কথা চেয়ে চিঠি দিল মাওবাদীরা, সবুজ সঙ্কেত দিলেন মমতা
রাজ্য সরকারের সঙ্গে মাওবাদীদের আলোচনার দরজা কি খুলতে চলেছে? শুক্রবার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে ঘণ্টাখানেক আলোচনার পর মানবাধিকার কর্মী সুজাত ভদ্র অন্তত তেমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন।
মহাকরণের খবর, আলোচনায় আগ্রহ প্রকাশ করে মাওবাদীদের রাজ্য সংগঠনের পক্ষ থেকে সম্প্রতি সরকারের শীর্ষ পর্যায়ে চিঠি পৌঁছেছে। সরকারও যে আলোচনায় আগ্রহী, এ দিনের বৈঠক থেকে কার্যত সেই সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। সুজাতবাবুর কথায়, “আমাদের বলা হয়েছে ‘গো অ্যাহেড।”
মাওবাদীরা অস্ত্র সংবরণ করে শান্তি আলোচনা চাইলে তারা যে কথা বলতে আগ্রহী, তা ইতিমধ্যেই জানিয়েছে নতুন সরকার। জঙ্গলমহলে শান্তি ফেরাতে বিভিন্ন লোকের সঙ্গে কথা বলার জন্য কয়েক জনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর ইচ্ছায় সুজাতবাবু-সহ ৬ জন মানবাধিকার কর্মী সম্প্রতি জঙ্গলমহল এলাকায় গিয়েছিলেন। মাওবাদী ছাড়াও জঙ্গলমহলে থাকা বিভিন্ন সংগঠনের সঙ্গে তাঁদের কথা হয়েছে। এই সব আলোচনায় খুবই ‘ইতিবাচক সাড়া’ পাওয়া গিয়েছে বলে দাবি করেছেন ‘মধ্যস্থতাকারীরা’।
তবে মাওবাদীদের তরফে কারা আলোচনা চেয়ে চিঠি দিয়েছেন, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকার বা ‘মধ্যস্থতাকারী’, কারও তরফেই কিছু বলা হয়নি। তবে সূত্রের খবর, মাওবাদীদের রাজ্য নেতৃত্বের তরফেই এই চিঠি এসেছে এবং ওই নেতারা জেলবন্দি নন।
তবে এটাও ঠিক যে, রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনার প্রশ্নে মাওবাদীদের মধ্যে বিভাজন রয়েছে। কিষাণজির মতো শীর্ষস্থানীয় মাওবাদী নেতারা রাজ্যের নতুন সরকারের প্রতি নরম মনোভাব নেওয়ার বিরোধিতা করছেন বলেই খবর। অতি সম্প্রতি মাওবাদী প্রভাবিত জঙ্গলমহলে গিয়ে সেখানকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য যে ‘বিশেষ প্যাকেজ’ মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেছেন, তার বিরোধিতা করেছে মাওবাদীরা। বিশেষ করে জঙ্গলমহলের বেকার যুবক-যুবতীদের পুলিশে চাকরি দেওয়ার প্রস্তাবের। এর ফলে ‘সালওয়া জুড়ুম’-এর মতো বাহিনী গড়ে উঠবে বলে মাওবাদীদের তরফে প্রকাশ্যেই জানানো হয়েছে। এবং শুধু রাজ্যের প্রস্তাবের বিরোধিতা নয়, জঙ্গলমহলে মাওবাদীরা নতুন করে সক্রিয় হচ্ছে বলেও রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের গোয়েন্দা সূত্রের খবর। সেই কাজ ত্বরান্বিত করতে কিষেণজি দীর্ঘদিন পরে জঙ্গলমহলে এসে বৈঠক করে গিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের সঙ্গে আলোচনার প্রস্তাবে এ রাজ্যে মাওবাদীদের নিয়ন্ত্রক গোষ্ঠীর সায় আছে কি না, সেই প্রশ্ন উঠছেই। এর আগে মাওবাদীদের পক্ষ থেকে যখন আলোচনার প্রস্তাব দেওয়া হয়, তখন জঙ্গলমহল থেকে যৌথবাহিনী প্রত্যাহার, জেলবন্দি নেতাদের মুক্তির দাবির পাশাপাশি সরকারের চাহিদা মেনে অস্ত্র সংবরণ করা হবে না বলে জানানো হয়েছিল। এ বারেও তারা আলোচনার কিছু পূর্বশর্ত দিয়েছে। এ দিন মাওবাদীদের নাম না-করে সুজাতবাবু বলেন, “ওরা কিছু দাবি রেখেছে। সরকারকে তা জানিয়ে দিয়েছি।” তবে সেই শর্তগুলি কী, তা স্পষ্ট করতে চাননি সুজাতবাবু। তিনি বলেন, “শান্তিপ্রক্রিয়া চলছে। তাই সব কথা এখনই প্রকাশ্যে বলা যাবে না।” মাওবাদীদের সামনে সরকার কি পূর্বশর্ত রাখছে? প্রায় একই উত্তর দেন সুজাতবাবু। তবে মাওবাদীদের শর্তের পরিপ্রেক্ষিতে এ দিন মুখ্যমন্ত্রী যা বলেছেন, তা তাদের জানানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
Previous Story Rajya Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.