|
|
|
|
গুরুত্ব পাবেন উত্তরাধিকারী বাছাইয়ে |
রাজ্যে দাপট রেখেই সরছেন ইয়েদুরাপ্পা |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি |
জাতীয় রাজনীতির বাধ্যবাধকতায় মুখ্যমন্ত্রিত্ব ছাড়তে রাজি হলেও রাজ্যে নিজের কর্তৃত্ব পুরোদস্তুর বজায় রাখছেন বি এস ইয়েদুরাপ্পা।
লোকায়ুক্তের রিপোর্টে দুর্নীতিতে সরাসরি অভিযুক্ত হওয়ার পরেই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রীর পদ ছাড়ার জন্য ইয়েদুরাপ্পার উপরে প্রবল চাপ তৈরি করেন বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্ব। ইয়েদুরাপ্পাকে বলা হয়, বিভিন্ন দুর্নীতির ঘটনায় জেরবার কেন্দ্রীয় সরকারকে আসন্ন সংসদ অধিবেশনে কোণঠাসা করতে চায় দল। কিন্তু ইয়েদুরাপ্পা ইস্তফা না দিলে, সেই আক্রমণ অনেকটাই ভোঁতা হয়ে যাবে। গত কাল রাত থেকে দীর্ঘ আলোচনার পরে সেই যুক্তি মেনেছেন ইয়েদুরাপ্পা। জ্যোতিষে ঘোরতর বিশ্বাসী মুখ্যমন্ত্রী আজ সাংবাদিকদের বলেছেন, “৩১ তারিখ শুভদিন। ওই দিন আমি ইস্তফা দেব।” কিন্তু ‘প্রাপ্তির’ পাল্টা হিসেবে তাঁর দাবিদাওয়াও মেনে নিতে হয়েছে বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে।
বিদায়ী মুখ্যমন্ত্রীর শর্ত, নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন, রাজ্যসভায় মনোনয়ন-সহ রাজ্যে দলের একাধিক বিষয়ে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে হবে তাঁকে। কর্নাটক বিজেপিতে ইয়েদুরাপ্পার নিয়ন্ত্রণ এখনও এতটাই যে, সেই সব দাবিতে না করতে পারেননি নিতিন গডকড়ীরা। বিজেপি সূত্রে বলা হচ্ছে, কর্নাটকের ব্যাপারে ইয়েদুরাপ্পাকে বাদ দিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া খুবই কঠিন। কারণ তাঁর জোরেই দক্ষিণের কোনও রাজ্যে প্রথম বারের জন্য ক্ষমতায় এসেছে দল। তা ছাড়া, ইয়েদুরাপ্পার পিছনে রাজ্যের ক্ষমতাশালী লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের সমর্থনও রয়েছে। তাই রাজ্য-রাজনীতির প্রশ্নে তাঁর ঘোর বিরোধী হিসেবে চিহ্নিত অনন্ত কুমার বা বিজেপির বর্তমান রাজ্য সভাপতি কে এস ঈশ্বেরপ্পা পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে অনেকটাই পিছিয়ে পড়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে। সেখানে বরং ইয়েড্ডি-ঘনিষ্ঠ হিসেবে চিহ্নিত রাজ্যের প্রাক্তন বিজেপি সভাপতি সদানন্দ গৌড়া, রাজ্যের মন্ত্রী ভি এস আচারিয়া, সুরেশ কুমার বা শোভার নাম বিবেচনায় উঠে আসছে।
দলেরই একটি সূত্রের বক্তব্য, ইয়েদুরাপ্পা কোনও অবস্থাতেই লিঙ্গায়েত সম্প্রদায়ের কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে চাইবেন না। সেই অঙ্কে তাঁর ঘনিষ্ঠ এবং অ-লিঙ্গায়েত কেউ রাজ্যের পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন। সূত্রের খবর, পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রিত্বের দৌড়ে ভি এস আচারিয়া এবং সুরেশ কুমার অন্যদের তুলনায় কিছুটা এগিয়ে।
বিজেপি নেতৃত্বের কৌশল, নতুন মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে রেড্ডি-ভাইদেরও ‘ছুটি’ করে দেওয়া। কারণ, ইয়েড্ডি-সরকারে প্রথম সমস্যা বাধিয়েছিলেন এঁরাই। তা ছাড়া, বে-আইনি খনন-সহ একাধিক ঘটনায় রেড্ডি-ভাইদের দিকেই অভিযোগের আঙুল রয়েছে। বিজেপির অঙ্ক, এই সব সমস্যা মিটিয়ে ফেলতে পারলে রাজ্যে এখনই নতুন করে আর নির্বাচন করার প্রয়োজন হবে না। বছর দুয়েকের মাথায় নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন হলে পরিস্থিতি অনেকটাই থিতিয়ে যাবে। তা ছাড়া, এই মধ্যবর্তী সময়টুকুতে ইয়েদুরাপ্পাকে আইনি লড়াইয়ে সাহায্য করবে দলও। প্রয়োজন হলে নির্বাচনের আগে ফের ইয়েদুরাপ্পাকে নেতৃত্বে আনা হতে পারে। পরবর্তী মুখ্যমন্ত্রী নির্বাচন করতে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে অরুণ জেটলি ও রাজনাথ সিংহ আগামিকাল বেঙ্গালুরু যাচ্ছেন। |
|
|
|
|
|