|
|
|
|
ফৌজেও চাকরির সুলুকসন্ধান আদিবাসীদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
যাঁদের হাতিয়ার করে মাওবাদীরা জঙ্গলমহলে নিজেদের শক্তি বাড়াচ্ছে, সেই আদিবাসী যুবকদের সামনে সেনা জওয়ানের চাকরির দরজা খুলে দিতে চায় রাজ্য সরকার। কবে কোথায় ফৌজি জওয়ানের পদে চাকরির পরীক্ষা নেওয়া হয়, ন্যূনতম যোগ্যতাই বা কী, তার সবিস্তার বিবরণ সরকারই এ বার পৌঁছে দেবে জঙ্গলমহলের স্কুলে। সেনা-কর্তৃপক্ষও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। জওয়ানের পদে পরীক্ষার নমুনা প্রশ্নপত্র-সহ নিয়মাবলি সরকারকে দিয়েছেন তাঁরা।
এমনিতে পুরুলিয়া, বাঁকুড়া ও পশ্চিম মেদিনীপুরে জঙ্গলমহলে বেড়ে ওঠা আদিবাসী যুবকদের কাছে সেনা জওয়ানদের চাকরি পরীক্ষার খবর খুব একটা পৌঁছয় না। অথচ শারীরিক দক্ষতায় ওই যুবকেরা কারও চেয়ে কম নন। বরং সুঠাম চেহারা, উচ্চতা এবং ওজনের নিরিখে তাঁরা সহজেই ফৌজি জওয়ানের পদে নিয়োগ পরীক্ষার প্রথম ধাপ পেরিয়ে যেতে পারেন বলে মনে করছে রাজ্য সরকার। |
|
মাওবাদীরা চিরদিনই আদিবাসী যুব শক্তিকে ব্যবহার করে এসেছে। রাজ্য গোয়েন্দাদের রিপোর্ট অনুযায়ী জঙ্গলমহলে নতুন করে আদিবাসী ও অন্য যুবকদের দলে টানছেন মাওবাদী নেতারা। সামান্য প্রশিক্ষণ দিয়ে তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অস্ত্র ও টাকা। যৌথ বাহিনীর হামলার মুখে পড়ছেন ওই যুবকেরা। কখনও প্রাণ যাচ্ছে তাঁদের।
কখনও ধরা পড়ে কারাবাস করতে হচ্ছে।
ফৌজে চাকরির হদিস দিয়ে ওই যুব শক্তিকে মাওবাদী প্রভাব থেকে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা চালানো হচ্ছে।
ক্ষমতায় আসার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন, জঙ্গলমহলের ১০ হাজার আদিবাসীকে পুলিশ এবং এনভিএফে নিয়োগ করা হবে। এ বার সেনাবাহিনীতেও যাতে ওই যুবকদের নিয়োগ করা যায়, সেই ব্যাপারে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা সচিব বিক্রম সেন সম্প্রতি সেনা নিয়োগ পর্ষদের স্থানীয় কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তার পরেই জওয়ান নিয়োগের পরীক্ষার নিয়মাবলি, কী ভাবে আবেদন করতে হয়, লিখিত পরীক্ষার নমুনা প্রশ্নপত্র এবং শারীরিক সক্ষমতার মাপকাঠি সংবলিত তথ্য রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন সেনা-কর্তৃপক্ষ। ঠিক হয়েছে, সেই সব তথ্য জঙ্গলমহলের স্কুলে স্কুলে পাঠাবে স্কুলশিক্ষা দফতর।
পরের ধাপে ইচ্ছুক আদিবাসী ছাত্রদের জওয়ান নিয়োগের পরীক্ষার উপযুক্ত করে তুলতে প্রশিক্ষণ শিবির চালু করার কথাও ভাবছে সরকার। সেখানে ছাত্রদের লিখিত পরীক্ষার জন্য স্কুলের শিক্ষকেরাই প্রশিক্ষণ দেবেন। পাশাপাশি পুলিশকে দিয়ে শারীরিক সক্ষমতার তালিম দেওয়ার জন্য রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিবেরও সাহায্য চেয়েছে স্কুলশিক্ষা দফতর।
সেনাবাহিনী ও রাজ্য সরকারি কর্তাদের মতে, অন্যান্য রাজ্যের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে সেনাবাহিনীতে যোগ দেন অনেক কম যুবক। বিহার, পঞ্জাবের মতো সেনাবাহিনীতে পশ্চিমবঙ্গের নামে নির্দিষ্ট কোনও রেজিমেন্টই নেই। তাই উৎসাহ কম। তা ছাড়া কবে এবং কোথায় জওয়ান-পদের জন্য শারীরিক পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে, সেই তথ্য শুধু জঙ্গলমহল কেন, সাধারণ ভাবে গ্রামবাংলার যুবকদের কাছেও থাকে না। এত দিনে সেই অভাবটাই পুষিয়ে দিতে চাইছে রাজ্য সরকার। |
|
|
|
|
|