বর্ষার ঘাটতি নিয়ে দুশ্চিন্তায় বাজার
নেরো মাসে এগারো বার। তবুও সাফল্যের কোনও দেখা নেই। একনাগাড়ে সুদ বাড়িয়েই চলেছে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক। কিন্তু তাতে কোনওই হেলদোল নেই মুদ্রাস্ফীতির। সুদ বৃদ্ধির কারণে দাম বাড়ছে বাড়ি, গাড়ি ও শিল্পপণ্যের। বাড়ছে গৃহস্থের মাসিক কিস্তি বা ই এম আই। কিন্তু তাতেও মুদ্রাস্ফীতির মেদ ঝরছে না। শস্যের রেকর্ড উৎপাদন সত্ত্বেও দাম তেমন কমছে না খাদ্যপণ্যের। ফলে এখন প্রশ্ন উঠেছে, শুধুই কি সুদ বাড়িয়ে মুদ্রাস্ফীতিকে রোখা সম্ভব?
অন্য যে-সব পথে সরকার হাঁটতে পারে, তার মধ্যে রয়েছে: কিছু পণ্য আমদানি করে জোগান ঠিক রাখা। মজুতদারি বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া, সাদা টাকার পাশাপাশি বাজারে কালো টাকার জোগান কমানোর ব্যাপারে কড়া পদক্ষেপ করা, বণ্টন ব্যবস্থা ঢেলে সাজা, অনাবশ্যক খরচের উপর কর বসানো ইত্যাদি। সমস্যা জর্জরিত কেন্দ্রীয় সরকার এই সব ব্যাপারে কতটা সক্রিয় হতে পারবে, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে।
কিছু ব্যাঙ্ক এরই মধ্যে বিভিন্ন ধরনের ঋণের উপর সুদ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে। বৃদ্ধির হার ৫০ বেসিস পয়েন্ট থেকে ৭৫ বেসিস পয়েন্ট। এর অবশ্যম্ভাবী প্রভাব পড়বে বাড়ি ও গাড়ির চাহিদার উপর। অন্য দিকে খরচ বাড়বে বাড়ি ও গাড়ি তৈরির। অর্থাৎ চাহিদা কমলেও দাম তেমন কমবে না। মনে রাখতে হবে, এই দুই শিল্পের উপর নির্ভর করে আরও অনেক শিল্প। নির্ভর করে কর্মসংস্থানও। সুদ বাড়ার ফলে কম-বেশি আঘাত পৌঁছবে প্রায় সব শিল্পেই। এর ফলে শিল্পে আসতে পারে মন্থরতা। কমতে পারে কর্মসংস্থান। নেমে আসতে পারে জাতীয় উৎপাদন বৃদ্ধির হার। এই সব কারণে শিল্পমহল আদৌ ভাল চোখে দেখেনি এক ধাক্কায় ৫০ বেসিস পয়েন্ট সুদ বাড়ানোকে। এই সুদ বৃদ্ধির কারণে সাময়িক চাঙ্গা শেয়ার বাজার আবার দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশেষ ভাবে দাম কমেছে ব্যাঙ্ক শেয়ারগুলির। দুর্বল হয়ে পড়েছে ঋণ-নির্ভর কোম্পানিগুলি।
ত্রৈমাসিক ফলাফল
(এপ্রিল-জুন)
কোম্পানি বিক্রি/আয় বৃদ্ধি/হ্রাস নিট লাভ বৃদ্ধি/হ্রাস
(কোটি টাকায়) (শতাংশ) (কোটি টাকায়) (শতাংশ)
আই টি সি ৫৭৬৭ ১৯.৫ ১৩৩৩ ২৪.৫
হিন্দ ইউনিলিভার ৫৫০৪ ১৪.৮ ৬২৭ ১৭.৬
অয়েল ইন্ডিয়া ২২৮৮ ৫০.২ ৮৫০ ৬৯.৬
বাটা ইন্ডিয়া --- --- ৪১ ৫৮.২
পিএনবি ৯৩৯৯ ৩৬.৯৫ ১১০৫ ৩.৪
আইএফসিআই ৬০৩ ২১.৮১ ১৩২ ১১.৯
কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক ৩২৬৮ ৪২.৪৫ ৩৫১ ৫.৩
মারুতি সুজুকি ৮৫২৯ ২.৬৫ ৫৪৯ ১৮.১
আইসিআইসিআই ব্যাঙ্ক --- --- ১৩৩২ ৩০
সিইএসসি --- --- ১১১

ঋণে সুদ বৃদ্ধির পাশাপাশি মেয়াদি জমার উপরও সুদ বাড়ানোর কথা ঘোষণা করেছে কোনও কোনও ব্যাঙ্ক। কয়েক বছর পর আবার হয়তো আমরা আমানতে সুদের হারকে দুই অঙ্কে পৌঁছতে দেখব। এত ঘনঘন সুদ বৃদ্ধির ফলে বেশ মুশকিলেই পড়েছেন আমানতকারীরা। সুদ অনেকটা বেড়েছে ভেবে মেয়াদি আমানতে টাকা গচ্ছিত করার পরপরই দেখা যাচ্ছে সুদ আরও বেড়ে উঠেছে।
গত সপ্তাহে একগুচ্ছ ত্রৈমাসিক কোম্পানি ফলাফল আমাদের হাতে এসেছে। এখনও পর্যন্ত ফল খুব একটা মন্দ নয়। কিন্তু সুদ বাড়ার কারণে বাজার দুর্বল হয়ে পড়ায় ভাল ফলের প্রভাব সূচকের উপর তেমন ভাবে পড়ছে না। গত সপ্তাহে যে-সব কোম্পানি ফলাফল প্রকাশ করেছে, তাদের মধ্যে আছে আই টি সি, আই সি আই সি আই ব্যাঙ্ক, হিন্দুস্তান ইউনিলিভার, সি ই এস সি, বাটা ইন্ডিয়া, অয়েল ইন্ডিয়া, ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্ডিয়া, মারুতি, কর্পোরেশন ব্যাঙ্ক-সহ অনেক নামী সংস্থা। সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল কিছু সংস্থার আর্থিক ফলাফল।
এ বার থেকে মিউচুয়াল ফান্ডে লগ্নি করতে হলে গুনতে হবে অতিরিক্ত ১৫০ টাকা। চালু অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে মাসুল পড়বে ১০০ টাকা। মিউচুয়াল ইউনিট বণ্টনকারী সংস্থাগুলি তাদের নানা খরচ মেটানোর জন্য পাবে এই টাকা। সেবি-র মতে, এর ফলে বণ্টনকারী সংস্থাগুলি নতুন উদ্যমে মিউচুয়াল ইউনিট বিক্রি করার ব্যাপারে উৎসাহ পাবে। বৃহস্পতিবার নেওয়া সেবির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী লগ্নিকারীদের এই নতুন মাসুল দিতে হবে বিনিয়োগের অঙ্ক ১০,০০০ টাকা ছাড়ালে তবেই।
সুদ বৃদ্ধির কারণে আবার ঝিমিয়ে পড়েছে শেয়ার বাজার। অন্য দিকে আকাশে বর্ষার মেঘের আনাগোনা কমে আসায় কালো মেঘ দেখা দিয়েছে দালাল স্ট্রিটের মাথায়। আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, বর্ষার ঘাটতি ১ শতাংশ থেকে বেড়ে ২৭ জুলাই পৌঁছেছে ৪ শতাংশে। কৃষির জন্য সময়টা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ফলে চিন্তায় চাষিরা। চিন্তায় লগ্নিকারীরাও।
First Page Business Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.