|
|
|
|
পথ পাল্টেছে ঘোড়াহাগা |
বিপন্ন ৫ হাজার চাষি |
নিজস্ব সংবাদদাতা• ময়নাগুড়ি |
নদী গতিপথ পাল্টে নেওয়ায় ময়নাগুড়ির দুটি গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তত ৫ হাজার চাষি বিপাকে পড়েছেন। ভরা বর্ষাতেও জলের অভাবে ধান রুইতে পারছেন না তাঁরা। সমস্যা বেড়েছে পাট পচানোর কাজে। চাষিদের আশঙ্কা বাঁধ দিয়ে নদীকে পুরনো খাতে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা না-হলে প্রায় ১২ কিলোমিটার এলাকা শুকিয়ে কাঠ হবে। তিরতির করে বয়ে চলা ছোট্ট নদী ঘোড়াহাগা এ ভাবে তাঁদের ভাগ্যে বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে তা স্বপ্নেও ভাবেননি সাপ্টিবাড়ি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের মধ্য শালবাড়ি, পশ্চিম শালবাড়ি, কোটেরবাড়ি ও মাধবডাঙা ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের গড়তলি, বালুরবাড়ি, জাকিরবাড়ি গ্রামের বাসিন্দারা। দু’দশক আগেও বর্ষায় নদীর উথলে ওঠা জলে চাষ আবাদের কাজ করতেন তাঁরা। উর্বর জমিতে ধান ও পাটের ভাল ফলন হয়েছে। শীতে কপি, বেগুন, লাউ, রকমারি শাকের মতো রবিশস্যে মাঠ ভরেছে। কিন্তু হঠাৎ বালুরবাড়ি গ্রামের কাছে নদী পুরনো গতিপথ ছেড়ে ইংরেজি ‘এল’ আকৃতি নিয়ে জল্পেশ মন্দির মুখো হয়ে জরদা নদীর সঙ্গে মিশে যেতেই পাল্টে যেতে শুরু করে সবুজের পরিচিত ছবি। চাষের জমি ভেঙে চা বাগানের গভীর নালার মতো নতুন পথ তৈরি করে নেয় ঘোড়াহাগা। দেড় দশক আগের ওই ঘটনার পরে শুধু যে নদীর পুরনো গতিপথ শুকিয়েছে তাই নয়। আশপাশের চাষের জমিতেও জলের টান ধরেছে। এ বার পরিস্থিতি এতটাই উদ্বেগজনক যে ভরা বর্ষায় পাম্প মেশিন দিয়ে জলের ব্যবস্থা করে তবেই ধান বোনার খেত তৈরি করতে হচ্ছে চাষিদের। বিশ্বজিৎ রায়, যোগেন সরকার, অমিয় রায়ের মতো স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, একদিন বৃষ্টি না হলেই মাটি শুকিয়ে ফেটে যাচ্ছে। নদী গতিপথ পাল্টানোর আগে এমনটা ছিল না। নতুন গতিপথে যত গভীরতা বেড়েছে ততই মাটি নিরস হয়েছে। পাম্প মেশিন দিয়ে জলের ব্যবস্থা করে ফসল বুনতে হচ্ছে। কিন্তু বাড়তি খরচের সঙ্গতি না-থাকায় বেশিরভাগ চাষি জমি ফেলে রাখতে বাধ্য হচ্ছেন। স্থানীয় কংগ্রেস নেতা পূণ্যদেব রায় বলেন, “গত ৬ বছর জলের সমস্যা ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে।” বাসিন্দারা জানান, বিপদ সামাল দিতে ১৩ বছর আগে নদীর নতুন গতিপথের ঠিক মুখে স্লুইস গেট তৈরি করে স্থানীয় পঞ্চায়েত সমিতি। অনেকটাই স্বস্তি ফিরে পায় চাষিরা। কিন্তু কোথায় কী! ঘোড়ামারার জলের ধাক্কায় গেটের কংক্রিটের বাঁধ ধসে ফের নদী নতুন খাতে ফিরে যায়। চাষিরা স্লুইস গেট তুলে বাঁধ দিয়ে নদীকে পুরনো খাতে ফেরানোর দাবি তুলেছেন। ময়নাগুড়ির বিডিও সম্রাট চক্রবর্তী বলেন, “বর্ষার মধ্যে নদীর গতিপথে কাজ সম্ভব নয়। বর্ষার পরে সেচ দফতরের ইঞ্জিনিয়ারদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |
|
|
|
|
|