|
|
|
|
হিন্দ মোটরের জমি নিয়ে তদন্ত হবে, বললেন মমতা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
হিন্দ মোটর কারখানার জমি বিক্রি ঘিরে আর্থিক কেলেঙ্কারির অভিযোগ নিয়ে আগামী দু’এক দিনের মধ্যেই তদন্তের নির্দেশ দিতে পারে রাজ্য সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বুধবার বলেন, “হিন্দ মোটর নিয়ে অভিযোগ যা এসেছে, তাতে মনে হচ্ছে বড় ধরনের একটা আর্থিক কেলেঙ্কারি হয়েছে। এই কারণে যা উপযুক্ত তদন্ত হওয়া উচিত, সরকার সেটাই করবে।” সরকারি স্তরে বিষয়টি খতিয়ে দেখার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। সেই প্রাথমিক প্রক্রিয়া থেকেই তদন্তকারীদের ধারণা, হিন্দ মোটরের জমি বিক্রির ক্ষেত্রে যথেষ্ট অনিয়ম হয়েছে। এবং প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত লোকজনদের সহযোগিতা ছাড়া শুধু সংস্থার পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয়।
দেশের প্রথম গাড়ি তৈরির সংস্থা হিন্দ মোটরকে হুগলি জেলায় কারখানা গড়ার জন্য জমি দিয়ে ছিল রাজ্য সরকার। সেই কারখানা রুগ্ণ হয়ে পড়ার পরে চার-পাঁচ বছর আগে ঘুরে দাঁড়ানোর উপায় হিসেবে কারখানার উদ্বৃত্ত ৩১৪ একর জমি বিক্রি করতে চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করে সংস্থাটি। তাদের পেশ করা সবিস্তার প্রকল্প রিপোর্টে (ডিপিআর) বলা হয়, ওই ৩১৪ একর জমিতে একটি উপনগরী গড়ে তুলবে একটি বেসরকারি সংস্থা। এ জন্য হিন্দ মোটরকে তারা ৮৫ কোটি টাকা দেবে। সেই টাকার মধ্যে ৭০ কোটি টাকা খরচ করা হবে কারখানার আধুনিকীকরণে। বাকি ১৫ কোটি টাকা দিয়ে কর্মীদের বকেয়া মেটানো হবে। সংস্থার এই প্রস্তাবে সায় দেয় আগের বাম সরকারের মন্ত্রিসভা।
কিন্তু পরে অভিযোগ ওঠে, ৮৫ কোটি নয়, আদতে ২৮৫ কোটি টাকায় ওই বেসরকারি সংস্থাকে জমি বেচেছে হিন্দ মোটর। এ নিয়ে বাম আমলেই দু’টি তদন্ত হয়। একটি তদন্ত করেন পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য শিল্পোন্নয়ন নিগমের তৎকালীন ম্যানেজিং ডিরেক্টর সুব্রত গুপ্ত। আর যে হেতু অভিযোগের সঙ্গে আর্থিক বিষয় জড়িত, সে হেতু দু’টি বেসরকারি সংস্থার মধ্যে চুক্তি হলেও অনেকটা নজিরবিহীন ভাবে রাজ্য সরকারের অভ্যন্তরীণ অডিট বিভাগকে দিয়ে দ্বিতীয় তদন্তটি করানো হয়। দু’টি তদন্তেই অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে নেওয়া হয়। শুধু তা-ই নয়, এ-ও বলা হয় যে, ডিপিআরের প্রস্তাব মতো কারখানার পুনরুজ্জীবন বা কর্মীদের বকেয়া মেটানোর কাজও ঠিকমতো করা হয়নি।
বাম সরকারের শেষ পর্বে এই তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে অবশ্য আর কোনও অগ্রগতি হয়নি। নতুন সরকার আসার পরে বিষয়টি নিয়ে ফের নাড়াচাড়া শুরু হয়। সম্প্রতি মুখ্যসচিব সমর ঘোষের ঘরে এক বৈঠকে ঠিক হয়, এ ব্যাপারে হিন্দ মোটরকে কারণ দর্শানোর নোটিস দেওয়া হবে। তবে তার আগে আলোচনা করা হবে সংস্থার কর্তাদের সঙ্গে। সেই মতো গত সোমবার সরকারি কর্তাদের সঙ্গে হিন্দ মোটরের কর্তাদের আলোচনা হয়েছে বলে মহাকরণ সূত্রের খবর। সেই বৈঠকে সংস্থার কাছ থেকে একটি লিখিত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রীর দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, হিন্দ মোটর ছাড়া বাম আমলে আরও দু’একটি সংস্থার জমি বিক্রির বিষয় নিয়ে নানা তথ্য সরকারের কাছে আসছে। সরকারের এক মুখপাত্র জানান, অভিযোগ যেমন যেমন আসবে, তেমন তার তদন্ত করা হবে। |
|
|
|
|
|