|
|
|
|
‘গুরুত্ব’ মিলছে না, প্রণবকে নালিশ কংগ্রেস বিধায়কদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
শরিক হওয়া সত্ত্বেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের কাছ থেকে কোনও ‘গুরুত্ব’ পাচ্ছেন না বলে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছে অভিযোগ করলেন দলীয় বিধায়কেরা। শনিবার বিধানসভার নৌসর আলি কক্ষে বিধায়কদের পরিষদীয় রীতিনীতি শিক্ষার ‘ক্লাস’ নেন প্রণববাবু। ওই ‘ক্লাস’কে অবশ্য নিজেদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ জানানোর জন্যই বেছে নিয়েছিলেন কংগ্রেসের বেশ কিছু বিধায়ক। পরিষদীয় প্রতিমন্ত্রী মনোজ চক্রবর্তী (যিনি ইতিমধ্যেই এক বার মন্ত্রিত্ব ছাড়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন) প্রণববাবুকে বলেছেন, তাঁকে ওই দায়িত্ব থেকে ‘মুক্তি’ দেওয়া হোক।
এ দিন প্রণববাবু দলীয় বিধায়কদের আসন্ন বিধানসভা অধিবেশনে নিয়মিত হাজির থাকার পরামর্শ দেন। এক বিধায়কের কথায়, “প্রণববাবু বলেছেন, জনপ্রতিনিধি হিসাবে এলাকার মানুষের কাছে আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে। পাশাপাশি, দলীয় বিধায়ক হিসাবেও সুযোগমতো নিজের দলের নীতি ও আদর্শ বজায় রেখে বক্তৃতার জন্য প্রস্তুত থাকা উচিত।” |
|
বিধানসভায় কংগ্রেস বিধায়কদের সভায় প্রণববাবু। শুক্রবার। নিজস্ব চিত্র |
এই সময়েই মনোজবাবু, বিধায়ক অপূর্ব সরকারেরা প্রণববাবুর কাছে অভিযোগ করেন, তাঁরা সরকারের শরিক হওয়া সত্ত্বেও কোনও ‘গুরুত্ব’ পাচ্ছেন না। অন্য বিধায়কেরাও একই সুরে অভিযোগ করেন, বিধানসভার ‘গুরুত্বপূর্ণ’ স্থায়ী কমিটিতে স্থান না-দেওয়ায় দেবপ্রসাদ সরকার, অজয় দে, অসিত মিত্রের মতো প্রবীণ বিধায়করা কোনও কমিটির চেয়ারম্যান পদ নেননি প্রণববাবু অবশ্য পাশে-বসা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যকে দেখিয়ে বিষয়টি নিয়ে দলের রাজ্য স্তরে আলোচনার পরামর্শ দিয়েছেন। ‘ক্লাসে’ কংগ্রেসের দুই পূর্ণমন্ত্রী মানস ভুঁইয়া এবং আবু হেনা উপস্থিত ছিলেন।
এক ঘণ্টার বেশি সময় ধরে প্রণববাবুর আলোচনা শেষে মনোজবাবু বলেন, “আমি প্রণবদাকে স্পষ্ট বলেছি, আমাকে মন্ত্রিত্ব থেকে মুক্তি দিন। কারণ, আমি পরিষদীয় দফতরের প্রতিমন্ত্রী অথচ আমাকেই ওই দফতর সংক্রান্ত কমিটিতে রাখা হয়নি। শুধু মহাকরণের করিডোরে হেঁটে বেড়াবার জন্যে তো মন্ত্রী হইনি!” তবে মনোজবাবু ক্ষুব্ধ হলেও দস্তুর হল, কোনও মন্ত্রীই বিধানসভার স্থায়ী কমিটিতে থাকেন না। সংশ্লিষ্ট দফতরের বিষয়ে সিলেক্ট কমিটি হলে মন্ত্রীরা তার প্রধান হন। দলীয় বিধায়কদের নিয়ে তাঁর ‘ক্লাস’ তথা মতবিনিময় নিয়ে প্রণববাবু অবশ্য প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করেননি।
বাবার ‘ক্লাসে’ এ দিন হাজির ছিলেন প্রণববাবুর পুত্র, নলহাটির বিধায়ক অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা তাঁকে সরাসরি পশ্চিমবঙ্গ পরিকাঠামো উন্নয়ন বিত্ত নিগমের চেয়ারম্যান করেছিলেন। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে কংগ্রেসের অন্দরেই ‘বিতর্ক’ হওয়ায় অভিজিৎবাবু সম্প্রতি ওই সংস্থা থেকে পদত্যাগ করেছেন। বিষয়টি নিয়ে এ দিন অবশ্য কোনও আলোচনা হয়নি বলেই কংগ্রেস সূত্রের খবর। সোহরাব জানান, দলের ৪২ জন বিধায়কের মধ্যে এ দিন ৫ জন অনুপস্থিত ছিলেন। এঁদের মধ্যে প্রবীণ বিধায়ক জ্ঞানসিংহ সোহন পাল (চাচা) অসুস্থ এবং দেবপ্রসাদবাবু জরুরি কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি। ছিলেন না রাজ্যের দুই প্রতিমন্ত্রী আবু নাসের খান চৌধুরী ও সাবিনা ইয়াসমিন এবং মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক শঙ্কর মালাকারও। |
|
|
|
|
|