|
|
|
|
ঘিঞ্জি গলিতে বই-বাঁধাই কারখানায় আগুন, আতঙ্ক |
নিজস্ব সংবাদদাতা |
ঘিঞ্জি গলির মধ্যে বই-বাঁধাইয়ের একটি কারখানার ছাদে মজুত কাগজের স্তূপে আগুন লেগেছিল। দমকলকর্মীরা দ্রুত তা নিয়ন্ত্রণ করে বড়সড় দুর্ঘটনা রুখলেন আমহার্স্ট স্ট্রিট থানার বৈঠকখানা রোড ও কার্তিক বসু লেন এলাকায়।
দমকল সূত্রের খবর, দোতলা ওই কারখানার ছাদটি টিন দিয়ে ঢেকে গুদামঘর হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল। তাতে থরে-থরে রাখা ছিল বই। বৃহস্পতিবার বিকেল পৌনে ৩টে নাগাদ সেখানেই আগুন লাগে।
ওই কারখানাতে ছাপার কাজও হয়। বৈঠকখানা রোডের ওই এলাকাটি ‘দপ্তরিপাড়া’ বলে পরিচিত। ঘটনাস্থলের আশপাশে বই ছাপা ও বাঁধাইয়ের বেশ কিছু কারখানা রয়েছে। স্থানীয় ছাপাখানার কর্মী গোপাল পাইক, সামাদুল রহমান ছিলেন ঘটনাস্থলের কাছেই। গোপালবাবু বলেন, “আচমকা গলগল করে ধোঁয়া বেরোতে দেখলাম। তার পরেই দাউদাউ করে আগুন। জ্বলন্ত কাগজের টুকরো উড়ে পড়তে লাগল চারপাশে।” ছাপাখানার লাগোয়া বাড়ি, অন্য কারখানার কর্মীরা আতঙ্কে বাইরে চলে আসেন। ঘটনাস্থলের পাশে সেন্ট পল্স কলেজেও ধোঁয়া ঢুকতে থাকে।
এলাকার বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে দমকলের ১০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। আশপাশের বাড়ির ছাদে উঠে জ্বলন্ত কাগজের গাদায় জল দিতে থাকেন দমকলকর্মীরা। এক ঘণ্টার মধ্যেই আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ভিড়ে ঠাসা ওই এলাকায় মোতায়েন ছিল পুলিশও। স্থানীয়েরা জানান, ওই বাড়িটিতে অরুণ বিশ্বাস ও শঙ্কর করের বই ছাপা ও বাঁধাইয়ের কারখানা রয়েছে। ঘটনার সময়ে সেখানে প্রায় ৪০-৫০ জন কর্মী ছিলেন। সকলেই নিরাপদে বেরিয়ে আসেন। আগুন ছাদের গুদাম ছাড়া অন্য কোথাও ছড়ায়নি। স্থানীয় বাসিন্দা সুশান্ত ভৌমিক বলেন, “বৈঠকখানা রোডের ওই এলাকার বই ছাপা এবং বাঁধাইয়ের কারখানাগুলিতে আঠা, কাগজ, কাঠের মতো দাহ্য জিনিস প্রচুর পরিমাণে মজুত রয়েছে। রাতের দিকে ওই ঘটনা ঘটলে আগুন আরও ছড়ানোর
আশঙ্কা থাকত।” |
|
কারখানার ছাদে উঠে আগুন নেভাচ্ছে দমকল। বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র |
দমকলমন্ত্রী জাভেদ খানের বক্তব্যেও একই রেশ ছিল। তিনি বলেন, “ভবিষ্যতে এমন অগ্নিকাণ্ড রুখতে স্থানীয় বাসিন্দা, কারখানার মালিক এবং দোকানদারদের সঙ্গে কথা বলা হবে। তাঁরা যাতে নিজেদের বাড়ি ও কারখানায় অগ্নি-নির্বাপক ব্যবস্থা তৈরি করেন।” ঘটনাস্থলে যান কলকাতার মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়ও। দমকল সূত্রে জানানো হয়েছে, কী ভাবে আগুন লাগল, তা জানতে তদন্ত চলছে। কলকাতা পুলিশের কার্যনির্বাহী ডিসি (উত্তর) সুজয় চন্দ বলেন, “ওই বাড়িতে দাহ্য কিছু পদার্থ রাখা ছিল বলে প্রাথমিক ভাবে শোনা গিয়েছে।” অন্য দিকে, এ দিনই সকালে শম্ভুনাথ পণ্ডিত হাসপাতালের একটি এসি মেশিনে আগুন লাগে। তবে মিনিট পনেরোর মধ্যেই তা নিভে যায়। হাসপাতালের সুপার তরুণকান্তি মান্না জানান, সকাল সওয়া ৯টা নাগাদ চোখ অপারেশনের ওটি-তে একটি এসি মেশিন থেকে ধোঁয়া ও ফুলকি বার হতে দেখা যায়। হাসপাতালের কর্মীরা দ্রুত ওই যন্ত্রের বিদ্যুৎ-সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন। দমকলের ৩টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নেভায়। সুপার জানান, ঘটনার সময়ে ওই ওটি-তে কোনও রোগী ছিলেন না। নিরাপত্তার কারণে আশপাশের ঘর থেকে রোগীদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তরুণকান্তিবাবু জানান, অগ্নিকাণ্ডের জেরে এ দিন ওই ওটি-তে নির্ধারিত অস্ত্রোপচারগুলি বাতিল করা হয়। প্রাথমিক ভাবে দমকলের অনুমান, শর্ট সার্কিট থেকেই আগুন লেগেছিল। ঘটনাস্থলে গিয়ে দমকলমন্ত্রী জানান, ওই হাসপাতালে দমকলের বিশেষজ্ঞ দল পরিদর্শনে যাবেন। হাসপাতালের নিরাপত্তার জন্য তাঁরা তাঁদের সুপারিশ কর্তৃপক্ষকে জানাবেন। |
|
|
|
|
|