দক্ষিণ কলকাতা: বেহালা
কোথায় জল
তৃষ্ণা গভীর
মনিতেই জলের চাপ কম। তাই গভীর নলকূপ বসিয়ে বাড়ি বাড়ি জল সরবরাহ করা হচ্ছিল। অভিযোগ, সেই জলেও অত্যধিক লোহা রয়েছে। ফলে জলাধারের তলায় লোহা জমে যাচ্ছে। পাইপের মুখ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। নষ্ট হচ্ছে ফেরুলও। এই অবস্থা কলকাতা পুরসভার ১২৯ ও ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের বিভিন্ন অঞ্চলের।
১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের গোয়ালাপাড়া-বেচারাম চ্যাটার্জি রোড, তেমনই ১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের গোপাল মিশ্র রোড, বি জি প্রেস, সেনপল্লি, নবপল্লি অঞ্চলে সঙ্কট চলছে। বেচারাম চ্যাটার্জি রোডের জয়রামপুর বটতলার গভীর নলকূপের পাম্পটি বেশ কিছু দিন খারাপ। ফলে এই এলাকায় কার্যত জল সরবরাহ হচ্ছে না। পুরসভা জলের গাড়ি পাঠালেও তাতে সমস্যা মিটছে না। বাসিন্দারা জানান, সপ্তাহে এক দিন জলের গাড়ি আসে। ফলে বড় লাইন হয়। বিশেষ করে বয়স্ক মানুষদের খুবই অসুবিধা হচ্ছে।

গোপাল মিশ্র রোডের বাসিন্দা শঙ্কর দাসের কথায়: “সেনপল্লির গভীর নলকূপ চালু হওয়ার পরে যে জল পাচ্ছি তা ব্যবহারের অযোগ্য। খাওয়া তো যায়ই না, ট্যাঙ্কে লাল আস্তরণ পড়ে গিয়েছে। বালতি, বাসনপত্র, জামাকাপড়ে দাগ ধরে যাচ্ছে।” বেচারাম চ্যাটার্জি রোডের বাসিন্দা পাপু ঘোষ বলেন, “আমাদের বাড়ির কল থেকে মাঝেমধ্যে কেঁচোও বের হয়।” স্থানীয় বেলা ঘোষ বললেন, “সরু সুতোর মতো জল পড়ত। সামনে পাম্প বসার পরে সামান্য উন্নতি হয়েছিল। কিন্তু পাম্পটি খারাপ হয়ে যাওয়ায় আর জল নেই। জলের গাড়িতে থেকে জল আনা আমার মতো বয়স্কদের পক্ষে সমস্যার।” বাসিন্দারা জানান, মাটিতে গর্ত করে কল বসালেও জল পাচ্ছেন না তাঁরা।
১২৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সংহিতা দাস বলেন, “গভীর নলকূপের জল গার্ডেনরিচের জলের সঙ্গে মিশিয়ে পাঠানোয় সমস্যা হচ্ছে। সব লাল হয়ে যাচ্ছে। এমনিতেই জলের চাপ কম। তা মেটাতেই ওই গভীর নলকূপগুলি করা হয়েছিল। কিন্তু দেখা যাচ্ছে লোহার জন্য ফেরুলগুলিও অকেজো হয়ে যাচ্ছে। মাঝেমধ্যে পরিষ্কার করা হলেও ক’দিন পরেই যে-কে-সেই। এই ওয়ার্ডের নবপল্লি, গোপাল মিশ্র রোড, বি জি প্রেস অঞ্চলে জলের চাপ খুব কম। জলের গাড়ি পাঠিয়েও সমস্যা মেটাতে পারছি না।”
পাশাপাশি, ১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “১৩০ নম্বর ওয়ার্ডের সর্বত্র জলসঙ্কট। গোয়ালাপাড়া আর বেচারাম চ্যাটার্জি রোডের অবস্থা সামাল দিতে পারছি না।” পুরসভার ১৪ নম্বর বরো-র চেয়ারম্যান মানিক চট্টোপাধ্যায় বলেন, “আগের বোর্ড নিম্নমানের পাইপ, যন্ত্রপাতি দিয়ে গভীর নলকূপগুলি তৈরি করেছিল। পরিস্থিতি তাই ধীরে ধীরে খুবই ঘোরালো হয়ে উঠছে। সেনপল্লিতে একটি বুস্টার পাম্পিং স্টেশন তৈরি হচ্ছে। গার্ডেনরিচের দায়িত্বও পুরসভা নিয়েছে। আশা করছি আগামী বছর এই অঞ্চলের জলের সমস্যা মিটবে।” যদিও এই অভিযোগের উত্তরে প্রাক্তন মেয়র বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য বলেন, “বরোর মাধ্যমেই এই নলকূপগুলি বসানো হত। দায়িত্বে থাকতেন বরো চেয়ারম্যান।”

ছবি: পিন্টু মণ্ডল
Previous Story

Kolkata

Next Story




অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.