯ রানে হার। আমার মত হল, ভারত ঠিক মতো চাপটা ধরে রাখতে পারেনি। আমাদের সেই খিদেটা দেখা যায়নি। প্রথম ইনিংসে যখন ব্রড এবং সোয়ানের জুটিটা জমে গিয়েছিল, তখন ভারতীয়দের দেখে মনে হচ্ছিল, ওরা আশা করছে ব্যাটসম্যানদের মারা একটা না একটা শট আকাশে উঠে যাবে। দ্বিতীয় ইনিংসেও আমরা ইংল্যান্ডকে ৫০-২ করে দিয়েছিলাম। তখন আমাদের হাতেই ম্যাচের রাশ ছিল। কিন্তু পিটারসেন এবং বেল যখন মারতে শুরু করে দেয়, মনে হচ্ছিলভারত নয়, ইংল্যান্ডই চালকের আসনে রয়েছে।
দুটো টেস্টেই আমরা তিন বোলারে খেললাম। প্রথম টেস্টে জাহির এবং দ্বিতীয় টেস্টে হরভজন চোটের জন্য বল করতে পারল না। অথচ ওরাই আমাদের সব থেকে সিনিয়র বোলার। এই ব্যাপারটা আমাদের নজরে রাখতে হবে। টেস্ট চলাকালীন যদি দলের সিনিয়র বোলাররা চোট পেয়ে যায়, তা হলে বড় সমস্যা। বিশেষ করে যেখানে আমরা চার বোলারে খেলতে নামছি।
ট্রেন্টব্রিজের পিচটা এমন ছিল যেখানে ‘হিট দ্য ডেক’ বোলিং করলে লাভ হত। আমাদের বোলাররা সে জায়গায় শুধু সুইং করানোর দিকেই নজর দিয়েছিল। আমার এও মনে হয়েছে, শ্রীসন্থ নিজেকে পুরোপুরি মেলে ধরেনি। মানছি, বোলাররা মোটামুটি ভাল বলই করেছে। কিন্তু ঘটনা হল, ওরা মাঝে মাঝেই নিজেদের একটু গুটিয়ে রেখেছিল। যেটা একেবারেই কাম্য নয়।
জেতার খিদেটা একটা সময় এই টিমটার খুব বেশি ছিল। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে প্রথম দুটো টেস্টে সেই খিদেটা নজরে পড়েনি। এই খিদেটা আবার ফিরিয়ে আনতে হবে। সেটা হলে কিন্তু বাকি জিনিসগুলোও ঠিকঠাক হবে। কারণ দলটার দক্ষতা নিয়ে তো কোনও সন্দেহ নেই।
দুটো টেস্ট হারের চেয়েও যেটা বেশি করে ধাক্কা দিয়েছে, সেটা হল হারের ধরনটা। মনে রাখবেন, আমাদের এই ক্রিকেটাররাই কিন্তু ভারতীয় দলটাকে একটা দারুণ উচ্চতায় নিয়ে গিয়েছিল। ওরাও বুঝতে পারছে সমস্যাটা কী।
মাঝে এখন দশ দিনের সময় আছে। তার উপর সহবাগ আর গম্ভীর তৃতীয় টেস্টে খেলতে নামবে। ফলে ভারতীয় ব্যাটিং লাইন পুরনো চেহারাটাই ফিরে পাবে। ব্যাটিং লাইন নিয়ে বেশি নড়াচড়া করলে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি হয়। সেটা এ বার কেটে যাবে।
হরভজনকে আর পাওয়া না গেলেও আমি আশা করব, তৃতীয় টেস্টে জাহির এবং বাকিরা একশো শতাংশ সুস্থ থাকবে। সহবাগের ফিরে আসাটা অবশ্যই সাহায্য করবে। তাই আমার ধারণা, ছেলেরা সিরিজে ফিরে আসবে। তৃতীয় টেস্ট জেতার ক্ষমতা আছে এই দলটার। কিন্তু ওই যে বললাম, খিদে আর জেতার ইচ্ছেটা ফিরে পেতে হবে।
Previous Story Khela Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.