|
|
|
|
রাস্তা তৈরির কাজ ফের শুরু হচ্ছে রাজারহাটে |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
রাজারহাটের আটকে থাকা রাস্তার কাজ ফের শুরু করল ‘হুগলি রিভার ব্রিজ কমিশনার্স’ (এইচআরবিসি)। জমি-আন্দোলনে বন্ধ হয়ে যায় মধ্যমগ্রামগামী ওই রাস্তা তৈরি। সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম কাণ্ডের পরে প্রতিবাদ আন্দোলনে আটকে যায় রাজারহাটের নানা প্রকল্পের কাজ। তাতে মদত ছিল ‘রাজারহাট কৃষিজমি, জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটি’র-ও।
গত বছরের ১১ এপ্রিল রাজ্যের তৎকালীন প্রভাবশালী চার মন্ত্রী ও নেতার উপস্থিতিতে উদ্বোধন হয় এই প্রকল্পের। রাজারহাটে হয় শিলান্যাস অনুষ্ঠান। দক্ষিণ শহরতলির বাসিন্দারা প্রস্তাবিত এই রাস্তা ধরে ই এম বাইপাস ও নিউ টাউনের মধ্যে দিয়ে দ্রুত পৌঁছতে পারবেন মধ্যমগ্রামে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে। কিন্তু কাজ শুরুর কিছু পরেই স্থানীয়দের বাধায় আটকে যায় রাস্তা তৈরি। বাধা আসে প্রস্তাবিত পথের নানা অংশের দখলদারদের কাছ থেকে। প্রস্তাবিত রাস্তার কিছু অংশে এখনও কয়েক জন দখলদার রয়েছেন। ঠিক হয়েছে, তাঁদের না তুলেই এ বার চলবে রাস্তা তৈরি। সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার সংস্থাকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে জানান এইচআরবিসি-র ভাইস চেয়ারম্যান সাধনরঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়।
সাধনবাবু আরও বলেন, “অসম্পূর্ণ নানা প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কাজে দেরি হলে বাড়বে প্রকল্পের ব্যয়ও। তাই এ বার কাজ শেষ করার চেষ্টা হচ্ছে।”
প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দীর্ঘ এবং ১৪ মিটার চওড়া এই রাস্তা তৈরি করতে খরচ হবে ৪০ কোটি টাকা। প্রথম পর্যায়ের খরচ ধরা হয়েছে ২০ কোটি টাকা। এই তথ্য জানিয়ে সাধনবাবু বলেন, “ভবিষ্যতে রাস্তাটিকে আরও ‘দু লেন’ অর্থাৎ সাত মিটার চওড়া করার ব্যবস্থাও রাখা হচ্ছে। প্রকল্পের জন্য যতটা জমি অধিগ্রহণ দরকার, তার প্রায় ৮৫ শতাংশ হয়ে গিয়েছে। এই অধিগ্রহণের কাজ করছে আবাসন দফতর। এর জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করছে হিডকো।”
রাজারহাটের জমি-অধিগ্রহণের বিরোধিতা করতে তৈরি হয়েছিল ‘রাজারহাট কৃষিজমি, জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটি’। এই কমিটির নেতৃত্বে ঘেরাও হয়েছে ‘হিডকো’। জমি-অধিগ্রহণের বিরোধিতায় রাজারহাটে ১৩ কিলোমিটার পদযাত্রাও করেন মমতা। সে সময়ে তাঁর হাতে পাঁচ হাজার কৃষকের সই করা অভিযোগপত্র তুলে দেওয়া হয়।
বামফ্রন্ট আমলে রাজারহাট ও সংলগ্ন এলাকায় জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের জন্য তৈরি হয়েছিল ভাঙড়, রাজারহাট উন্নয়ন সংস্থা ‘ব্রাডা’। গোড়া থেকেই ওই এলাকায় জমি অধিগ্রহণ নিয়ে প্রতিবাদ আন্দোলন করেছে তৃণমূল কংগ্রেস। নতুন সরকার গঠনের কিছু দিন পরে ভেঙে দেওয়া হয় ‘ব্রাডা’।
কয়েক মাস আগেও রাজারহাটে বিভিন্ন কাজে ‘রাজারহাট কৃষিজমি, জীবন ও জীবিকা রক্ষা কমিটি’ বাধা দিয়েছে এ কথা স্বীকার করেন কমিটির সভাপতি তথা রাজ্যের মন্ত্রী পূর্ণেন্দু বসু। তাঁর বক্তব্য, “পরিবহণনগরী তৈরির জন্য রাজারহাট এলাকায় ৫০ একর জমি নেওয়ার কথা ছিল। অথচ, অধিগ্রহণের নোটিস দেওয়া হয় ২৪৩ একর জমিতে। আমরা বাধা দিই। জগদীশপুরে জমি অধিগ্রহণে বাধা দেওয়ার কারণ, ‘ওয়েবেল’-এর সঙ্গে যে চুক্তির ভিত্তিতে সেখানে প্রকল্প হওয়ার কথা ছিল, সেই চুক্তির মেয়াদ ফুরিয়ে গিয়েছিল।”
আটকে থাকা রাস্তার কাজ শুরুর ব্যাপারে কমিটি এখন কী বলছে? পূর্ণেন্দুবাবুর জবাব, “আমরা তো ওই কাজে বাধা দিইনি! তবে, খোঁজ নেব। রাস্তাটি তৈরি হলে ভাল।” |
|
|
|
|
|