|
|
|
|
ভরদুপুরে ৩০ লক্ষের সোনা লুঠ বেলাকোবায় |
নিজস্ব প্রতিবেদন |
মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে প্রায় ৩০ লক্ষ টাকার সোনার অলঙ্কার লুঠ করে এলোপাথাড়ি বোমা ও গুলি ছুড়তে ছুড়তে মোটর বাইক নিয়ে চম্পট দিল পাঁচ দুষ্কৃতী। শুক্রবার দুপুর ১টা নাগাদ ঘটনাটি ঘটে রাজগঞ্জ থানার বেলাকোবা বাজারে। দুষ্কৃতীদের গুলিতে এক বালক জখম হয়েছে। তাকে শিলিগুড়ির একটি নার্সিংহোমে ভর্তি করানো হয়েছে। যেখান থেকে মাত্র দুশো মিটার দূড়েই পুলিশ ফাঁড়ি। লুঠ চলাকালীন পুলিশ ফাঁড়িতে ফোন করে জানানোর পরেও পুলিশ দেরি করে আসে বলে অভিযোগ করেছেন ব্যবসায়ীরা। পুলিশ পৌঁছলে ব্যবসায়ী এবং বাসিন্দারা তাঁদের ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। জেলা পুলিশের কর্তারা গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেন।
এক সপ্তাহের মধ্যে বেলাকোবায় এই নিয়ে তিনটি ডাকাতির ঘটনায় অস্বস্তিতে পুলিশ কর্তারা। পুলিশ এর তদন্তে নেমে স্থানীয় বেলাকোবা বাজার থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে মান্তাদারি এলাকার জঙ্গল থেকে একটি মোটর বাইক, একটি প্যান্ট ও জুতো উদ্ধার করেছে। পুলিশ সুপার আনন্দ কুমার বলেন, “একটি মোটর বাইক উদ্ধার করা হয়েছে। কিছু সূত্র মিলেছে। তদন্ত চলছে। জঙ্গলের পথে দুষ্কৃতীরা ভুটানে চলে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। এলাকায় নিরাপত্তা বাড়ানো হচ্ছে।”
পুলিশ এবং স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবার বেলা পৌনে একটা নাগাদ অন্য দিনের মতোই কর্মব্যস্ত ছিল বেলাকোবা বাজার এলাকা। দু’টি বাইকে চড়ে পাঁচ দুষ্কৃতী একটি সোনার দোকানের সামনে এসে দাঁড়ায়। তারা সোনার দোকানে ঢুকে পড়ে। দুপুর একটা নাগাদ ওই দোকানটি সাধারণত বন্ধ হয়ে যায়। এ দিন গ্রাহক থাকায় সেটি খোলাই ছিল। দোকানে ঢুকে মালিকের গালে সপাটে চড় কষায় এক দুষ্কৃতী। আর এক জন মালিকের মাথায় বন্দুক ধরে পরিষ্কার বাংলায় বলে, “যা আছে, দিয়ে দে।” দোকান মালিক রঞ্জিত পাল আতঙ্কিত হয়ে কর্মচারীকে দুষ্কৃতীদের কথা মতো কাজ করতে বলেন। শোকেসের কাচ ভেঙে দুষ্কৃতীরাই গয়না ঝোলায় ভরে নেয়। তারা দোকানের সিন্দুক খুলে দেওয়ার নির্দেশ দিলে রঞ্জিতবাবু সিন্দুকও খুলে দেন। কয়েক মিনিটে দোকান লুঠ করে মেঝে লক্ষ করে গুলি চালায় দুষ্কৃতীরা। এর পরে দোকানের সামনের রাস্তায় বোমা ফাটিয়ে মোটর বাইকে চড়ে এলোপাথাড়ি গুলি ছুড়ে পালিয়ে যায়।
দোকানের মেঝেয় ছোড়া গুলির টুকরো লেগে জখম হয়েছে দোকানের গ্রাহক এক দম্পতির শিশুপুত্র। তাকে একটি নার্সিংহোমে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়। দোকানের মালিক রঞ্জিতবাবু বলেন, “হঠাৎই পাঁচ যুবক ঢুকে আমায় চড় মেরে মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে সব কিছু দিয়ে দিতে বলে। বোমা ফাটিয়ে দুষ্কৃতীরা চলে যাওয়ার পরে দেখি শিশুটির পা থেকে রক্ত গড়িয়ে পড়ছে।” প্রত্যক্ষদর্শী কয়েক জন জানান, একটি লাল ও একটি কালো বাইকে ৫ জন দুষ্কৃতী এসেছিল। সকলের মুখ খোলা থাকলেও এক জন হেলমেট পরে ছিল। এক জনের পরনে ছিল কালো রঙের কোট-প্যান্ট। বেলাকোবা ব্যবসায়ী সংগঠনের সভাপতি মুরারি জাজোদিয়া, সম্পাদক রতীশ চাকির অভিযোগ, পুলিশ ঠিক মতো টহলদারি করে না। ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তাই নেই। মুরারিবাবু বলেন, “জেলা পুলিশের কর্তারা নিরাপত্তার আশ্বাস না দিলে অনির্দিষ্ট কালের জন্য ব্যবসা বন্ধ রেখে লাগাতার বন্ধ পালন করা হবে।” স্থানীয় বাসিন্দা রাজগঞ্জের বিধায়ক খগেশ্বর রায় বলেন, “পুলিশের কাজকর্মে বিস্তর ক্ষোভ রয়েছে। নজরদারি বাড়াতে পুলিশ সুপারের কাছে কথা বলব।” |
|
|
|
|
|