সিদ্ধান্তে অনড় পরিষদ, চা পাতা আটকে বাগানেই
চা শ্রমিকদের মজুরি-চুক্তি চূড়ান্ত না-হওয়া পর্যন্ত বাগান থেকে চা পাতা বাজারে যেতে না-দেওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় আদিবাসী বিকাশ পরিষদ। রাজ্য সরকার ৪ অগস্ট ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকার পাশাপাশি বিকাশ পরিষদের নেতাদের ওই আন্দোলন প্রত্যাহারের অনুরোধ করেছে। চা পাতা বাজারে যেতে দেওয়া না-হলে সমস্ত বাগান আর্থিক সঙ্কটে পড়বে বলে জানিয়েছে চা বাগান মালিক সমিতিগুলিও। এই অবস্থায় বুধবার বানারহাটের লক্ষ্মীপাড়া চা বাগানে বৈঠকে বসেছিলেন বিকাশ পরিষদের নেতারা। সেখানে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার তরাই ও ডুয়ার্সে এক দিনের সাধারণ ধর্মঘট স্থগিত রাখা হয়েছে। বন্ধ রাখা হচ্ছে সকালের গেট মিটিংও।
আদিবাসী বিকাশ পরিষদের রাজ্য সম্পাদক তেজকুমার টোপ্পো বলেন, “ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দিনক্ষণ ঠিক করে রাজ্য সরকার সদিচ্ছার পরিচয় দিয়েছে। সেই জন্য বৃহস্পতিবারের সাধারণ ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে। তবে চা পাতা বাগান থেকে বার হতে দেওয়া হবে না।” পরিষদের চা শ্রমিক সংগঠন প্রোগ্রেসিভ টি ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাজেশ বারলা বলেন, “মজুরি-চুক্তি চূড়ান্ত না-হওয়া পর্যন্ত বাগান থেকে চা পাতা বাইরে যেতে দেওয়ার প্রশ্ন ওঠে না। ৪ অগস্টের পরিবর্তে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক যাতে ১ অগস্ট হয় সেই ব্যাপারে শ্রম কমিশনারের কাছে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।” বিকাশ পরিষদের পাশাপাশি, মজুরি-চুক্তি নিয়ে জোরদার আন্দোলনে নামতে চলেছে কো-অর্ডিনেশন কমিটি, ডিফেন্স কমিটি এবং আরএসপি’ও। আলিপুরদুয়ারের সাংসদ তথা আরএসপি’র ডুয়ার্স চা-বাগান ওয়ার্কার্স ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মনোহর তিরকি বলেন, “সোমবার থেকে শনিবার লাগাতার গেট মিটিং করব। তার মধ্যে সমাধানসূত্র বার না-হলে ১০, ১১ ও ১২ অগস্ট ধর্মঘটের পথে যেতে পারি।”
আন্দোলনের জের। বাজারে নয়, বাগানেই পড়ে চা পাতা ভর্তি সারি সারি ব্যাগ।
ডুয়ার্সের নিমতিঝোরা চা বাগানে নারায়ণ দে-র তোলা ছবি।
গত মার্চ মাসে চা শ্রমিকদের মজুরি নিয়ে চুক্তির মেয়াদ শেষ হওয়ার পর থেকেই নয়া ত্রিপাক্ষিক চুক্তি নিয়ে ডুয়ার্স জুড়ে ক্ষোভ বাড়ছে। আদিবাসী বিকাশ পরিষদ শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৬৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করার দাবি জানিয়েছে। আরএসপি’র দাবি ১৬৫ টাকা। অন্য দিকে, মালিকপক্ষ মজুরি ৮ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব দিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মালিকপক্ষের উপরে চাপ বাড়াতেই চা বাগান থেকে চা পাতা বাজারে যেতে বাধা দিচ্ছেন না বিকাশ পরিষদের সমর্থকেরা।
ইন্ডিয়ান টি অ্যাসোসিয়েশনের ডুয়ার্স শাখার সচিব প্রবীর ভট্টাচার্য বলেন, “চা পাতা আটকে রাখা হলে বেতন, রেশন দেওয়ার ক্ষেত্রে অসুবিধা হবে। তাতে শ্রমিকেরাও সমস্যায় পড়বেন। এই ধরনের অবরোধ উঠিয়ে নেওয়া উচিত ছিল।” এই ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন টি অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার উত্তরবঙ্গের সচিব রণজিৎ দত্ত। তিনি বলেন, “এমন চলতে থাকলে প্রতিদিনের খরচ তোলা সম্ভব হবে না।”
শ্রমিকদের যৌথ সংগঠন ডিফেন্স কমিটির আহ্বায়ক সমীর রায় বলেন, “আমরা গণতান্ত্রিক উপায়ে দাবি আদায়ে বিশ্বাসী। ৪ অগস্টের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে মজুরি চুক্তি নিয়ে ফয়সালা না-হলে বড় ধরনের আন্দোলনে যাব। কো-অডির্র্নেশন কমিটির আহ্বায়ক চিত্ত দে মনে করেন, “ধাপে ধাপে আন্দোলন জোরদার করা হবে।” আদিবাসী বিকাশ পরিষদের তরাই-ডুয়ার্স সমন্বয় কমিটির সভাপতি জন বার্লা বলেন, “নয়া মজুরি কত হবে তার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত বাগান থেকে কোনও চা পাতা বাইরে যেতে দেব না।”
Previous Story Uttarbanga Next Story



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.