কেশপুরে ক্ষুদিরাম স্মরণও এ বার তৃণমূলের উদ্যোগে
রাজ্যে পালাবদলের পরে গড়বেতার এক শহিদ-স্মরণ কর্মসূচির হাতবদল হয়েছিল। এ বার হাতবদল হতে চলেছে কেশপুরে ক্ষুদিরামের আত্মোৎসর্গ দিবসের কর্মসূচিরও। এতদিন যে কর্মসূচি পালন হয়েছে সিপিএমের উদ্যোগে, এ বার তাই হবে তৃণমূলের উদ্যোগে। ইতিমধ্যে প্রস্তুতিও সারা হয়ে গিয়েছে। তৈরি হয়েছে ‘শহিদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতি রক্ষা কমিটি’। কমিটির সভাপতি হয়েছেন চিত্তরঞ্জন গরাই। চিত্তবাবু তৃণমূলের কেশপুর ব্লক সভাপতি। এতদিন ‘শহিদ ক্ষুদিরাম বসু স্মৃতি রক্ষা কমিটি’ নামেরই এক সংগঠনের ব্যানারে এই কর্মসূচি পালন করে এসেছে সিপিএম। দলের নেতা-কর্মীরা সেই কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছেন। এ বার একই নামের ব্যানারে কর্মসূচি পালন করতে উদ্যোগী হয়েছে তৃণমূল।
তৃণমূলের নেতৃত্বের বক্তব্য, কমিটির নাম এক রয়েছে ঠিকই, কিন্তু আগের কমিটির সঙ্গে এখনকার কমিটির সম্পর্ক নেই। দলের কেশপুর ব্লক সভাপতি চিত্তবাবুর কথায়, “আমাদের কমিটি এ বারই তৈরি হল। নামের মিল থাকলেও আগের কমিটির সঙ্গে এই কমিটির সম্পর্ক নেই। যাঁদের উদ্যোগে কেশপুরে এই কর্মসূচি পালন হত, তাঁরা এখন এলাকা ছাড়া। তাই গ্রামবাসীরাই নতুন কমিটি গড়েছেন।” কেশপুরের মোহবনিতে ক্ষুদিরামের জন্মভিটে। প্রতি বছর ১১ অগস্ট তাঁর আত্মোৎসর্গ দিবস পালিত হয় এখানে। দিনভর চলে নানা অনুষ্ঠান।
বিধানসভা ভোটের আগে পর্যন্ত কেশপুর-গড়বেতা সিপিএমের ‘লালদুর্গ’ বলেই পরিচিত ছিল। তৃণমূল এই দুই এলাকায় কোনও প্রভাব ফেলতেই পারত না। রাজ্যে পালাবদলের পরে অবশ্য পরিস্থিতি পাল্টেছে। গড়বেতা-কেশপুরেও এখন সবচেয়ে বেশি কোণঠাসা সিপিএমই। অন্য দিকে, তৃণমূলের প্রভাব ক্রমবর্ধমান। সিপিএম ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়াও সমানে চলছে। ক’দিন আগেই গড়বেতার বাঁশদা সাক্ষী থেকেছে এক পরিবর্তনের। ১৯৪৯ সালের আষাঢ় মাসের শেষে পুলিশের গুলিতে ৩ খেতমজুর নিহত হয়েছিলেন বাঁশদায়। সেই থেকেই প্রতি বছর এই দিনটিকে ‘শহিদ দিবস’ হিসেবে পালন করে এসেছে বামেরা। এ বারই প্রথম বাঁশদায় শহিদ দিবস পালন করে তৃণমূল। এ বার কেশপুরও এমনই এক পরিবর্তনের সাক্ষী হতে চলেছে। ১১ অগস্টের কর্মসূচি সফল করতে তৃণমূলের কমিটি ইতিমধ্যেই তৎপরতা শুরু করেছে। দিনভর নানা অনুষ্ঠান আয়োজনে ব্যয় ধরা হয়েছে দেড় লক্ষ টাকা। এ জন্য কুপন ছাপানো হয়েছে। শিক্ষক, সরকারি কর্মচারী থেকে সাধারণ মানুষ--সবার কাছ থেকেই অর্থ সংগ্রহ চলছে। কেউ ১০-২০ টাকা দিচ্ছেন। কেউ বা ৫০। চিত্তবাবুর কথায়, “কাউকে জোর করা হচ্ছে না। এত বড় অনুষ্ঠান। যে যাঁর সামর্থ্য মতোই অর্থ সাহায্য করছেন।”
দলের অধিকাংশ নেতা-কর্মী এলাকা ছাড়া। এই পরিস্থিতিতে মোহবনিতে ক্ষুদিরাম স্মরণের কর্মসূচি যে আর তাঁদের উদ্যোগে পালন করা সম্ভব নয়, তা খোলাখুলিই মানছেন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সিপিএম নেতৃত্ব। কেশপুরের এক সিপিএম নেতার কথায়, “যাঁদের উদ্যোগে এই কর্মসূচি রূপায়িত হত, তাঁরাই তো এখন এলাকা ছাড়া।” তবে যত ‘প্রতিকূল’ পরিস্থিতিই হোক, প্রতি বছরের মতো এ বারও ১১ অগস্ট তিনি যে মোহবনিতে যাবেন, তা জানিয়েছেন সিপিএমের যুব সংগঠন ডিওয়াইএফ-এর সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক তাপস সিংহ। তাঁর কথায়, “প্রতি বছর এই দিনে আমি মোহবনিতে যাই। এ বারও যাব। না যাওয়ারই বা কী আছে! শহিদ-স্মরণে যে কেউই যেতে পারেন।”
First Page Medinipur Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.