স্বরাষ্ট্র কমিটিরই বৈঠকে যোগ দিতে হাজির সুশান্ত
বশেষে বিধানসভায় দেখা গেল প্রাক্তন মন্ত্রী তথা গড়বেতার সিপিএম বিধায়ক সুশান্ত ঘোষকে। দেখা গেল একেবারে স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকে যোগ দিতে! ঘটনাচক্রে, যে কমিটিতে পশ্চিম মেদিনীপুরের কঙ্কাল-কাণ্ডে অভিযুক্ত এবং আগাম জামিনপ্রাপ্ত সিপিএম বিধায়কের মুখোমুখি বসে রাজ্যের দুই প্রাক্তন আইপিএস এবং অধুনা বিধায়ক! ঘটনাচক্রে, স্বরাষ্ট্র দফতরের মন্ত্রীও স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়!
কঙ্কাল-কাণ্ডে তাঁর নামে অভিযোগ দায়ের হওয়ার পর থেকেই আর বিধানসভায় দেখা যায়নি প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্তবাবুকে। হাইকোর্টে তাঁর আগাম জামিনের আর্জি মঞ্জুর হওয়ার পরে অজ্ঞাতবাস কাটিয়ে তাঁকে প্রথম জনসমক্ষে দেখা যায় মেদিনীপুর আদালতে। হাইকোর্টের নির্দেশে সেখানে হাজিরা দিতে গিয়ে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছিল পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার এক সময়ের ‘ডাকসাইটে’ নেতাকে। সেই ঘটনার দু’দিনের মাথায় বিধানসভায় পুনরাবির্ভাব অবশ্য ঘটেছে নির্বিঘ্নেই। ঘণ্টাখানেক বিধানসভায় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় বৃহস্পতিবার সুশান্তবাবু বলেন, “আমি বিধানসভায় এসেছিলাম স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটির বৈঠকের জন্য। শুক্রবারও আসব। একটি কমিটির বৈঠক আছে। এ বার থেকে বিধানসভায় আসব। আপনাদের (সংবাদমাধ্যম) সঙ্গে দেখা হবে, কথা হবে!” মেদিনীপুর আদালত চত্বরের ঘটনা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি পশ্চিমাঞ্চল উন্নয়ন দফতরের প্রাক্তন মন্ত্রী। এত দিন কোথায় ছিলেন, মুখ খোলেননি তা নিয়েও। আর কঙ্কাল-কাণ্ড নিয়ে শুধু বলেছেন, “আদালতে মামলা চলছে। এই সংক্রান্ত বিষয়ে কিছু বলব না। বিধানসভায় এই নিয়ে কিছু জানানোর প্রয়োজন হলে জানাব।”
বিধানসভায় গরহাজিরা এবং কোথাওই তাঁর দেখা না-পাওয়া নিয়ে যখন হইচই হচ্ছে, বামফ্রন্টের পরিষদীয় দল প্রশ্ন তুলেছিল, মাওবাদীদের নিশানায় থাকা সুশান্তবাবুর নিরাপত্তার দায়িত্ব কি সরকার নেবে না? সরকারের তরফে বলা হয়েছিল, আইন নিজের পথে চলবে। কেউ অপরাধী হলে শাস্তি পাবেন, তিনি যত বড় নেতাই হোন না কেন। ঘটনাচক্রে দেখা যাচ্ছে, যে অভিযুক্ত বিধায়ককে নিয়ে এত বিতর্ক, তিনি স্বরাষ্ট্র বিষয়ক স্থায়ী কমিটিরই সদস্য! ওই কমিটির চেয়ারম্যান তৃণমূলের বিধায়ক তাপস রায় অবশ্য বলেন, “কে কোন কমিটির সদস্য হবেন, তা সংশ্লিষ্ট দলই ঠিক করে। এই কমিটির জন্য সিপিএম সুশান্তবাবুর নাম পাঠায়। আমাদের অন্য কিছু করার অবকাশ ছিল না।” সরকারি মুখ্য সচেতক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “বিভিন্ন দল কমিটিগুলির জন্য যাঁদের নাম পাঠায়, তা মেনে নেওয়াই দস্তুর। সংঘাতে সচরাচর যাওয়া হয় না।”
বাম শিবিরের বক্তব্য, দুই প্রাক্তন মন্ত্রী সুশান্তবাবু এবং আব্দুর রেজ্জাক মোল্লার নাম স্বরাষ্ট্রের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থায়ী কমিটির সদস্যপদের জন্য সচেতন ভাবেই পাঠানো হয়েছিল। বস্তুত, বিরোধীরা চেয়েছিল স্বরাষ্ট্র কমিটির চেয়ারম্যান পদটিই। সরকার তার বদলে সরকারি আশ্বাসন কমিটির চেয়ারম্যান পদটি বিরোধীদের দেয়। আশ্বাসন কমিটির চেয়ারম্যান হয়েছেন রেজ্জাক এবং ওই কমিটিতেও আছেন সুশান্তবাবু। যে কমিটির বৈঠকের জন্য আজ, শুক্রবার ফের বিধানসভায় যাওয়ার কথা তাঁর। বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রের কথায়, “আমরাই সুশান্তবাবুর নাম স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিটির জন্য পাঠিয়েছিলাম।” বাম শিবিরের বক্তব্যেই পরিষ্কার, ‘অভিযুক্ত’ বিধায়ক বলে যাঁকে নিয়ে হইচই হচ্ছে এবং সরকারও যাঁকে ‘অব্যাহতি’ দিতে চাইছে না, পরিষদীয় রেওয়াজ মেনে তাঁকেই খাস স্বরাষ্ট্র বিষয়ক কমিটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে!
সূর্যবাবু এ দিন বলেছেন, “সুশান্তবাবু এ বার থেকে বিধানসভায় আসবেন। আগাম জামিনের শর্তে যা আছে, তাতে তাঁর বিধানসভায় আসতে কোনও বাধা নেই।” পরিষদীয় সূত্রের খবর, স্থায়ী কমিটির বৈঠকেও এ দিন সুশান্তবাবু জানিয়েছেন, স্পিকার নির্বাচনের পর থেকেই তিনি আর বিধানসভায় আসতে পারেননি। ফলে, কমিটির আগের দু’টি বৈঠকেও থাকতে পারেননি। এর পর থেকে থাকবেন।
Previous Story Rajya Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.