পুস্তক পরিচয় ২...
নিজের বই নিয়ে কী লিখেছিলেন
বিষ্যতের স্মৃতি? তা-ও কি সম্ভব? ‘স্মৃতিসম্পুটে’ রবীন্দ্রনাথের অসামান্য বিশ্লেষণ করেছেন তপোব্রত ঘোষ। ‘স্মৃতিযাত্রায় রবীন্দ্রনাথ’ নামের সেই প্রবন্ধে স্মৃতি-র পৌরাণিক, বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যার সঙ্গে রবীন্দ্ররচনাকে মিলিয়ে দেখা রবীন্দ্র-চিন্তার নতুন জগৎ খুলে দেয়। প্রবন্ধটি পড়া গেল স্বপন চক্রবর্তী সম্পাদিত রবীন্দ্রনাথ: শিল্পরূপ, পাঠরূপ, গ্রন্থরূপ (অবভাস, ২০০.০০)-এ। তপোব্রত ঘোষ, আশীষ লাহিড়ী, শীর্ষেন্দু চক্রবর্তী, শুভেন্দু দাশমুন্সী, তপন ভট্টাচার্য, দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়, সোমেশ্বর ভৌমিক, সুকান্ত চৌধুরী, স্পন্দনা ভৌমিক এবং স্বপন চক্রবর্তী রবীন্দ্রনাথের সাহিত্য ছাড়াও নানা দিক নিয়ে আলোচনা করেছেন। সিনেমা, গান তো আছেই, আছে ‘গ্রন্থ, পাঠ, শিল্পকর্ম: রবীন্দ্রনাথ ও রচনার দৃশ্যপট’ নামে রবীন্দ্রনাথের গ্রন্থভাবনা নিয়ে স্বপন চক্রবর্তীর প্রবন্ধও। রবীন্দ্রনাথ নিজের ছাপা বই নিয়ে কী লিখেছিলেন কিংবা বলেছিলেন তার খতিয়ান নিয়ে এ প্রবন্ধে ফুটে উঠেছে গ্রন্থ-ভাবুক রবীন্দ্রনাথের এক অন্য রূপ।
রবীন্দ্রনাথের কিছু ইংরেজি রচনার সংকলন টেগোর ফর ইউ (দীপ প্রকাশন, ৭০০.০০)। গীতাঞ্জলি, চিত্রা, দ্য কিং অব ডার্ক চেম্বার, স্ট্রে বার্ডস, কাবুলিওয়ালা, দ্য ক্রেসেন্ট মুন পুরো বই কিংবা পৃথক রচনা, সবই আছে এতে। নির্বাচন করেছেন বারিদবরণ ঘোষ, সম্পাদনায় সত্যম রায়চৌধুরী। অবশ্য সম্পাদক ও নির্বাচকের ছবি-সহ দুটি সংক্ষিপ্ত ভূমিকা ছাড়া টীকা কিংবা রচনাগুলির উৎস বা গ্রন্থ-পরিচয়ও এ বইয়ে নেই। আছে রবীন্দ্রনাথের আঁকা ১৬টি ছবি, সাদা-কালোয়, আরও বিশেষিত করে বললে, মুদ্রণজনিত এক রহস্যময় আবছায়ায়।
‘ধাউস ঘুড়ি’ কাকে বলে? রবীন্দ্রনাথের ‘ছুটি’ গল্পের ফটিককে মনে পড়বে অনেকের। সেই দেয়ালের মধ্যে আটকা পড়িয়া কেবলই তাহার সেই গ্রামের কথা মনে পড়িত। প্রকাণ্ড একটা ধাউস ঘুড়ি লইয়া বোঁ বোঁ শব্দে উড়াইয়া বেড়াইবার সেই মাঠ...। এ বাক্যের অনুবাদ, ‘দ্য স্প্রলিং আনএন্ডিং ফিল্ড হোয়্যার হি উড নয়জিলি ফ্লাই কাইটস অ্যান্ড চেজ আফটার দেম...’। অনুবাদটি পাওয়া গেল
টেগোরস বেস্ট শর্ট স্টোরিজ-এ (ফ্রন্টপেজ, লন্ডন, ৩৯৫.০০)। বইটির ভূমিকা লিখেছেন প্যাট্রিক কোম হোগ্যান। রবীন্দ্রনাথের এক ডজন গল্পের মালবিকা চৌধুরী-কৃত ইংরেজি অনুবাদ এই সংকলনে। আছে অতিথি, দেনা পাওনা, এক রাত্রি, খোকাবাবুর প্রত্যাবর্তন, কঙ্কাল, কাবুলিওয়ালা, ছুটি, সমাপ্তি, ক্ষুধিত পাষাণ, মণিহারা, নষ্টনীড় এবং স্ত্রীর পত্র। এগুলিই রবীন্দ্রনাথের শ্রেষ্ঠ গল্প কি না সে তর্ক আপাতত অবান্তর। কিন্তু অনুবাদে মূলের আবহ কতটা? বেশ কিছু ক্ষেত্রে হয়নি। অনুবাদক কিছু কিছু বিষয় বাদ দিয়েছেন, কিছু ক্ষেত্রে অতি সরলীকরণ করেছেন। যেমন ‘ধাউস ঘুড়ি’কে শুধু ঘুড়ি করে ফেলেছেন। রতনকুমার চট্টোপাধ্যায়ের অনুবাদ এ ক্ষেত্রে মূলের অনেক বেশি কাছাকাছি। অনুবাদে একে শুধু ‘কাইট’ বললেও টীকায় গ্রামবাংলার ওই বিশেষ ঘুড়ি-জাতীয় খেলনাটির বিবরণ দেওয়া হয়েছে। গল্পগুচ্ছ থেকে ৬১টি গল্পের অনুবাদ করেছেন রতন। তিন খণ্ডে সেই অনুবাদ প্রকাশিত হয়েছে ওরিয়েন্ট ব্ল্যাকসোয়ান থেকে: সিলেকশনস ফ্রম গল্পগুচ্ছ। গল্পের শেষে টীকা এবং ‘গ্লসারি’র সহায়তায় বঙ্গজীবন সম্পর্কে অভিজ্ঞতাহীন পাঠকও পৌঁছতে পারবেন মূলের মেজাজে। দুই অনুবাদের দৃষ্টিভঙ্গির তফাত আন্দাজ করা যায় সূচি থেকে।
Previous Item Alochona Next Item


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.