|
|
|
|
হাসপাতালের হাল দেখে উদ্বেগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নবদ্বীপ |
সদর হাসপাতালে ঢুকে আঁতকে উঠেছিলেন রাজ্য সরকারের প্রতিনিধি দলের সদস্যেরা। বারান্দার মেঝেয় সদ্যোজাতদের নিয়ে সার দিয়ে শুয়ে আছেন মায়েরা। প্রতিনিধিদের এক জন বলে ওঠেন, “এটা হাসপাতাল না রেল স্টেশন!”
সরকারি হাসপাতালের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুটিয়ে দেখতে ‘স্টেট সাপোর্ট টিম ফর দ্য ইমপ্রুভিং কোয়ালিটি এন্ড কোয়ালিটি অফ হেল্থ সার্ভিস’ নামে ১১টি দল তৈরি হয়েছে। এমনই একটি দলের সদস্য হলেন সত্যপ্রিয় ভট্টাচার্য এবং শুভজিৎ চট্টোপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার তাঁরা কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতাল ঘুরে দেখেন। সত্যপ্রিয়বাবু বলেন, “আমাদের উপর নদিয়ার চারটি হাসপাতাল ঘুরে দেখার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এ দিন কৃষ্ণনগর হাসপাতালে গিয়েছিলাম।” এ দিন ঘণ্টা খানেক ধরে গোটা হাসপাতালে ঘুরে বিভিন্ন বিষয় খুটিয়ে দেখেন তিনি। নোংরা, অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে সদ্যজাত এবং তাদের মায়েদের অবস্থা দেখে তাঁর প্রতিক্রিয়া, “এটা হাসপাতাল হতে পারে না। এটা একটা বিশৃঙ্খল রেলস্টেশন।” কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে শয্যাসংখ্যা ৯৫। অথচ প্রসূতি ভর্তি আছেন অন্তত তিনশো। ফলে প্রসূতি এবং মায়েদের অনেকেই সদ্যজাত শিশুকে নিয়ে ওয়ার্ডের মেঝেয় থাকতে বাধ্য হন। সত্যপ্রিয়বাবুর কথায়, “হাসপাতালটি প্রধানত প্রসূতিদের জন্য। কিন্তু এখানের লেবার রুমে কোনও শিশু জন্মাতে পারে না। সেই পরিবেশই নেই। গোটা হাসপাতাল যেন আস্ত একটা নরক। কি ভাবে এতদিন ধরে জেলা সদরের একটা হাসপাতাল চলছে!” হাসপাতালের অব্যবস্থা দেখে তিনি স্তম্ভিত। সত্যপ্রিয়বাবু জানান, জরুরি বিভাগের অবস্থা খুব খারাপ। প্যাথোলজি, ইউএসজি বন্ধ। আউটডোর মোটামুটি চলছে। প্রথাবিরুদ্ধ ভাবে এখানে রান্নাঘরে গ্যাস ব্যবহার না করে কয়লায় রান্না হচ্ছে। রান্নার মানও ভাল নয়। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা নিয়ে কিছুই বলার নেই। পরিবেশ অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। শক্তিনগর জেলা এবং সদর হাসপাতাল মিলিয়ে ১১০ কর্মী থাকার কথা। সেখানে আছে ১৪৪ জন। তারপরও গোটা হাসপাতাল নোংরা।
তিনি বলেন, “সবচেয়ে আশ্চর্যের বিষয়, সপ্তাহে কমপক্ষে দু’দিন রোগীদের মাংস খাওয়াতে হবে। অন্য দিন মাছ। কিন্তু নিজেদের সুবিধার জন্য মাংস দেওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সব দেখলাম। কি ভাবে রোগীর চাপ কমিয়ে প্রসূতিদের ভাল পরিষেবা দেওয়া যায়, তাঁদের যাতে মেঝেয় শুতে দেওয়া না হয় তার জন্য সুপারিশ করব।” |
|
|
|
|
|