|
|
|
|
উচ্ছেদে হুমকি প্রাক্তন মন্ত্রীর |
প্রয়োজনে হকারদের নিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ-অনশন শিলিগুড়িতে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
শিলিগুড়ি শহরের প্রধান রাস্তাগুলি থেকে হকার উচ্ছেদ অভিযানের বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমে আন্দোলনের হুমকি দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন পুরমন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্য। সেই সঙ্গে উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ না হলে প্রয়োজনে হকারদের নিয়ে অবস্থান বিক্ষোভ, অনশনে বসার কথাও জানিয়েছেন তিনি। শুক্রবার দুপুরে হিলকার্ট রোডের দলীয় দফতরে বসে অশোকবাবু ওই ঘোষণা করেন। পাশাপাশি, সিটুর তরফেও হকার উচ্ছেদ নিয়ে লাগাতার আন্দোলন করার হবে বলে সংগঠনের নেতারা প্রাক্তন পুরমন্ত্রীর পাশে বসেই জানিয়ে দেন। তিনি বলেন, “মা, মাটি, মানুষের সরকার উত্তরবঙ্গকে সুইজারল্যান্ড তৈরির কাজে নেমেছে। সেই কারণেই হয়তো হকার উচ্ছেদ শুরু হয়েছে। ১০-১৫ বছর ধরে মানুষগুলি রাস্তার ধারে বসে ছোট ব্যবসা করে সংসার চালাচ্ছেন। বিকল্প ব্যবস্থা না করে তাঁদের এই ভাবে তুলে দেওয়া অন্যায়। এর প্রতিবাদে সর্বাত্মক আন্দোলন হবে। আমি হকারদের সঙ্গে আন্দোলন করব। প্রয়োজনে অবস্থান, অনশনও করব।” সুপ্রিম কোর্টের বছর দু’য়েক আগের একটি নির্দেশিকা দেখিয়ে অশোকবাবু বলেন, “এই নির্দেশ অনুসারে প্রতিটি রাজ্যে ‘স্ট্রিট ভেন্ডার’দের নিয়ে একটি আইন তৈরি করতে হচ্ছে। সেখানে সামজিক সুরক্ষা, পরিচয়পত্র-সহ নানা সুযোগ সুবিধার কথা বলা হয়েছে। কয়েকটি রাজ্যে হয়ে গিয়েছে। এই রাজ্যেও হচ্ছে। সরকারি ভাবে শিলিগুড়ি পুরসভা বিষয়টি জানে। তাই এই উচ্ছেদ বেআইনি।” অভিযান চলতে থাকলে হকারেরা মানবাধিকার কমিশনের পাশাপাশি আদালতেও যাবে বলে পুরমন্ত্রী জানিয়েছেন। এই বিষয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেব শুধু বলেছেন, “বিষয়টি পুরসভা এবং পুলিশের। ওঁরাই তা দেখবে।” |
|
ছবি: বিশ্বরূপ বসাক। |
অশোকবাবুর অভিযোগকে উড়িয়ে দিয়েছেন শিলিগুড়ি পুরসভার মেয়র গঙ্গোত্রী দত্ত। তিনি বলেন, “আমরা সুপ্রিম কোর্টের কোনও নির্দেশিকা অমান্য করেনি। শহরের রাস্তা বা ফুটপাতের উপর যে সমস্ত দোকানদারেরা মালপত্র রাখছিলেন তা সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। কোনও দোকান উচ্ছেদ তো হয়নি। আর রাস্তা চলাচলের উপযুক্ত করা হচ্ছে।” গত বুধবার থেকে শিলিগুড়ি শহরের প্রধান রাস্তাগুলির দুই পাশ এবং ফুটপাত থেকে ওই উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে। বিধানরোড, বিধান মার্কেট, হিলকার্ট রোডের একাংশে ওই অভিযান চলছে। জেলা পুলিশ সুপার দেবেন্দ্র প্রকাশ সিংহ বলেন, “বাসিন্দারা রাস্তা দখল বা চলাচলের সমস্যার অনেক অভিযোগ করছিলেন। তার পরেই অভিযান শুরু হয়। ট্রাফিক পুলিশের এই অভিযান চলবে।” শুধু হকার উচ্ছেদ নয়, রাজ্য সরকারের মন্ত্রী, বিধায়কদের কাজকর্ম নিয়েও এদিন প্রাক্তন পুরমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন। তিনি জানান, জমি অধিগ্রহণ না করেই সচিবালয় তৈরির কথা বলা হল। এসজেডিএ, মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল, কেএমডিএ, পুরসভাগুলিতে মন্ত্রী, বিধায়কেরা নানা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। নতুন একটাও প্রকল্পের কাজও শুরু হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, “কোনও নতুন কেন্দ্রীয় বরাদ্দ আসেনি। পুরানো কাজগুলিও থমকে দাঁড়িয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ২০০ কোটি টাকা বরাদ্দের বলছেন। আমি খোঁজ নিয়েছি। এমন কোনও বরাদ্দের কথা তো কেউই বলতে পারছেন না।” এই প্রসঙ্গে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রীর বক্তব্য, “অশোকবাবু ২০ বছর রাজ্যের মন্ত্রী ছিলেন। কী করেছেন তা সবাই জানেন। ওঁর এখন বিশ্রামের প্রয়োজন রয়েছে। সাহায্য করতে না পারলে চুপ করে থাকুন। উনি ধৈর্য্য ধরুন কয়েকদিন, দেখতে পাবেন কোথায় কী হচ্ছে।” |
|
|
|
|
|