মনোরঞ্জন...
অর্পিতা এ বার নাটকে
চেক মেট। যাকে বলে নাটুকে কিস্তিমাত। টলিউডের এক নম্বর সুপারস্টার প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায় যে এ বার নাটক করবেন সে তো জানা কথাই। কিন্তু তাঁর ঘরনি অর্পিতা চট্টোপাধ্যায়ও এ বার মঞ্চে। এই প্রথম বার। অবশ্য দু’টি ভিন্ন প্রযোজনায়। মিল একটাই। দু’টিরই নির্দেশক কৌশিক সেন। কৌশিকের নাট্যদল ‘স্বপ্ন সন্ধানী’র দু’দশক পূর্তি উপলক্ষে চারটে প্রযোজনার দু’টোতে মিয়া এবং বিবি। যথাক্রমে মনোজ মিত্রের ‘অশ্বত্থামা’ এবং জয় গোস্বামীর ‘ঘাসফুলের কবি’তে। সামনের বছর মঞ্চে প্রথম নামবে ‘ঘাসফুলের কবি’। মূল চরিত্র ঘাসফুল নামের এক মেয়ের চরিত্রেই অর্পিতা।
কী ভাবে রাজি করালেন অর্পিতাকে? “প্রথমে ঘাসফুলের চরিত্রে ভেবেছিলাম রেশমিকে (কৌশিকের স্ত্রী)। কিন্তু রেশমি-ই বলল, এই চরিত্রে অর্পিতাকে খুব ভাল মানাবে। বিশেষ করে চেহারার আদলে। আমিও তার পর ভেবে দেখলাম যে ঠিকই। তা ছাড়া, অর্পিতাও আমাকে বলেছিল যে, ও নাটক করতে ইচ্ছুক। তাই ওকেই বাছলাম,” বলছেন কৌশিক।
এক নতুন প্ল্যাটফর্ম পেয়ে অর্পিতাও যারপরনাই উত্তেজিত। তা এই সিদ্ধান্ত কি টলিউডের এক নম্বর সুপারস্টারের ঘরনির হঠাৎই নেওয়া? “না না, নাটক করতে চাইছিলাম অনেক দিন ধরেই। সেই সূত্রে প্রথম সারির নাট্য নির্দেশকদের সঙ্গে কথাও বলছিলাম। তার মধ্যে বাবান (কৌশিক) তো ছিলই। যদিও নানা কারণে সেটা আর হয়ে ওঠেনি। অনেকে এটাও বলেছিলেন, আমার মানসিকতার সঙ্গে মিলবে না,” হাসতে হাসতে বলছেন অর্পিতা। ইচ্ছে যে ভেতরে প্রবল ভাবে ছিল তা বোঝাতেই বলছেন, “আসল কথা হল, ভাল কাজ করব বলেই এই সিদ্ধান্তে আসা। ছবিতে অভিনয় করতে গিয়েই বুঝতে পারতাম যে অনেক কিছু শেখার বাকি রয়ে গেছে। তা ছাড়া, শিল্পের এই মাধ্যমে কোনও দিন অভিনয় করিনি। মানে, হয়ে ওঠেনি। শিল্পের অন্যান্য মাধ্যম, যেমন, নাচ-গান, সবেরই চর্চা হয়। এই ব্যাপারটা নিয়ে কোনও চর্চা হয় না। খালি ভাল ছবি দেখি। যেটা যথেষ্ট নয়। বাবান এটাকে সিরিয়াসলি নেয়,” বলছেন অর্পিতা।
গল্প থেকে নাটক ছেঁচে কী ভাবে এগোবেন? “এখনও খসড়া চলছে,” বলছেন পরিচালক। অর্পিতাও কি কোনও বিশেষ প্রস্তুতি নিচ্ছেন এই চরিত্রটার জন্য? “এখনও কিছুই শুরু করিনি। যেহেতু বাবান এটা করছে, আমি পুরোটাই ওর হাতে ছেড়ে দিয়েছি,” বলছেন নায়িকা। তার মানে কি মঞ্চে প্রথম বার হলেও নাটকে অভিনয়ের কোনও টিপ্স নেননি কর্তার কাছ থেকে? “একদমই না। আসলে আমি যার হাতে পড়ব সেই বাবানই নিজে এ ব্যাপারে এত দক্ষ যে, আমার আর কারও কাছ থেকে টিপ্স নেওয়ার কোনও প্রয়োজনই ছিল না,” বলছেন অর্পিতা। এমনকী কত্তা-গিন্নি দু’জনে একই পরিচালকের সঙ্গে প্রায় একই সময় অভিনয় করাটাকে নেহাত সমাপতনই বলছেন অর্পিতা। “আমার সঙ্গে বুম্বাদার কোনও রকম আলোচনা হয়নি নাটকে অভিনয় করা নিয়ে। আসলে আমিই আগে বাবানের সঙ্গে যোগাযোগ করি নাটক করার ইচ্ছে জানিয়ে। পরে বুম্বাদা নিজের ইচ্ছে জানিয়ে ওর সঙ্গে যোগাযোগ করে,” বলছেন অর্পিতা।
কর্তা প্রসেনজিৎ মার্কিন দেশ থেকে ফিরেই (আপাতত সেখানে অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরীর ‘অপরাজিতা তুমি’র শু্যটিংয়ে ব্যস্ত) ঝালিয়ে নিতে বসবেন নাটকের বিভিন্ন খুঁটিনাটি বিষয়। শুধু তো তাঁর নিজের অভিনয় নয়, ঝালাতে হবে তাঁর চরিত্রের সঙ্গে অন্যান্য চরিত্রের ইকুয়েশনও। হাজার হোক, নাটকে তাঁর ফিরে আসার ইচ্ছে আক্ষরিক রূপ পাবে ‘অশ্বত্থামা’র মাধ্যমেই। “ওঁর নাটকে অভিনয় করার ইচ্ছের কথা, বিশেষ করে এই প্রক্রিয়াতে থাকার ইচ্ছের কথা আমি জানতাম। টিকিট কেটে ‘বীরপুরুষ’ দেখতেও এসেছিলেন। জুন মাসের মাঝামাঝি আমি বুম্বাদাকে এসএমএস করি মঞ্চে অভিনয় করার ব্যাপারে। উনি তখন হায়দরাবাদে ছিলেন। আমায় জিজ্ঞেস করেছিলেন, কী ধরনের চরিত্রে আমি ওঁকে ভাবছি। বলেছিলাম, একটা শক্ত, জটিল চরিত্রে অভিনয় করতে। নাটক এবং চরিত্র (অশ্বত্থামা) শুনে ওঁর খুব পছন্দ হয়েছে। যেহেতু উনি অত্যন্ত মেথডিক্যাল, বিদেশে থাকার দরুন উনি ই-মেল-এ ওঁর সমস্ত রুটিন পাঠাবেন আমাকে। ফেরার পর আমরা মুখোমুখি বসব নাটকের স্ক্রিপ্ট নিয়ে। তার পর সবাইকে নিয়ে মহড়া শুরু করব। নভেম্বরের শেষে একটি নাটকের বড় ফেস্টিভ্যালে প্রথম মঞ্চ নেবে ‘অশ্বত্থামা’। বুম্বাদার উল্টো দিকে আছেন সুরজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় (কৃপাচার্য), সিদ্ধার্থ বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সুশান্ত বসু (কৃতবর্মা)।
কিন্তু একটি নাটকে নামা মানেই নানা জায়গায় অজস্র শো-এর প্রশ্ন আসে। সেই সময় কি প্রসেনজিৎ বার করতে পারবেন? “বুম্বাদাকে নিয়েছি মানেই যে অঢেল শো করব তা নয়। এ ক্ষেত্রে খুব বাছা বাছা গুরুত্বপূর্ণ শো-ই হাতে নেব। শুধুমাত্র তাঁর স্টারডমকে ব্যবহার করবার জন্য এই নাটক করছি না। তাঁর ভেতরের অভিনয়ের বীজটাকেও বের করে আনতেই করছি,” বলছেন কৌশিক।
আরও আছে। আগামিকাল নামছে কৌশিকের আরেক নাটক ‘সেই সুমৌলি’। যার শেষে আছে ‘রঞ্জনা আমি আর আসব না’র হিট গান, ‘আমি বৃষ্টি দেখেছি’। নাটকে গেয়েছেন অঞ্জন দত্ত নিজে। যদিও ছবির থেকে নাটকের পরিবেশনায় একেবারে অন্য ভাবে ব্যবহার হয়েছে গানটি। “ছবির মতো করে এই গানটা নাটকে মিশছিল না। এখানে শহরের বিভিন্ন শব্দের সঙ্গে, যেমন রাস্তার নানা শব্দ, সাইকেল, ট্রাম, ইত্যাদির সঙ্গে গানটাকে ব্যবহার করা হয়েছে। অঞ্জনদাকে বলেছিলাম, ছবির মতো এত টাকা তো তোমায় দিতে পারব না। কিন্তু আমার সৌভাগ্য যে, অঞ্জনদা বিনা পারিশ্রমিকেই গানটা গেয়ে দিয়েছেন,” বলছেন কৌশিক।
Previous Item Patrika Next Item


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.