ফের খরার ভ্রূকুটি বিহারে। গত দু’বছর অনাবৃষ্টির কারণে বিহারের অধিকাংশ জেলাতেই খরা পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। এ বছর এখনও পর্যন্ত খরা পরিস্থিতি পুরোপুরি সৃষ্টি হয়েছে, এমনটা বলার সময় এখনও আসেনি। কিন্তু এ বছর বিহারে এখনও পর্যন্ত যা বৃষ্টিপাত হয়েছে, তাতে ইতিমধ্যেই রাজ্যের ৩৮ জেলার মধ্যে ২৩টি জেলায় খরার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। রাজ্যের কৃষি দফতর সূত্রে বলা হচ্ছে, উত্তর বিহারে এখনও পর্যন্ত বৃষ্টির পরিস্থিতি মন্দের ভাল। দক্ষিণ বিহারে পরিস্থিতি খুবই খারাপ। তবে কৃষি দফতরের আশা, অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে এই পরিস্থিতির উন্নতি হতে পারে।
দেশের আবহাওয়া দফতরের হিসেব অনুযায়ী, ২৭ জুলাই পর্যন্ত এই ২৩টি জেলায় গড় বৃষ্টিপাতের চেয়ে ২০ শতাংশ কম বর্ষণ হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে কম বৃষ্টি হয়েছে মুঙ্গেরে। যা গড় বৃষ্টিপাতের তুলনায় ৮৩ শতাংশ কম। তার পরে তালিকায় রয়েছে বাঁকা,
ভোজপুর এবং নওয়াদা। এই তিন জেলায় ৪০ শতাংশেরও কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। এ ছাড়া বাকি যে জেলাগুলি এই তালিকায় রয়েছে সেগুলি হল: মধুবনি, লখিসরাই, জামুই, ঔরঙ্গাবাদ, ভভুয়া, কাটিহার, খগড়িয়া, মাধেপুরা, পটনা, রোহতাস, সহর্ষ, সমস্তিপুর, শেখপুরা, শিওহর, সীতামঢ়ী, সিওয়ান, সুপোল, বৈশালী এবং পশ্চিম চম্পারণ।
তবে অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যে পরস্থিতি যাই-ই হোক না কেন, এখন থেকেই রাজ্য সরকারের কৃষি দফতর এবং বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর এ নিয়ে প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সেরে রাখতে চাইছে। রাজ্যের বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের প্রধান সচিব ব্যাসজি জানিয়েছেন: কৃষি দফতরকে ইতিমধ্যেই জেলায় জেলায় প্রতি দিন বৃষ্টির হিসেব রাখতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে সেচ দফতরকে বিভিন্ন জেলায় নলকূপ ঠিকঠাক আছে কি না তা পরীক্ষা করতে বলে দেওয়া হয়েছে। ব্যাসজি জানিয়েছেন, গত বছরে খরা আক্রান্ত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কাজ এখনও শেষ হয়নি। অগস্টের দ্বিতীয় সপ্তাহের মধ্যেই যাতে সেই কাজ হয়ে যায়, তার জন্য জেলাগুলিকে প্রয়োজনীয় নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আবহাওয়া দফতর অবশ্য বিহার থেকে খরার প্রকোপ কেটে যাওয়ার বিষয়ে যথেষ্ট আশাবাদী। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, মৌসুমী বায়ুর প্রকোপ ক্রমশ উত্তর দিকে সরছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী দু’এক সপ্তাহের মধ্যে বিহারে ভালই বৃষ্টিপাত হবে। উল্লেখ্য, গত দু’দিনে ভাগলপুর, পূর্ণিয়া, মুজফ্ফরপুর, দ্বারভাঙ্গা এবং পূর্ব চম্পারণে ভাল বৃষ্টি হয়েছে। এর ফলে, ওই সব জেলায় পরিস্থিতির কিছুটা হলেও উন্নতি হয়েছে। এখন আগামী দু’সপ্তাহে বাকি রাজ্যেও পরিস্থিতির উন্নতি হয় কি না, সেটাই দেখার। |