|
|
|
|
অধিবেশন নিয়ে সংঘাত সরকার ও বিরোধী পক্ষের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
আপাত-সৌহার্দ্যের পরিবেশ ছাড়িয়ে এ বার বিধানসভায় সরকার ও বিরোধী পক্ষের সংঘাতের বাতাবরণ তৈরি হল। নবীন বিধায়কদের জন্য প্রশিক্ষণ শিবিরের তারিখ অদলবদল এবং তার জেরে অধিবেশনের দিন স্থগিত রাখা নিয়েই দ্বন্দ্বের সূত্রপাত।
বিধানসভার অধিবেশন শুরু হচ্ছে ১০ অগস্ট। তার আগে ৮ এবং ৯ অগস্ট বিধায়কদের পরিষদীয় রীতিনীতি শেখানো এবং আলোচনার মানোন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণ শিবিরের আয়োজন করা হয়েছিল। প্রাথমিক ভাবে ঠিক হয়েছিল, শিবিরের প্রথম দিন বক্তা হিসাবে থাকবেন লোকসভার স্পিকার মীরা কুমারও। কিন্তু রবীন্দ্রনাথের প্রয়াণ দিবস উপলক্ষে রাজ্য সরকার ৮ অগস্ট (২২ শ্রাবণ) ছুটি ঘোষণা করায় ওই প্রশিক্ষণ শিবির পিছিয়ে ১২ ও ১৩ তারিখে নিয়ে যাওয়া হবে বলে আপাতত ঠিক করেছে সরকার পক্ষ। বিধায়কেরা যাতে শিবিরে মনোনিবেশ করতে পারেন, তার জন্য ১২ তারিখ অধিবেশন মুলতবি রাখার কথাও ভাবা হয়েছে। বামফ্রন্ট আবার ওই ১২ তারিখেই ‘সন্ত্রাসে’র বিরুদ্ধে বিধানসভার ভিতরে ও বাইরে বিক্ষোভ-প্রতিবাদের ডাক দিয়েছে। সেই দিন অধিবেশন বন্ধ থাকলে বিরোধী বিধায়কেরা সভায় বলার সুযোগই পাবেন না। সেই জন্যই সরকারের এই ভাবনার তীব্র প্রতিবাদ করেছেন বিরোধী দলনেতা তথা সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য সূর্যকান্ত মিশ্র।
পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে লোকসভার স্পিকার আর রাজ্য বিধানসভায় আসছেন না। লোকসভার সচিবালয়ের দুই প্রতিনিধির ওই প্রশিক্ষণ শিবিরে থাকার কথা। মুখ্য সরকারি সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় শুক্রবার বলেন, “প্রশিক্ষণ শিবিরের তারিখ বদলে ১২ ও ১৩ তারিখ করা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৩ তারিখ শিবিরে বক্তৃতা করবেন।” কিন্তু বামফ্রন্ট যেখানে বৃহস্পতিবারই ঘোষণা করেছে তাদের ১২ তারিখের কর্মসূচির কথা, সে ক্ষেত্রে সেই দিনই প্রশিক্ষণ শিবির সংঘাত বাধাবে না? শোভনবাবু বলেন, “বিধায়কেরা যাতে প্রশিক্ষণ শিবিরে মনোযোগ দিতে পারেন, তার জন্য ১২ তারিখ অধিবেশন রাখা হবে না বলেই ভাবা হচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রী এবং পরিষদীয় মন্ত্রী তথা সরকার পক্ষের দলনেতা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গেও আলোচনা করে নেওয়া হয়েছে।” বিধানসভায় এ দিনই স্বাধিকার রক্ষা কমিটির বৈঠকে ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহও বাম-সহ কমিটির সদস্য-বিধায়কদের জানিয়ে দেন, ১২ তারিখ অধিবেশন হবে না। শোকপ্রস্তাবের পরে ১০ তারিখ অধিবেশন মুলতবি হয়ে যাবে। সেই জন্যই ‘সন্ত্রাস’ এবং ‘গণতান্ত্রিক অধিকার হরণে’র প্রতিবাদে বামফ্রন্টের বিক্ষোভ-সমাবেশের কর্মসূচি ১০ তারিখ থেকে পিছিয়ে ১২ তারিখ করা হয়েছে মাত্র বৃহস্পতিবারই। যাতে ওই দিন বিধানসভার অন্দরেও বাম বিধায়কেরা প্রতিবাদের সুযোগ পান।
কিন্তু ১২ তারিখও অধিবেশন হচ্ছে না জেনে স্বভাবতই ক্ষুব্ধ সূর্যবাবু। বিরোধী দলনেতা এ দিন বলেন, “আনুষ্ঠানিক ভাবে আমাদের এখনও ১২ তারিখের বিষয়ে জানানো হয়নি। প্রথমে বলা হয়েছিল, ৮ তারিখ ছুটি থাকায় প্রশিক্ষণ শিবির হবে ৯ ও ১০ তারিখ। আমাদের কর্মসূচি পিছিয়ে ১২ তারিখ করার কথা ঘোষণা করে দেওয়া হয়েছে। আমরা সেই দিন বিধানসভায় বলার অধিকার দাবি করেছি। এখন আবার সেই দিনই অধিবেশন বন্ধ রাখার কথা বলা হচ্ছে!” সূর্যবাবুর বক্তব্য, কোনও দলের বড় কর্মসূচি ঘোষিত হয়ে থাকলে লোকসভার সাধারণ কাজকর্মও স্থগিত রাখার রেওয়াজ আছে। কিন্তু এখানে বিরোধীদের প্রতিবাদের ‘সুযোগ’ কেড়েনেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে। সূর্যবাবুর কথায়, “১০ তারিখ শোকপ্রস্তাব আছে বলে আমরা এক বার পিছোলাম। এ বার ১৩ বা ১৫, যে দিনই করি, সরকার বলবে সে দিন অধিবেশন বন্ধ থাকবে! এটা হলে বুঝতে হবে, সরকার ভয় পেয়ে পালাতে চাইছে!” |
|
|
|
|
|