রবিবার মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার আগে নিজের হাতে কর্নাটকের নিয়ন্ত্রণ সুনিশ্চিত করতে চান ইয়েদুরাপ্পা।
আর সে কারণেই আজ কর্নাটকের নতুন মুখ্যমন্ত্রী স্থির করতে দিল্লি থেকে উড়ে যাওয়া অরুণ জেটলি, রাজনাথ সিংহদের সামনে আজ শক্তি প্রদর্শন করেন তিনি। ইয়েদুরাপ্পার সমর্থনে প্রায় সত্তরের বেশি বিধায়ক ও ১৪ জন সাংসদ আজ বেঙ্গালুরুতে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্ব আশাবাদী, ইয়েদুরাপ্পার পছন্দ মতো সুরেশ কুমার, সদানন্দ গৌড়া ও ভি এস আচারিয়ার মধ্যেই কাউকে নতুন মুখ্যমন্ত্রী পদে বেছে নেওয়া সম্ভব হবে। এঁরা তিন জনই সঙ্ঘের ঘনিষ্ঠ। গত কাল আরএসএস নেতৃত্বকেও ইয়েদুরাপ্পা জানিয়েছেন, সঙ্ঘ-ঘনিষ্ঠ কাউকে মুখ্যমন্ত্রী করা হলে তাঁর আপত্তি নেই। ইয়েদুরাপ্পার ঘনিষ্ঠ মন্ত্রী শোভা করন্ড লাজের নাম নিয়েও আলোচনা চলছে। ইয়েদুরাপ্পার দাবি মেনে তাঁর ঘোর বিরোধী অনন্ত কুমার, জগদীশ শেট্টার ও ইশ্বরাপ্পাকে মুখ্যমন্ত্রী করার সম্ভাবনা বাতিল করে দিয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। এরই সঙ্গে শোভা অথবা মুরুগেশ নিরানির মতো কাউকে উপমুখ্যমন্ত্রী করার জন্যও চাপ দিচ্ছেন ইয়েদুরাপ্পা।
বিজেপি-র এক সূত্রের মতে, ইয়েদুরাপ্পাকে রাজ্যের সভাপতি পদের দায়িত্ব দেওয়া নিয়েও দাবি উঠেছিল। কিন্তু সেই প্রস্তাব না মানার ব্যাপারেই ঝুঁকে রয়েছেন বিজেপি নেতৃত্ব। দিল্লি থেকে পর্যবেক্ষক হিসেবে যাওয়া বিজেপি-র কেন্দ্রীয় নেতাদের এখন প্রাথমিক কাজ হল, ইয়েদুরাপ্পা ও তাঁর সমর্থনকারীদের ক্ষোভ প্রশমণ করা। ইয়েদুরাপ্পার মত নিয়েই নেতৃত্ব বদলের কাজ মসৃণ করা। আজ রাতে না হলেও আগামিকাল কিংবা রবিবারের মধ্যে এই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করে ফেলতে চাইছেন বিজেপি নেতৃত্ব। কারণ, সোমবার থেকে সংসদের অধিবেশনে প্রধানমন্ত্রী ও চিদম্বরমের দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরব হতে চাইছেন তাঁরা। তার আগে কর্নাটকের কাঁটা সরাতে তাঁরা তৎপর। কিন্তু বিজেপি নেতৃত্বকে এখন এক সঙ্গে অনেক দিক সামলাতে হচ্ছে। আজই সুপ্রিম কোর্টের গ্রিন বেঞ্চ বেল্লারীতে বেআইনি খনির কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দিয়েছে। ইয়েদুরাপ্পার কথা মেনে এমন কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হলে যদি ফের কেন্দ্রের বিজেপি নেতৃত্বকেও খেসারত দিতে হয়, সেটি উদ্বেগের বিষয়। তার উপর যাঁকেই এই পদে বসানো হোক, তাঁর প্রশাসনিক ক্ষমতা যদি দুর্বল হয় ও রিমোট কন্ট্রোল যদি ইয়েদুরাপ্পার হাতেই থাকে, তারও একটি বিপদের দিক আছে। আবার ইয়েদুরাপ্পার সমর্থনে আজ যে সত্তরের বেশি বিধায়ক কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন, তার মধ্যে অর্ধেকও যদি আসল সমর্থক হন, সে ক্ষেত্রে ইয়েদুরাপ্পাকে বাদ দিয়েও কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে না। জেটলি, রাজনাথের আগেই বেঙ্কাইয়া নাইডু, ধর্মেন্দ্র প্রধান, অনন্ত কুমারের মতো বিজেপির শীর্ষ নেতারা বেঙ্গালুরুতে ঘাঁটি গেড়েছেন। বিধায়ক, সাংসদদের সঙ্গে পৃথক ভাবে বসে তাঁরা নতুন নেতা বাছাইয়ের চেষ্টা করছেন। ইয়েদুরাপ্পা নিজে লিঙ্গায়েত নেতা। অন্য কোনও লিঙ্গায়েত নেতা মুখ্যমন্ত্রী হয়ে প্রভাবশালী হয়ে ওঠেন, সেটিও চান না তিনি। তাই লিঙ্গায়েত ভিন্ন অন্য নেতাকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বেশি আগ্রহী ইয়েদুরাপ্পা। যে তিন জন মুখ্যমন্ত্রীর দৌঁড়ে এগিয়ে রয়েছেন, তাঁরা কেউই লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ভুক্ত নন। |