মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফার সিদ্ধান্ত নিতেই হয়েছে। তার মধ্যেই কর্নাটকে অবৈধ খনন নিয়ে আরও চাপে পড়লেন ইয়েদুরাপ্পা। কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির সুপারিশ মেনে কর্নাটকের বল্লারিতে ১০৮৬৮ হেক্টর বিস্তৃত বিতর্কিত আকরিক লোহা খনির সব রকম কাজকর্ম আপাতত বন্ধ রাখার নির্দেশ দিল শীর্ষ আদালত। শুক্রবার প্রধান বিচারপতি এস এইচ কাপডিয়ার নেতৃত্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের একটি বিশেষ বেঞ্চ জানিয়েছে, উপযুক্ত পরিকাঠামো ছাড়াই খনন এবং এলাকায় লাগামছাড়া পরিবেশ দূষণের অভিযোগ ওঠায় বল্লারি নিয়ে এই সিদ্ধান্ত। কর্নাটকের আরও কোনও খনি এলাকা সম্পর্কে একই রিপোর্ট মিললে সেখানেও কাজ বন্ধ করে দেওয়া হবে বলে জানিয়েছে শীর্ষ আদালত।
লোকায়ুক্ত বিচারপতি সন্তোষ হেগড়ের পেশ করা সাম্প্রতিক রিপোর্টে ইতিমধ্যেই কর্নাটকে অবৈধ খননের রমরমার জন্য মুখ্যমন্ত্রী ইয়েদুরাপ্পাকে দায়ী করা হয়েছে। ৯৪৩ পাতার রিপোর্টে হেগড়ের দাবি, অবৈধ খননের জেরে ২০০৬ থেকে চার বছরে রাজ্য সরকারের কয়েক হাজার কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। আর তার রাস্তা করে দেওয়ার জন্য অবৈধ খননে জড়িত কয়েকটি সংস্থা মোটা অঙ্কের ঘুষ দিয়েছে ইয়েদুরাপ্পার পরিবারকে। ইয়েদুরাপ্পা এই অভিযোগ উড়িয়ে দিলেও দলের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি রক্ষায় তাঁকে ইস্তফা দিতে বলেছেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। এই পরিস্থিতিতে বল্লারির অবৈধ খনন নিয়ে শীর্ষ আদালতের সিদ্ধান্ত রাজ্য ও কেন্দ্রীয় রাজনীতিতে ইয়েদুরাপ্পাকে আরও কিছুটা বেকায়দায় ফেলল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল। এ দিন সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে, বল্লারিতে অবৈধ খননের জেরে ওই জঙ্গল এলাকায় পরিবেশ মাত্রাতিরিক্ত হারে দূষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এমনকী, বল্লারিতে দূষণ সমস্যার কথা জেনেও মুষ্টিমেয়র স্বার্থরক্ষায় তা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা হয়নি। তাই পরবর্তী কোনও নির্দেশ না-দেওয়া পর্যন্ত সেখানকার কাজ বন্ধ রাখতে বলা হচ্ছে। একই সঙ্গে, দেশের মোট আকরিক লোহার চাহিদা কত, এবং সেই চাহিদার কত শতাংশ বল্লারি থেকে পূরণ হয়, সেই নিয়ে একটি অন্তর্বর্তী তদন্ত রিপোর্টও কেন্দ্রীয় বন ও পরিবেশ মন্ত্রকে জমা দিতে বলা হয়েছে। শীর্ষ আদালতের বিচারপতিরা জানান, কর্নাটকের টুমকুর এবং চিত্রদুর্গতেও অবৈধ খনন এবং তার জেরে পরিবেশ দূষণের অভিযোগ মিলেছে। কেন্দ্রীয় বিশেষজ্ঞ কমিটির রিপোর্ট পেলে বল্লারির মতো ওই দুটি খনির ক্ষেত্রেও প্রয়োজনে কড়া পদক্ষেপকরা হতে পারে। |