নার্সিংহোমের মাটি খুঁড়ে পাওয়া গেল শিশুর দেহ
নার্সিংহোম চত্বরে মাটি খুঁড়ে সদ্যোজাতের দেহ মেলায় মালিককে গ্রেফতার করল পুলিশ।
মঙ্গলবার রাতেই দুর্গাপুরের লিঙ্ক রোড সংলগ্ন ধুনুরা প্লটের ওই নার্সিংহোমের কর্মীদের থেকে স্থানীয় বাসিন্দারা জেনেছিলেন, ভিতরে এক জায়গায় কিছু পোঁতা রয়েছে। বুধবার সকালে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট মনোতোষ দাসের উপস্থিতিতে মাটি খুঁড়ে পাওয়া যায় সাত মাসের শিশুকন্যার দেহ পাওয়া যায়। নার্সিংহোমের মালিক সাবিত্রী সিংহ নানা রকম সাফাই দেওয়ার চেষ্টা করলেও পুলিশ-প্রশাসন তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেনি। ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের রিপোর্ট পেয়ে দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক মৌমিতা বসু পুলিশকে ব্যবস্থা নিতে বলেন। পুলিশ মালিককে গ্রেফতার করে।
সাবিত্রীদেবী অবশ্য নিজেকে ‘নির্দোষ’ বলেই দাবি করেছেন। তিনি জানান, গত ২২ জুলাই সালোয়ার কামিজ পরা ১৭ বছরের এক অবিবাহিতা কিশোরী পেটে যন্ত্রণা নিয়ে নার্সিংহোমে ভর্তি হয়েছিলেন। নির্ধারিত সময়ের আগেই একটি শিশুর জন্ম দেন তিনি। পরে শিশুটি মারা যায়। ২৫ জুলাই তাঁকে নার্সিংহোম থেকে ছেড়ে দেওয়া হয়। সাবিত্রীদেবীর বক্তব্য, “শিশুটিকে ফেলেই তার মা চলে যান।” কিন্তু সে খবর পুলিশকে জানাননি কেন, তার সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি। মা চলে যাওয়ার পরে মৃত শিশুটির কী হল, তার ব্যাখ্যাও মেলেনি। সাবিত্রীদেবীর দাবি, “পরিবারের লোকজনই মৃত শিশু নিয়ে যান। এ ক্ষেত্রে কী হয়েছে, আমি জানি না।”
সেই নার্সিংহোম।
মঙ্গলবার রাতে নার্সিংহোমেরই এক কর্মী চত্বরের এক প্রান্তে মাটি খোঁড়ার চিহ্ন দেখতে পান। শিশুর দেহ নার্সিংহোম চত্বরের এক প্রান্তে পুঁতে দেওয়া সম্পর্কে তাঁর অভিমত, “সম্ভবত নার্সিংহোমের কোনও ঝাড়ুদার টাকার বিনিময়ে এ কাজ করে থাকতে পারে।” নার্সিংহোম সূত্রেই খবর ছড়িয়েছিল এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দারা গিয়ে খোঁড়া জায়গাটি দেখে পুলিশে খবর দেন। এ দিন পুলিশ গিয়ে কাগজপত্র ঘেঁটে দেখে, নার্সিংহোমের খাতায় কিশোরীর যে বেনাচিতির ঠিকানা লেখা হয়েছে, বাস্তবে তার অস্তিত্ব নেই। সাবিত্রীদেবীর সাফাই, “ভর্তির সময়ে রোগী যে ঠিকানা বলেন, তা-ই লেখা হয়।” কিন্তু নার্সিংহোমের কাগজপত্রে কিশোরীর বয়স ২০ বছর দেখানো হয়েছে কেন, তার ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি।
এখানেই মিলেছিল শিশুর দেহ।
সকালে মৃতদেহ তোলার সময়ে উত্তেজিত হয়ে পড়েন এলাকার বেশ কিছু বাসিন্দা। নার্সিংহোম কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উঠতে থাকে। স্থানীয় বাসিন্দা চন্দ্রনাথ পালধি, পল্টু ধীবরদের বক্তব্য, “এই ঘটনায় প্রমাণিত, অবাঞ্ছিত ভ্রুণ হত্যা করার জন্যই কিশোরী এই নার্সিংহোমে এসেছিলেন। তা না হলে তাঁরা মৃত শিশুর সৎকারের দায়িত্ব নিতেন। নার্সিংহোমে এই ধরনের বেআইনি কাজকর্ম চলতে দেওয়া হবে না।” শিশুর দেহ লোপাটের চেষ্টা করার অভিযোগে নার্সিংহোম মালিকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান তাঁরা। পুলিশের বক্তব্য, নার্সিংহোম মালিক এক-এক বার এক-এক রকম কথা বলেছেন। যা থেকে তাঁদের মনে হয়েছে, তিনি তথ্য গোপন করার চেষ্টা করছেন। মহকুমাশাসক বলেন, “নার্সিংহোম মালিকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”

নিজস্ব চিত্র।
First Page Swasth Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.