ঝাড়খণ্ডে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হল কোবরা বাহিনীকে। পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী-বিরোধী অভিযান কার্যত বন্ধ থাকায় পশ্চিম মেদিনীপুর থেকে সক্রিয় কোবরা বাহিনীর সাতটি দলকে ঝাড়খণ্ডে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঝাড়খণ্ডে যৌথ বাহিনীর অভিযান আরও জোরালো হবে বলে আশা প্রকাশ করেও কিছুটা দুশ্চিন্তায় এ রাজ্যের পুলিশ কর্তারা। পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী-দমন অভিযানে ভাটা পড়লে পড়শি রাজ্য ঝাড়খণ্ডে তার উল্টো-প্রভাব নিয়ে চিন্তিত ঝাড়খণ্ড প্রশাসন।
ঝাড়খণ্ডে তাড়া খেয়ে পশ্চিমবঙ্গের তুলনামূলক ‘নিরাপদ’ আশ্রয়ে মাওবাদীদের গা-ঢাকা দেওয়ার আশঙ্কা ঝাড়খণ্ড পুলিশকে তাড়া করতে শুরু করেছে। রাজ্য পুলিশের ডিজি গৌরীশঙ্কর রথের কথায়, “একা কোনও রাজ্যের পক্ষে মাওবাদী-সমস্যা সমাধান করে ফেলা সম্ভব হবে না। প্রতিবেশী রাজ্যগুলির একযোগে তৎপরতা দরকার। ঝাড়খণ্ড থেকে পালিয়ে অন্য রাজ্যে জঙ্গিরা আশ্রয় নিলে মাওবাদী দমন-অভিযান সব মিলিয়ে ধাক্কা খাবে।” |
জঙ্গলমহল লাগোয়া পশ্চিম সিংভূম জেলার এসএসপি অখিলেশ কুমার ঝা প্রতিবেশী রাজ্যে জঙ্গিদের আশ্রয় নেওয়ার প্রসঙ্গে মুখ খুলতে চাননি। তিনি বলেন, “স্পর্শকাতর বিষয়। কিছু বলব না।” তবে সাধারণ ভাবে পশ্চিমবঙ্গ থেকে ঝাড়খণ্ড বা ঝাড়খণ্ড থেকে পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী জঙ্গিদের আসা-যাওয়ার ঘটনা আকছারই ঘটে থাকে। পশ্চিমবঙ্গে জঙ্গিদের ‘আশ্রয়’ নেওয়ার ঘটনা বাড়ছে বলে দাবি করছেন পূর্ব সিংভূম জেলার পুলিশকর্তাদের অনেকেই। রাজ্য পুলিশের অন্য এক কর্তার কথায়, “অতীতে পশ্চিমবঙ্গের বামফ্রন্ট সরকারও মাওবাদীদের বিপদ বুঝতে দেরি করেছিল। ওই সময়ে ঝাড়খণ্ডে মাওবাদীদের ঠেকাতে পুলিশকে রীতিমতো ভুগতে হয়েছে। অনেক পরে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের টনক নড়ে। এখন বর্তমান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ফের জঙ্গিদের সঙ্গে কথা বলার রাস্তায় হাঁটতে চাইলে মাওবাদীরা এই ‘ঢিলেমি’-র সুযোগ নিতে পারে। পশ্চিমবঙ্গে অভিযান বন্ধ থাকলে স্বাভাবিক ভাবেই এ রাজ্যে অপরাধ করে জঙ্গিরা পশ্চিমবঙ্গেই আশ্রয় নেবে।”
দুর্গাপুর থেকে কোবরা বাহিনীর ২০৭ নম্বর ব্যাটালিয়নের সাতটি দল বা গ্রুপকে ঝাড়খণ্ডের বোকারোয় পাঠানো হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে অপারেশন বন্ধ থাকার দরুণ সিআরপির ডিজি কে বিজয় কুমারও দিল্লির বৈঠকে চেয়েছিলেন, পশ্চিমবঙ্গে সিআরপি-র একাংশকে ঝাড়খণ্ডে পাঠানো হোক। ঝাড়খণ্ড পুলিশও বাড়তি বাহিনীর বিষয়ে আগ্রহী ছিল। সেই চাহিদা মিটলেও পশ্চিমবঙ্গে মাওবাদী অভিযানের ভবিষ্যৎ ঝাড়খণ্ডকেও উদ্বেগে রাখছে। |