|
|
|
|
ফ্ল্যাটে ডাকাতিতে ধরা পড়েনি কেউ |
|
দেড় বছরেও নিরাপত্তা-রিপোর্ট
নেই, ক্ষুব্ধ কোর্ট
নিজস্ব সংবাদদাতা |
|
বিগত বাম আমলেই কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্য সরকারের কাছে জানতে চেয়েছিল, সাধারণ মানুষের নিরাপত্তায় তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছে। উল্টোডাঙার বিধান নিবাসে বুধবারের ডাকাতি ও বৃদ্ধার মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে শুক্রবার ফের রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল। সাত দিনের মধ্যে এই ব্যাপারে সরকারি রিপোর্ট তলব করেছে হাইকোর্ট।
রাজ্যের মানুষের নিরাপত্তা নিয়ে হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। এ দিন প্রধান বিচারপতি জয়নারায়ণ পটেল এবং বিচারপতি অসীম রায়ের ডিভিশন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানির সময় বিধান নিবাসের ফ্ল্যাটে দিনেদুপুরে ডাকাতির প্রসঙ্গ ওঠে। আবেদনকারী আইনজীবী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের আর্জির ভিত্তিতে হাইকোর্ট দেড় বছর আগে রাজ্যের তৎকালীন বাম সরকারকে নির্দেশ দিয়েছিল, তারা মানুষের নিরাপত্তা রক্ষায় কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে, অবিলম্বে সেটা আদালতে জানাতে হবে। কিন্তু তখনকার সরকার সেই রিপোর্ট পেশ করতে পারেনি। সরকার পরিবর্তন হয়েছে। হাইকোর্ট এখনও সেই রিপোর্ট পায়নি। রিপোর্ট পেশ নিয়ে এই গড়িমসিতে উষ্মা প্রকাশ করে ডিভিশন বেঞ্চ। প্রধান বিচারপতি মন্তব্য করেন, ‘এই তো কয়েক দিন আগে উল্টোডাঙায় একটি আবাসনে ডাকাতি ও মৃত্যুর ঘটনা ঘটে গেল।’
আইনজীবী সুব্রতবাবু বলেন, রাজ্যে মানুষের নিরাপত্তা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে, উল্টোডাঙার বিধান নিবাসের ঘটনাই সেটা বুঝিয়ে দিয়েছে। এর আগেও কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন বহুতলে খুন ও ডাকাতি হয়েছে। মার্কিন তথ্যকেন্দ্রও আক্রান্ত হয়। মুম্বইয়ের সাম্প্রতিক বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত জঙ্গিদের কেউ কেউ কলকাতায় ছিল বলেও শোনা গিয়েছে। অথচ সরকার রাজ্যের মানুষের জন্য, স্কুলপড়ুয়াদের জন্য এবং বিভিন্ন শপিং মলে, মন্দিরে নিরাপত্তার কী ব্যবস্থা করেছে, দেড় বছরেও তা জানাতে পারল না।
রাজ্য সরকারের পক্ষে জিপি অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এই সরকার শিশু সরকার। সব দিক বুঝে উঠতে তাদের কিছুটা সময় লাগছে। কিন্তু রাজ্য সরকারকে আর সময় দিতে রাজি হয়নি ডিভিশন বেঞ্চ। তারা রাজ্য সরকারকে সাত দিনের মধ্যে রিপোর্ট পেশ করার নির্দেশ দেয়। রাজ্যে কত মানুষ-পিছু কত পুলিশকর্মী মোতায়েন রয়েছে, রিপোর্টে তা জানাতে হবে। বিভিন্ন সরকারি ভবন, শপিং মল, প্রকাশ্য স্থানে মানুষের নিরাপত্তার ব্যবস্থা কতটা, অতিরিক্ত পুলিশ নেওয়ার জন্য কী প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে, এর জন্য মঞ্জুর করা অর্থের পরিমাণ কত জানাতে হবে তা-ও। সেই সঙ্গেই রিপোর্টে সরকারকে জানাতে হবে, কত দিনের মধ্যে তারা পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী নিয়োগ করে মানুষের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে পারবে।
এ দিকে, বিধান নিবাসে ডাকাতির ঘটনায় মৃত বৃদ্ধার পুত্রবধূ শুভলক্ষ্মী ভট্টাচার্য ও পরিচারিকা বীণা গঙ্গোপাধ্যায়ের দেওয়া বিবরণ অনুযায়ী দুষ্কৃতীদের ছবি আঁকাচ্ছে পুলিশ। ওই দু’জন ছাড়া আর কেউ দুষ্কৃতীদের চেহারা দেখেননি বলেই মনে করছে পুলিশ। শুভলক্ষ্মীদেবীদের ফ্ল্যাটে ডাকাতি শেষ করে দুষ্কৃতীরা পাশের ফ্ল্যাটেও ঢুকবে বলে তাঁকে জানিয়েছিল। তাই বারান্দায় বেরিয়ে তিনি চিৎকার না-করে শুধু গাড়ির চালককে ডেকেছিলেন বলে পুলিশকে জানান শুভলক্ষ্মীদেবী। সেই কারণেই শুভলক্ষ্মীদেবী ও বীণাদেবী ছাড়া আর কেউ দুষ্কৃতীদের দেখেননি বলে জানিয়েছে পুলিশ। এই ডাকাতির ঘটনায় শুক্রবার রাত পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি। তবে রং-মিস্ত্রিদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এই ঘটনায় কারা জড়িত, জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। |
|
|
|
|
|