|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ৩... |
|
আকর-সূত্র নিয়ে এমন কাজই চাই |
সার্ধশতবর্ষে রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বিচিত্র বিষয়ে প্রবন্ধ সংকলন, পুরনো লেখা ও বইয়ের পুনর্মুদ্রণ, বিষয়-অনুযায়ী রবীন্দ্রনাথের রচনাগুলিকে গ্রন্থবদ্ধ করার উদ্যোগের কোনও অন্ত নেই। কিন্তু আকর সূত্রগুলির দিকে নজর খুব বেশি পড়ছে বলে মনে হয় না। আসলে আকর-সূত্র নিয়ে কাজ করা সময়সাপেক্ষ এবং কঠিন, চট করে জনপ্রিয়তাও পাওয়া সম্ভব নয়। ফলে গত দুই বছরে অপ্রকাশিত আকর-সূত্রের প্রকাশ খুব কমই ঘটেছে। এ বার পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য লেখ্যাগার প্রকাশ করেছে রবীন্দ্রনাথ সংক্রান্ত সরকারি নথির বড় আকারের সংকলন, আ ট্রিবিউট টু রবীন্দ্রনাথ টেগোর/ গ্লিম্পসেস ফ্রম আর্কাইভ্যাল রেকর্ডস, (সম্পাদনা অতীশ দাশগুপ্ত, সম্পাদনা-সহযোগী মধুরিমা সেন, ১৮০০.০০)। বিশ্বভারতী রবীন্দ্র ভবনের কিছু নথি বাদে বাকি সব নথিই রাজ্য লেখ্যাগারের সংগ্রহ থেকে, এবং এর অনেকটাই এই প্রথম গবেষকদের গোচরে এল। মূলত ইন্টেলিজেন্স ব্র্যাঞ্চ, হোম পলিটিক্যাল, এডুকেশন, কনফিডেন্সিয়াল রিপোর্ট অন দ্য নেটিভ পেপার্স এই সব বিভাগের নথিই এখানে কাজে লাগানো হয়েছে। অধিকাংশ ফ্যাকসিমিলি ছাপার ফলে দুর্লভ নথিগুলি অন্য মাত্রা পেয়েছে। বিশ্বভারতী নিয়ে রবীন্দ্রনাথের ধ্যান-ধারণা ও পরিকল্পনা ব্রিটিশ সরকারের কাছে কখনওই খুব স্পষ্ট ছিল না। তাই প্রথম থেকেই তারা কড়া নজর রেখেছিল এই প্রতিষ্ঠানের উপর। আবার প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময়ে ও পরে ভারতে ইউরোপীয় ও অন্য বিদেশিদের উপস্থিতি আই বি ও সি আই ডি-র রীতিমতো মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছিল। খতিয়ে না দেখে বিশ্বভারতীর কোনও চিঠিই ছাড়া হত না। বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত রিপোর্ট, ভাষণ ইত্যাদিরও খেয়াল রাখা হত। এই ভাবে টিকে গিয়েছে বহু খবর, মূল সংবাদপত্রের ফাইল না থাকায় যা অন্য কোনও সূত্রে পাওয়া সম্ভব ছিল না। সংকলনে এগুলি ভাল ভাবেই কাজে লাগানো হয়েছে। কৌতূহল জাগায় আই বি-র ডেপুটি ডিরেক্টর বামফোর্ডকে পাঠানো এক ইনফর্মারের রিপোর্ট। সে যখন ছাত্র সেজে বিশ্বভারতীতে ভর্তি হয়, তখন সহপাঠী হিসেবে পেয়েছিল পুলিনবিহারী সেন, মনোমোহন বসু ও কৃষ্ণ আইয়ারকে। সে মনোমোহনকে বিপ্লবী-ঘনিষ্ঠ বলে সন্দেহ করেছিল, মনোমোহনও অনুমান করেছিলেন যে সে পুলিশের চর। পুলিনবিহারী কিন্তু মানতে চাননি, তাঁর বন্ধু সত্যিই চর হতে পারে!
দিল্লির জাতীয় লেখ্যাগারেও তো রবীন্দ্র-নথির সংখ্যা বিপুল। সেখান থেকে কি এমন সংকলন সম্ভব নয়? |
|
|
|
|
|