টিএমসিপি-সিপি’র সংঘর্ষ নিয়ে বিব্রত স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী
মেদিনীপুরে দলের ছাত্র সংগঠন টিএমসিপি-র (তৃণমূল ছাত্র পরিষদ) সঙ্গে শরিকদল কংগ্রেসের ছাত্র সংগঠন সিপি-র (ছাত্র পরিষদ) সংঘর্ষ নিয়ে উদ্বিগ্ন, বিব্রত স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী। মাত্র দু’মাস বয়সী জোট-সরকারের পক্ষে জোটের দু’দলের ছাত্র সংগঠনের মারামারি যে ভাল বিজ্ঞাপন নয়, সেটা যদি মুখ্যমন্ত্রীর ভাবনার একটা কারণ হয়, তবে অন্য কারণটি হল ক্রমবর্ধমান ছাত্র-সংঘর্ষের ফলে রাজ্যে শিক্ষার পরিবেশ নিয়ে জনমনে তৈরি হওয়া আশঙ্কা। ঘনিষ্ঠমহলে যুগপৎ ক্ষোভ ও উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করার নির্দেশ দিয়েছেন বলে তৃণমূল সূত্রেরই খবর।
গোলমালের জেরে বন্ধ মেদিনীপুর কলেজ। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
বুধবার টিএমসিপি-সিপি সংঘর্ষ এবং তার জেরে মেদিনীপুরে কংগ্রেস কার্যালয়ে হামলার খবর পেয়েই মহাকরণে দলের ছাত্র সংগঠনের রাজ্য সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীকে ডেকে পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। সৌরভকে মেদিনীপুর রওনা হওয়ার নির্দেশ দেন। বৃহস্পতিবার সকালেই পৌঁছে যান সৌরভ। মেদিনীপুরে পৌঁছেই মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন আহত টিএমসিপি কর্মীদের দেখতে যান তিনি। হাসপাতাল থেকে বেরিয়ে সংগঠনের কর্মীদের সঙ্গে এক দফা কথা বলেন। পরে সংবাদমাধ্যমকে সৌরভ বলেন, “বুধবারের ঘটনা অপ্রত্যাশিত। আমাদের কর্মীদের সংযত থাকার কথা বলা হয়েছে। মেদিনীপুরের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রীও উদ্বিগ্ন। তাঁর নির্দেশেই এখানে এসেছি। কলকাতায় ফিরে গিয়ে তাঁকে রিপোর্ট দেব।” সেই সঙ্গেই টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতির তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, “এখানে জোটবদ্ধ ভাবেই আমাদের লড়তে হবে।” বুধবারের ঘটনা যে আর দু’টি ছাত্র সংগঠনের আন্তঃসম্পর্কেই সীমিত নয়, জোটের রসায়নেও প্রভাব ফেলছেসৌরভের মন্তব্যেই তার প্রমাণ। তবে একই সঙ্গে টিএমসিপি নেতার দাবি, “ক’দিন আগে যাঁরা এসএফআই করেছে, তাদের একাংশের মদতেই গোলমাল হচ্ছে।”
বুধবারের ঘটনার জেরে জেলার রাজনৈতিক মহলে আলোড়ন পড়ে। জোট-সম্পর্কে জটিলতা তৈরির আশঙ্কায় দু’দলের নেতারাই নিজেদের মধ্যে আলোচনায় উদ্যোগী হন। বুধবার রাতেই দু’পক্ষ বৈঠকে বসে। বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, এমন ঘটনা যাতে ফের না-ঘটে, সে দিকে দু’দলের জেলা নেতৃত্বই নজর রাখবেন। সিপি-টিএমসিপি দুই সংগঠনেরই বক্তব্য, রাজ্যে পালাবদলের পর এসএফআইয়ের একাংশ কর্মী দলবদল করেই গোলমাল বাধাচ্ছে। সিপি-র অভিযোগ, এসএফআই কর্মীদের টিএমসিপি মদত দিচ্ছে। আবার, টিএমসিপি-র পাল্টা বক্তব্য, দীর্ঘ দিন ধরে যারা কলেজ ক্যাম্পাসে সন্ত্রাস করেছে, সেই এসএফআই কর্মীরাই হাওয়া বুঝে সিপি-তে নাম লেখাচ্ছে। তাদের সেই সুযোগ দেওয়াও হেচ্ছে। ছাত্র সংগঠনগুলির নেতারা এ ভাবে পরিস্থিতি ‘ব্যাখ্যা’ করতে চাইলেও জনমনে ভুল ‘বার্তা’ যাতে না ছড়ায়, সে জন্যই রাতারাতি বৈঠকে বসেন কংগ্রেস, তৃণমূলের নেতারা। বৃহস্পতিবার সকালে হাজির হন টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতি। এর ফলে কয়েক দিন বাদে বৃ্হস্পতিবার দিনভর মেদিনীপুরে কলেজ-রাজনীতি অন্তত শান্ত ছিল। কিছুটা স্বস্তিতে ছাত্রছাত্রীরা। পশ্চিম মেদিনীপুরের পুলিশ সুপার প্রবীণ ত্রিপাঠির বক্তব, “পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। তবে মেদিনীপুর কলেজের আশপাশে পুলিশি নজরদারি রয়েছে।”
Previous Story Medinipur Next Story


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.