|
|
|
|
জল্পেশের মেলাতে তাণ্ডব শব্দদানবের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ময়নাগুড়ি |
দুষণ বিধি ভেঙে পুলিশ-প্রশাসনের অফিসার ও কর্মীদের একাংশের উপস্থিতিতে দিনরাত বিকট শব্দে মাইক বাজানো হচ্ছে জল্পেশে। চড়া শব্দের তাণ্ডবে ম্লান হতে বসেছে শ্রাবণী উৎসবের গৌরব। ক্ষোভ বাড়ছে বিভিন্ন মহলে। অভিযোগ উঠেছে, পুলিশ ও প্রশাসনের উদাসীনতার। পুলিশের সামনে কেমন করে রাতভর লোকালয়ে তারস্বরে মাইকে হিন্দিগান ও বিকট আওয়াজ চলে তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলের প্রসিদ্ধ শৈবতীর্থ ময়নাগুড়ির জল্পেশ মন্দিরকে ঘিরে শ্রাবণ মাস জুড়ে উৎসবের প্রতিটি রবিবারের রাত এখন জল্পেশ ও সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের অনেকের কাছে রীতিমতো আতঙ্কের। একে পূণ্যার্থীর ভিড়। তার উপরে ছোট বড় বিভিন্ন গাড়ির মাথায় বাঁধা মাইকে রাতভর তারস্বরে বিকট শব্দের উৎপাত। বিছানায় শুয়ে ছটফট করে সময় কাটানো ছাড়া উপায় থাকে না তাঁদের। যেমন, মেলা মাঠ সংলগ্ন এলাকার প্রবীণ বাসিন্দা শ্রীকান্ত রায়। তিনি বলেন, “রাতভর বিকট শব্দের অত্যাচারে ঘুমোতে পারি না। খুব কষ্ট হয়।” জল্পেশ মন্দির যে মাধববডাঙা-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের অধীন সেখানকার ফরওয়ার্ড ব্লক প্রধান সমীরণ চক্রবর্তী রাত জেগে নিজেও ক্লান্ত। শব্দ দৈত্যের বাড়াবাড়ি দেখে আতঙ্কিত হয়ে তিনি পঞ্চায়েত সমিতির দ্বারস্থ হয়েছেন। সমীরণবাবু বলেন, “উদ্বেগজনক পরিস্থিতি। রবিবার রাতে ঘুমোতে পারছি না। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিকে ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ করেছি।” গত রবিবার রাতে প্রায় দেড় লক্ষ পূণ্যার্থীর ভিড় হয়েছে। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন প্রান্ত ছাড়াও নেপাল, সিকিম, বিহার, অসমের ওই পূণ্যার্থীদের একাংশ ট্রাক, বাস, অটো, ট্যাক্সিকে মাইক বেঁধে তিস্তা নদীতে স্নান করে তারস্বরে মাইক বাজিয়ে মন্দিরে পৌছে যান। ধর্মীয় উৎসবে শুধু যে ‘বোলে বোম’ গান চলে তা নয়। ময়নাগুড়ি পঞ্চায়েত সমিতির তৃণমূল সদস্য মিতু চক্রবর্তী বলেন, “গত রবিবার মাঝরাতে আচমকা শিশুর আর্তনাদ শুনে চমকে উঠি। রাস্তায় যাই। অনেক খোঁজ করি। কিন্তু কোথায় কী! অনেক পরে টের পাই গাড়িতে মাইক বেঁধে, মাইক্রোফোন হাতে নিয়ে ওই আওয়াজ করছে একদল যুবক।” পুলিশের বিরুদ্ধে ওঠা উদাসীনতার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ময়নাগুড়ি থানার আইসি বিশ্বনাথ হালদার। তিনি বলেন, “লক্ষাধিক মানুষের ভিড়ে জোর করব উপায় থাকে না। ধারাবাহিক প্রচারের মাধ্যমে সচেতনতা তৈরি করে ওই সমস্যা সমাধানের জন্য এগোতে হবে।” জল্পেশ মন্দির কমিটির সম্পাদক গিরীন্দ্রনাথ দেব বলেন, “প্রতি বছর শ্রাবণী উৎসবে রাতে মাইক বাজানো বন্ধের জন্য অনুরোধ করা হয়। এ বারও প্রচার চলছে।” ময়নাগুড়ির বিডিও সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, “আগামী রবিবার ইন্দিরা মোড় থেকে জল্পেশে ঢোকার আগে গাড়ি থামিয়ে মাইক বন্ধ করে দেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|