|
|
|
|
অভিযুক্ত আর জি কর |
প্রসূতির আত্মীয়কে মারধরে অভিযুক্ত চিকিৎসক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কৃষ্ণনগর |
ভোর রাতে সন্তান প্রসবের পরে হাসপাতাল থেকে বাড়ির লোকেদের বলা হয়েছিল, ‘পরিষ্কার কাপড় দিয়ে যান।’ সেই কাপড় নিয়েই হাসপাতালে গেটে এসে থমকে যেতে হয়েছিল সালমা বিবির বাড়ির লোককে। গেটে কর্মীদের সঙ্গে তা নিয়েই খানিক কাটাকাটি। কিন্তু তার জেরে বেলায় ওই প্রসূতির শাশুড়িকে ডেকে খোদ চিকিৎসক যে সপাটে চড় কষিয়ে দেবেন তা কেউই ভাবতে পারেননি।
কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের ওই স্ত্রী রোগ বিশেষজ্ঞ অমিতাভ চৌধুরীর বিরুদ্ধে থানায় এমনই অভিযোগ দায়ের করা হলেও অভিজিৎবাবু অবশ্য ঘটনাটি মানতেই চাননি। তিনি স্পষ্ট বলছেন, “এ তো ষড়যন্ত্র। ওই মহিলাকে আমি চিনিই না। হঠাৎ চড়ই বা মারতে যাব কেন!” হাসপাতালের সুপার কাজল মণ্ডল বলেন, “ওই চিকিৎসকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য কোতোয়ালি থানার পুলিশকে জানানোও হয়েছে।”
তবে প্রসূতির বাড়ির লোকের গায়ে হাত তুলুন চাই না-তুলুন বিতর্কের ‘ভূত’ কিন্তু কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের পিছু ছাড়ছে না। ‘অন্তঃসত্ত্বা’ মহিলার পেট কেটে মিলল ‘গ্যাস’, হাসপাতালের শৌচাগারের সামনে ফেলে রাখা হল মরণাপন্ন রোগীকে কিংবা রোগীর বাড়ির লোকের গালে চড়---অবহেলা এবং অমানবিকতার একের পর এক ঘটনা সদর হাসপাতালের নামের সঙ্গে সমার্থক হয়ে গিয়েছে যেন! |
|
হাসপাতালে সোনা বিবি। |
নবদ্বীপের ফকিরতলা গ্রামের বাগানিপাড়ার বাসিন্দা সালমা বিবি প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে বুধবার রাত দুটো নাগাদ ওই চিকিৎসকের অধীনে ভর্তি হয়েছিলেন। বৃহস্পতিবার ভোরে তাঁর প্রসব হয়। তার পরেই ওই রোগীনীর শাশুড়ি সোনাবিবিকে পরিষ্কার কাপড় দিয়ে যাওয়ার জন্য বলেছিলেন প্রসূতি বিভাগের নার্সরা। সেই মতো খানিক পরে একটা নতুন কাপড় নিয়ে হাসপাতালের গেটে হাজির হয়েছিলেন সোনাবিবি। ষাটোর্দ্ধ ওই মহিলা বলেন, “বুধবার রাতে দুটো নাগাদ আমার বৌমার প্রসব বেদনা উঠলে হাসপাতালে নিয়ে আসি। ভোরবেলা নাতি হল। ছেলে হওয়ার পরে নার্স আমার কাছে পরিস্কার কাপড় চান। বাইরে আমার ছেলে অপেক্ষা করছিল। ব্যাগের মধ্যে তাঁর কাছে কাপড় রাখা ছিল। আমি তা আনতে গেটের বাইরে আসি। এর পরে কাপড় নিয়ে ভেতরে ঢুকতে গেলে গেটে আমাকে আটকায়। অনুরোধ করা সত্ত্বেও তারা আমার কথা শোনে না। এ নিয়ে আমার ছেলের সঙ্গে গেটের কর্মীদের বচসাও হয়। তখন ওরা অনেকে মিলে আমার ছেলেকে মারধর করে।”
সোনাবিবির মেয়ে বুলবুলি খান বলেন, “এর কিছু ক্ষণ পরেই ওয়ার্ডে ডাক্তারবাবু আসেন। এসেই তিনি বৌদির কাছে গিয়ে ‘বাড়ির লোক কে আছে, তাকে ডেকে পাঠা’ বলে তুই-তোকারি শুরু করেন। আমার মা ডাক্তারবাবুর কাছে গিয়ে দাঁড়াতেই ‘তোর ছেলে কোথায় ডেকে নিয়ে আয়’ বলেই আমার মায়ের গালে সপাটে চড় মারেন।”
তিনি বলেন, “মা ছিটকে মেঝেয় পড়ে যাওয়ার পরে ওই ডাক্তারবাবু লাথিও মারেন। এরপর বৌদির কাছে গিয়ে বলেন, ‘তোর বরকে আসতে বল। নাহলে এমন ওষুধ দেব যে ছেলে মরে যাবে।” এর পরেই ওই রোগীর বড়ির আত্মীয়রা ক্ষোভে ফেটে পড়েন এবং দোষী চিকিৎসকের শাস্তির দাবি জানিয়ে সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান। |
|
|
|
|
|