|
|
|
|
দাতব্য চিকিৎসাকেন্দ্রের জমিতে হাসপাতালের আর্জি |
অনির্বাণ রায় • জলপাইগুড়ি |
বহু গুণীজনের স্মৃতি বিজড়িত জলপাইগুড়ির একটি বেসরকারি দাতব্য চিকিৎসাকেন্দ্রের জমিতে পার্ক কিংবা বাণিজ্যিক ভবন তৈরির তোড়জোড় চলছে। এমন খবর চাউর হতেই ওই জমিতে বড় মাপের কোনও হাসপাতাল তৈরির আর্জি জানিয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী গৌতম দেবের দ্বারস্থ হয়েছেন জলপাইগুড়ির বিশিষ্টজনেরা। মূলত যাঁর উদ্যোগে পঞ্চাশের দশকে ওই হাসপাতালটি জলপাইগুড়ির ডাঙ্গাপাড়ায় প্রায় ৩০ বিঘা জমির উপরে গড়ে ওঠে, সেই প্রয়াত স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ সুধীরচন্দ্র বসুর পরিবারের তরফেও গৌতমবাবুর মাধ্যমে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়েছে।
সুধীরবাবুর দুই ছেলে শেখরবাবু ও প্রদীপবাবু একই সুরে বলেছেন, “ওই জমির মালিকানাতে আমরা আগ্রহী নই। আমরা শুধু চাই যে মহৎ উদ্দেশ্য নিয়ে বাবা এবং শহরের তৎকলানী বিশিষ্টজনেরা অছি গঠন করে জমি কিনে চিকিৎসাকেন্দ্র তৈরি করেছিলেন, সেখানে হাসপাতাল বা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কোনও কাজকর্ম যেন হয়। তা হলেই শহর তথা জেলার দুঃস্থ বাসিন্দারা উপকৃত হবেন।” এই ব্যাপারে বৃহস্পতিবার উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবু বলেছেন, “ওই দাতব্য চিকিৎসালয়টি বিধানচন্দ্র রায়-সহ বহু বিশিষ্টজনের স্মৃতিবিজড়িত। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীকেও সব জানিয়েছি। ওখানে হাসপাতালই হবে। তিনি উত্তরবঙ্গের স্থায়ী স্বাস্থ্য পরিকাঠামো তৈরি করতে চান। যাতে আগামী ৫০ বছর পরিষেবার কোনও সমস্যা না-হয়। জলপাইগুড়ির ডাঙাপাড়ায় ওই চিকিৎসাকেন্দ্রের জমিতে হাসপাতালের স্থায়ী ভবন গড়ে তোলা যেতে পারে। জেলাশাসককে খোঁজ নিয়ে রিপোর্ট দিতে বলেছি।”
সম্প্রতি পুরসভা ওই ডাঙ্গাপাড়ার জমিতে থাকা একটি পুকুরকে ঘিরে সৌন্দর্যায়নের কাজে নামে। জীর্ণ হয়ে পড়া হাসপাতালের ভবনের কিছুটা ভেঙে দেওয়া হয়। পুরসভা সূত্রের খবর, ওই জমিতে পার্ক ও বাণিজ্যিক কেন্দ্র গড়ার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা শুরু হয়। কিন্তু সেখানে হাসপাতাল ছাড়া অন্য কিছু করা ঠিক হবে না বলে শহরের বিশিষ্টজনেরা আপত্তি তোলেন।
একদা ওই হাসপাতালের উদ্বোধন করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের তৎকালীন প্রথম রাজ্যপাল কৈলাশনাথ কাটজু। চালু হয়েছিল বহির্বিভাগ ও ১০ শয্যার অন্তর্বিভাগ। মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন একাধিকবার বিধানচন্দ্র রায় সেখানে যান। সুধীরবাবু প্রয়াত হতেই হাসপাতালটি সঙ্কটে পড়ে। তৎকালীন স্বাস্থ্যমন্ত্রী অজিত পাঁজা সদর হাসপাতাল থেকে একজন চিকিৎসককে সপ্তাহে একদিন পাঠিয়ে পরিষেবা চালু রেখেছিলেন। সত্তরের দশকে রাজ্যে সরকার বদল হতেই হাসপাতাল ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে যায়।
জলপাইগুড়ি পুরসভার চেয়ারম্যান মোহন বসু বলেন, “আমরাও চাইছি ওখানে হাসপাতালই হোক। দীর্ঘদিন ধরে এলাকাটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়েছিল। নানারকম অসামাজিক কাজকর্মের কেন্দ্রস্থল হয়ে ওঠে এলাকাটি। সে কারণেই সংস্কারে উদ্যোগী হয়েছে পুরসভা। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতমবাবুর সঙ্গেও আলোচনা হয়েছে। প্রাক্তন পুর চেয়ারম্যান তথা বিখ্যাত চিকিৎসক সুধীর বসুর স্মৃতি রক্ষা করতে আমরাও তৎপর। ওঁর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার আলোচনা করব।” |
|
|
|
|
|