|
|
|
|
আট সদস্যের পদত্যাগ, অচলাবস্থা পঞ্চায়েতে |
নুরুল আবসার • উদয়নারায়ণপুর |
১২ জনের মধ্যে ৮ জন সদস্য পদত্যাগ করায় হাওড়ার উদয়নারায়ণপুর ব্লকের সিপিএম পরিচালিত সিংটি গ্রাম পঞ্চায়েতে অচলাবস্থা চলছে এক মাস ধরে। বিডিও বিশ্বরঞ্জন মুখোপাধ্যায় বলেন, “অচলাবস্থা দূর করতে কী করণীয় তা জানতে জেলাশাসককে চিঠি লেখা হয়েছে। আপাতত প্রধানকে প্রতিদিন গ্রাম পঞ্চায়েত অফিসে হাজিরা দিতে বলা হয়েছে।”
মাস খানেক আগে সাত সদস্য বিডিও-র কাছে পদত্যাগপত্র জমা দেন। তার কিছু দিন পরে আরও এক সদস্য পদত্যাগ করেন। ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, সাত জন অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করেন। এক জন দেখিয়েছিলেন পারিবারিক কারণ। বিডিও বলেন, “পদত্যাগপত্র গ্রহণ করার আগে আমি প্রত্যেকের সঙ্গে আলাদা করে কথা বলি। তাঁদের জিজ্ঞাসা করেছিলাম কেউ ভয় দেখিয়েছেন কিনা। তাঁরা ভয় দেখানো বা চাপ দেওয়ার কথা বলেননি।” থানাতেও এই মর্মে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এই অবস্থায় অচলাবস্থা দেখা দিয়েছে ওই পঞ্চায়েতে।
ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, গ্রাম পঞ্চায়েতে পাঁচটি উপ-সমিতি থাকে। পঞ্চায়েত আইন অনুযায়ী, প্রতিটি উন্নয়নমূলক কাজের জন্য সংশ্লিষ্ট উপ-সমিতির অনুমোদন প্রয়োজন। সমিতিগুলিতে পাঁচ জন করে পঞ্চায়েত সদস্য থাকেন। এক-এক জন সদস্য আবার তিনটি করে উপ-সমিতির সদস্য হতে পারেন। কিন্তু এই পঞ্চায়েতে বর্তমানে মাত্র ৪ জন সদস্য হয়ে যাওয়ায় উপ-সমিতিগুলি ভেঙে গিয়েছে। ফলে, গ্রামোন্নয়নের কাজ পণ্ড হয়ে গিয়েছে। ছাড়পত্র মিলছে না অর্থ খরচ করারও। রাস্তা তৈরি, নলকূপ বসানো-সহ বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম কার্যত বন্ধ।
গ্রাম পঞ্চায়েত আপাতত চলছে প্রধান, উপ-প্রধান এবং আরও দু’জন সদস্যকে নিয়ে। বিডিও-র নির্দেশ মেনে প্রধান মন্দিরা মণ্ডল প্রতিদিন পঞ্চায়েত অফিসে নিয়ম করে হাজিরা দিচ্ছেন। তিনি বলেন, “বাৎসরিক পরিকল্পনায় যে সব উন্নয়নমূলক কাজকর্মের অনুমোদন আগেই দেওয়া রয়েছে সেগুলিই আপাতত আইন বাঁচিয়ে কোনও মতে করা হচ্ছে। কেননা, ওই সব কাজের জন্যও অনেক ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট উপ-সমিতির অনুমোদন প্রয়োজন। তবে নতুন করে কোনও কাজের পরিকল্পনা করা যাচ্ছে না।” বিডিও জানান, উপ-নির্বাচনের মাধ্যমে ওই আটটি আসনে ফের নির্বাচন করতে হবে। তত দিন পর্যন্ত এ ভাবেই কাজকর্ম চালাতে হবে। এ ছাড়া জেলাশাসক যে ভাবে নির্দেশ দেবেন সেই মোতাবেকও কাজ হবে।
ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক চাপান-উতোরও শুরু হয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতের ১২ জন সদস্যই ছিলেন সিপিএমের। তাঁদের তৃণমূল জোর করে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেছে বলে সিপিএমের অভিযোগ।
দলের উদয়নারায়ণপুর জোনাল কমিটির সম্পাদক স্বপন মুখোপাধ্যায় বলেন, “বিধানসভা নির্বাচনের ফল প্রকাশের পরে ভয় দেখিয়ে আমাদের দলের সদস্যদের পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়।”
অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে উদয়নারায়ণপুরের তৃণমূল বিধায়ক সমীর পাঁজা বলেন, “সিংটি গ্রাম পঞ্চায়েতে আট জন সদস্য যে পদত্যাগ করেছেন, সেটাই তো জানতাম না। বিডিও-র কাছ থেকে বিষয়টি জানতে পারি।” |
|
|
|
|
|