|
|
|
|
কৈফিয়ত চান রুদ্র |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শিলিগুড়ি |
সপ্তাহে ৬ দিনের বদলে ফিজিক্যাল মেডিসিন এবং রিহ্যাবিলিটেশন-এর বহির্বিভাগ ৩ দিন খোলা থাকছে। বাকি দিনগুলি চিকিৎসকেরা উপস্থিত থাকছেন না। তাতে রোগীরা ফিরে যাচ্ছেন। সকাল ৯টায় বহির্বিভাগ খোলা হলেও মেডিসিন বিভাগে চিকিৎসক প্রায় ২ ঘণ্টা দেরিতে আসছেন। রোগীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হচ্ছে। মেডিসিন বিভাগে ভর্তি অন্তত ৫০ রোগী শয্যার অভাবে করিডরের মেঝেতে রয়েছেন। জলে ডুবে অসুস্থ হওয়ার পর আমবাড়ি ফালাকাটার এক কিশোরীকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। মঙ্গলবার দুপুরে সে মারা গেলেও এ দিন দুপুর পর্যন্ত মৃতদেহ ওয়ার্ডে পড়ে রয়েছে। ময়নাতদন্ত না হওয়ায় মৃতদেহ নিয়ে যেতে পারছেন না বাড়ির লোকেরা। হেনস্থা হতে হচ্ছে তাঁদের। সমস্যায় পড়েছেন ওয়ার্ডের অন্যান্য রোগীরাও। বুধবার মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল পরিদর্শনে গিয়ে পরিষেবার এই বেহাল দশা দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিলিগুড়ির বিধায়ক তথা বিধানসভার স্বাস্থ্য বিষয়ক স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। সমস্যা দূর করতে উদ্যোগী হন তিনি। হাতে ক্ষত থেকে হাড়ের ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রিয়াঙ্কা মাহাতো নামে এক শিশুর চিকিৎসার জন্য এ দিন মা রঞ্জুদেবী রুদ্রবাবুর দ্বারস্থ হলে তিনি সুষ্ঠু চিকিৎসার জন্য সমস্ত রকম সাহায্যের আশ্বাসও দিয়েছেন। রুদ্রবাবু বলেন, “সরকারি চিকিৎসা পরিষেবার উপর প্রত্যাশা রয়েছে। বিশেষ করে রাজ্যে নতুন সরকার গঠনের পর। তবে রাতারাতি সবকিছু করে দেওয়া সম্ভব নয়। আগামী ৬ মাসের মধ্যে এই মেডিক্যাল কলেজের হাল ফেরানোর চেষ্টা করছি। প্রিয়াঙ্কাকে চিকিৎসকেরা দেখছেন। তার জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধও আনা হয়েছে।” এ দিন ফিজিক্যাল মেডিসিন বিভাগে গিয়ে রুদ্রবাবু বিভাগীয় প্রধান পার্থপ্রতিম পানের কাছে জানতে চান কেন ৩ দিন বহির্বিভাগ বন্ধ রাখা হচ্ছে? পার্থবাবু জানান, রেসিডেন্সিয়াল মেডিক্যাল অফিসার এবং তিনি দুই জন মাত্র চিকিৎসক। ছাত্রদের ক্লাস নেওয়া, ওয়ার্ডে থাকা রোগীদের দেখতে যেতে হয় বলে ৩ দিনের বেশি বহির্বিভাগ খোলা রাখা যাচ্ছে না। ই যুক্তি দিলে রুদ্রবাবু ক্ষুব্ধ হন। তিনি জানিয়ে দেন ফিজিক্যাল মেডিসিনের অন্তর্বিভাগ হাসপাতালে নেই। রেফার করা রোগী ভর্তি হলে তাদের দেখতে যেতে হয় মাত্র। ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গেও তিনি কথা বলে জানতে পেরেছেন অনেক দিনই এই বিভাগে তাঁদের ক্লাস হচ্ছে না। অনেক সময় বহির্বিভাগে রোগী দেখার সময়তেই ক্লাস হয়। তাই ওই সমস্ত অজুহাতে বহির্বিভাগ বন্ধ রাখা যাবে না। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকদের একাংশ বাকি দিনগুলিতে ডুয়ার্সে গিয়ে চেম্বার করেন বলে পরিষেবা নিতে আসা লোকজনরা রুদ্রবাবুকে অভিযোগ জানিয়েছেন। এ দিন সুপার শৈবাল গুপ্ত জরুরি কাজে দার্জিলিঙে গেলে ফোনেই রুদ্রবাবু তাঁকে ৬ দিন ফিজিক্যাল মেডিসিন বহির্বিভাগ খোলা রাখতে বলেন। শৈবালবাবু বলেন, “রুদ্রবাবুর সঙ্গে কথা হয়েছে। সমস্যা মেটাতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।” মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসককে ৯ টা থেকেই বহির্বিভাগে রোগী দেখার নির্দেশ দেন রুদ্রবাবু। প্রয়োজনে ওয়ার্ডে রাউন্ড দিতে সময়ের অভাব হলে সেবার মনোভাব নিয়ে এক ঘণ্টা আগে কাজে আসার পরামর্শ দেন। মৃতদেহ ময়নাতদন্ত হতে দেরি হওয়ায় মৃতের বাড়ি লোকদের হেনস্থা হতে দেখে রুদ্রবাবু নিজেই ওয়ার্ড মাস্টারের অফিসে গিয়ে তাঁদের ১ ঘণ্টার মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলেন। হাসপাতালে শয্যার সংখ্যা বাড়ানোর চেষ্টা হচ্ছে বলেও তিনি আশ্বাস দিয়েছেন। |
|
|
|
|
|