দীর্ঘ দিন সংস্কারের অভাবে কার্যত হাইড্রেনে পরিণত হয়েছে বারাসত পুরসভার নিকাশির একমাত্র মাধ্যম বাণীকণ্ঠ খাল। খালের দু’পাশ দখল করে গড়ে উঠেছে অসংখ্য বাড়ি। নিয়মিত সাফাই না হওয়ায় পলি জমে কমে গিয়েছে খালের নাব্যতা। বাসিন্দাদের অভিযোগ, খাল সংস্কারে উদাসীন পুরসভা ও সেচ বিভাগ।
বাণীকণ্ঠ খাল বারাসত পুরসভার ১৫-১৭, ২৩-২৪, ২৭-২৯ ওয়ার্ডের মধ্য দিয়ে মধ্যমগ্রাম পুরসভা হয়ে বাদু রোডের পাশ দিয়ে বারাসত ব্লকের (২) রোহন্ডা-চণ্ডীগড় এলাকায় একটি ফাঁকা নিচু জমিতে এসে শেষ হয়েছে। খালটি দিয়ে বারাসত পুরসভার বাণীকণ্ঠনগর ছাড়াও বহু এলাকার নিকাশির জল বেরোয়। |
নিয়মানুযায়ী পার্শ্ববর্তী এলাকার বর্জ্য জল এসে জমা হওয়ার কথা বাণীকণ্ঠনগরের নর্দমাগুলিতে। এর পরে পুরসভা-নির্মিত নর্দমাগুলি দিয়ে জল গিয়ে পড়ার কথা বাণীকণ্ঠ খালে। কিন্তু বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা-নির্মিত নর্দমাগুলি নিয়মিত সাফাই হয় না, হলেও দায়সারা গোছের সাফাই করে আবর্জনা নর্দমার পাড়েই জমা করা হয়। পরের বৃষ্টিতে সেই আবর্জনা আবার নর্দমায় পড়ে নিকাশি ব্যহত হয়। প্লাস্টিক আর আবর্জনা জমে খালটি প্রায় ভরাট হয়ে গিয়েছে। জোরে বৃষ্টি এলেই খাল উপচে জল জমে যাচ্ছে বাণীকণ্ঠনগরের জনবসতির মধ্যে। বাসিন্দাদের অভিযোগ, কলোনির জল বেরিয়ে যাওয়ার কোনও বিকল্প উপায় না থাকায় বৃষ্টি হলেই নর্দমা উপচে নোংরা জল জমে যায় কলোনির রাস্তায়। যাতায়াত করতে গিয়ে চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হতে হয় বাসিন্দাদের। স্থানীয় মানুষের দাবি, চলতি বর্ষাতেও চূড়ান্ত নাকাল হতে হচ্ছে তাঁদের। দুর্গন্ধযুক্ত নোংরা জলের উপর দিয়েই ইট পেতে চলছে বাসিন্দাদের যাতায়াত। কিন্তু পুরসভা নর্দমা সাফাইয়ে উদ্যোগী হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক বাসিন্দার বক্তব্য, খালের সংস্কার আর সাফাই ঠিকমতো হলেই এলাকায় জল জমার সমস্যা মিটবে। |
কিন্তু এ নিয়ে পুরসভার বিশেষ হেলদোল দেখা যায় না। মাঝেমধ্যে নর্দমা সাফাই হলেও তা পর্যাপ্ত নয়।
খাল সংস্কারের দায়িত্ব কার তা নিয়েও শুরু হয়েছে চাপান-উতোর। পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাণীকণ্ঠ খালের সংস্কারের দায়িত্ব সেচ বিভাগের। আর সেচ বিভাগের দাবি, পুর এলাকায় খাল সংস্কারের কাজ পুরসভাই করে থাকে, সেচ বিভাগ নয়।
বারাসত পুরসভার চেয়ারম্যান তৃণমূলের সুনীল মুখোপাধ্যায় বলেন, “আমরা আমাদের এলাকাভুক্ত অংশে ওই খালের সংস্কার করি। জেএনএনইউআরএমের অধীনে এই খাল সংস্কারের পরিকল্পনা রয়েছে। বর্ষার আগে খাল সাফাই করা হয়েছিল। কিন্তু এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে সচেতনতার যথেষ্ট অভাব রয়েছে বলে খাল আবার নোংরা হয়ে গিয়েছে।” |
সেচ বিভাগের বিদ্যাধরী ড্রেনেজ ডিভিশনের নির্বাহী বাস্তুকার সুমন্ত্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, “এই খালের পুরসভা এলাকাভুক্ত অঞ্চলের সংস্কার পুরসভাই করে থাকে। পঞ্চায়েত অংশে খালের দেড় কিলোমিটার সংস্কার করা হবে। কিছুটা নতুন খাল কাটাও হবে।”
|