পোড়া গায়ে হেঁটে থানায় গেলেন বধূ
প্রকাশ্যে রাস্তার উপরেই নিজের গায়ে আগুন ধরিয়েছিলেন। স্থানীয় কিছু দোকানদার আগুন নেভান। এর পরে অর্ধদগ্ধ অবস্থাতেই প্রায় দেড় কিলোমিটার হেঁটে থানায় পৌঁছলেন এক বধূ।
শুক্রবার বিকেলে এই ঘটনার সাক্ষী রইল আদ্রা রেলশহর। থানার দরজার সামনে ওই অবস্থায় এক মহিলাকে দেখে অবাক হয়ে গিয়েছিলেন ডিউটি অফিসার, এএসআই কিশোর দাস। সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ ওই বধূকে গাড়িতে করে রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করায়। সায়রা খাতুন নামে ওই বধূর বাড়ি শহরের মেডিক্যালপাড়ায়। রঘুনাথপুরের এসডিপিও দ্যুতিমান ভট্টাচার্য বলেন, “পারিবারিক অশান্তির কারণে ওই বধূ আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে। তাঁর স্বামীকে খোঁজা হচ্ছে। তবে তিনি পলাতক।”
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন বিকেল সাড়ে ৪টে নাগাদ আদ্রায় আরপিএফ পোস্টের অদূরে রাস্তার উপরে নিজের গায়ে আগুন লাগিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন সায়রা। দেখতে পেয়ে এলাকার কিছু দোকানদার দ্রুত এসে আগুন নেভান। পরনের শাড়িটি পুড়ে যাওয়ায় দোকানদারেরাই সায়রাকে একটি নাইটি দেন পরতে। এর পরেই অর্ধদগ্ধ অবস্থায় ওই বধূ হাঁটা লাগান আদ্রা তদন্তকারী কেন্দ্রের দিকে।
পুড়ে গিয়েছে মুখের একাংশ, মাথার চুল। ঘাড়, দুই হাত ও পায়েও ঝলসানোর চিহ্ন দগদগ করছে। ছোটখাটো চেহারার সায়রাকে ওই অবস্থায় রাস্তায় দিয়ে হাঁটতে দেখে পথচলতি সকলেই অবাক হয়ে যান। শেষ বিকেলে আদ্রার ডিআরএম কার্যালয়, ডাকঘর ও স্টেশন লাগোয়া এলাকায় ভিড় জমে যায়। প্রত্যক্ষদর্শী কয়েক জন বলেন, “কী হয়েছে, কেনই বা পোড়া শরীরে ওই মহিলা হাঁটছেন সে-সব কিছুই বুঝতে পারছিলাম না।”
তাঁরা ফোন করেন আদ্রা তদন্তকারী কেন্দ্রে। পুলিশ আসার আগেই অবশ্য সায়রা পৌঁছে যান থানায়। প্রায় আধ ঘণ্টা হেঁটে। সায়রা সোজা চলে যান ডিউটি অফিসারের ঘরের সামনে। মুখে আর্তি, “স্যার, আমাকে বাঁচান। গা জ্বলে যাচ্ছে!” পুলিশ দেরি না করে গাড়িতে করে তাঁকে মহকুমা হাসপাতালে পাঠায়। হাসপাতাল সূত্রে জানানো হয়েছে, সায়রার দেহের ৫০ শতাংশ পুড়েছে। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, সায়রার স্বামী মহম্মদ ফরিদের আদ্রা আরপিএফ পোস্টের সামনে লন্ড্রি আছে। দীর্ঘদিন ধরেই অশান্তি চলছিল ওই দম্পতির মধ্যে।
পুলিশের দাবি, সায়রা তাদের জানিয়েছেন, স্বামীর অত্যাচার সহ্য করতে না পেরেই তিনি আত্মহত্যার চেষ্টা করেছেন। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন বিকেলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সায়রা যান ফরিদের দোকানে। সেখানে ঝগড়া হয় দু’জনের। এর পরেই দোকান থেকে কেরোসিন নিয়ে নিজের গায়ে আগুন লাগান ওই বধূ। ওই তদন্তকারী কেন্দ্রের এক পুলিশকর্মীর কথায়, “সায়রা আক্ষেপ করেছেন, তাঁকে জ্বলতে দেখেও ফরিদ বাঁচানোর চেষ্টা না করে সেখান থেকে চলে যান।”
First Page Purulia Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.