|
|
|
|
ঘর সারাতে এসে চুরি করে ধৃত জোগাড়ে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
সিঁড়ি ও মেঝে তৈরির কাজ চলছে, তাই বাড়ির সবাইকে দোতলায় উঠতে বারণ করেছিলেন রাজমিস্ত্রি। কথা মতো বাড়ির লোকেরাও একতলাতেই ছিলেন। সেই সুযোগে ঘরের আলমারির লকার ভেঙে বেশ কয়েক ভরি সোনার গয়না ও নগদ কয়েক হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দেয় মিস্ত্রির জোগাড়ে। এর পরে বেশ কয়েক দিন পালিয়ে বেড়ালেও শেষমেশ শুক্রবার সকালে ডানকুনির ৯ নম্বর রেলগেট এলাকা থেকে পুলিশের জালে ধরা পড়েছে সেই ব্যক্তি। বালি থানার পুলিশ জানায়, ধৃত দেবদাস দে হুগলির বেগমপুরের বাসিন্দা। তার কাছ থেকে চুরি যাওয়া গয়না ও টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, বালির বাদামতলার বাসিন্দা শেখ নজরুল ইসলামের বাড়িতে বেশ কিছু দিন ধরেই মেরামতির কাজ করছিল দেবদাস ও এক জন রাজমিস্ত্রি। গত ২৬ জুলাই বাড়ির দোতলায় বারান্দার মেঝে ও সিঁড়ি মেরামতি চলছিল। মিস্ত্রিরা বাড়ির লোকেদের বলেন, ‘‘সিমেন্ট কাঁচা রয়েছে। তাই আজ আর কেউ সিঁড়ি দিয়ে উঠবেন না।’’ পরদিন থেকে আর কাজে আসেনি দেবদাস। নজরুলের ভাই শেখ মানিক বলেন, “কাজের শেষে বাড়ি যাওয়ার সময়ে দেবদাস বলে, পরদিন স্ত্রীকে আনতে শ্বশুরবাড়ি যাবে। কাজে আসবে না।”
পুলিশ ও ওই পরিবার সূত্রে খবর, পরদিন ২৭ জুলাই সকালে দোতলায় উঠে নজরুলের স্ত্রী দেখেন, ঘরের আলমারির দরজা খোলা। ভিতরে লকারের হাতল বাঁকানো। গয়নার বাক্স খালি। উধাও নগদ ১৫ হাজার টাকার বান্ডিলও। আলমারির সামনে মেরামতির কাজের সময়ে দেবদাসের ব্যবহার করা ছেঁড়া কাপড়টি পড়ে রয়েছে। ওই মহিলার চেঁচামেচিতে দোতলায় ছুটে আসেন বাড়ির অন্যেরা। লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয় বালি থানায়।
দোতলার ঘরে আলমারির লকার ভাঙার শব্দ নীচ থেকে কেউ পেলেন না কেন? নজরুল বলেন, “মেরামতির কাজের জন্য সারা দিনই বাড়িতে ছেনি-হাতুড়ির প্রবল আওয়াজ হচ্ছে। তাই আলমারি ভাঙার আওয়াজ কেউ শুনে থাকলেও কোনও ভাবেই বুঝতে পারেনি আসলে কী ঘটছে।”
প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের অনুমান, বেশ কয়েক দিন ধরেই দোতলার ঘরের আলমারির দিকে নজর রেখেছিল দেবদাস। কারণ, নজরুল পুলিশকে জানিয়েছেন, যে জায়গায় তাঁরা আলমারির চাবি রাখতেন, তা বাইরের কারও পক্ষে সহজে জানা সম্ভব নয়।
কী ভাবে ধরা পড়ল অভিযুক্ত? পুলিশ জানিয়েছে, অভিযোগ পাওয়ার পরে দেখা যায় ঠিকাদার, রাজমিস্ত্রি-সহ বাকি সকলের খোঁজ মিললেও দেবদাস বেপাত্তা। ফলে তাকেই বেশি করে সন্দেহ হয়। অন্য মিস্ত্রিদের থেকে দেবদাসের বাড়ির ঠিকানা জোগাড় করে সেখানে হানা দেয় পুলিশ। কিন্তু অভিযুক্তের খোঁজ মেলেনি। এ দিকে, পুলিশ জানতে পারে স্ত্রীকে ফোন করে রোজই নতুন নতুন ঠিকানায় ডেকে পাঠাচ্ছে ওই ব্যক্তি। তখন প্রতিটি ঠিকানায় তার স্ত্রীর সঙ্গে ঘুরতে থাকে পুলিশও। শেষে এ দিন সকালে ডানকুনি থেকে চুরি যাওয়া মালপত্র-সহ দেবদাসকে গ্রেফতার করা হয়। কয়েক ভরি গয়না আগেই প্রায় এক লক্ষ টাকায় বেচে দিয়েছিল সে। বাকি গয়না এবং নগদ পনেরো হাজার টাকার পাশাপাশি গয়না বিক্রির সেই টাকাও উদ্ধার হয়েছে।
অন্য দিকে, দমদমের অমরপল্লির একটি আবাসনে এক ব্যবসায়ীর ফ্ল্যাট থেকে সোনার গয়না চুরি গিয়েছে বলে অভিযোগ। ওই ব্যবসায়ী পুলিশকে জানান, তাঁর দু’টি ফ্ল্যাটের মধ্যে একটির দরজার চাবি পাওয়া যাচ্ছিল না। সেই চাবি চুরি করেই কেউ এই কাণ্ড ঘটিয়েছে বলে সন্দেহ। |
|
|
|
|
|