|
|
|
|
অভিযুক্তদের ধরতে গিয়ে নিগৃহীত পুলিশ |
বধূকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার স্বামী ও শ্বশুর |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বসিরহাট |
বধূ হত্যার দায়ে অভিযুক্তদের ধরতে গিয়ে নিগৃহীত হলেন পুলিশ কর্মীরা। শেষ পর্যন্ত অবশ্য দুই অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা গিয়েছে। মঙ্গলবার রাত ঘটনাটি ঘটেছে বসিরহাটের পিফাঁ দাসপাড়ায়। ধৃত কার্তিক দাস ও তাঁর বাবা কৃষ্ণপদকে বুধবার বসিরহাটের এসিজেএম আদালতে তোলা হলে বিচারক দু’জনকে ১৪ দিন জেলহাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। বসিরহাটের আইসি হবিবুর রহমান বলেন, “অভিযুক্তেরা এত দিন পলাতক ছিলেন। তাঁরা বাড়ি ফিরেছেন জানতে পেরে পুলিশ ধরতে গিয়েছিল। পুলিশ কর্মীদের কাজে বাধা দেওয়া হয়। দুই অভিযুক্তকে ছিনিয়ে নেওয়ারও চেষ্টা হয়েছিল।” খুব শীঘ্রই বাকি অভিযুক্তদের গ্রেফতার করা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর আগে হাসনাবাদের মুরারিশা গ্রামের রিনা মণ্ডলের মেয়ে ভবাণীর (২৬) সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল কার্তিকের। অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের দাবিতে অত্যাচার শুরু হয় ওই তরুণীর উপরে। রিনাদেবী পুলিশে দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন, বিয়েতে চাহিদা মতো সব কিছুই দেওয়া হয়েছিল। জামাইয়ের দাবি মেনে কিছু দিন আগে কিছুটা জমিও কিনে দেওয়া হয়। তাতেও মেয়ের উপরে অত্যাচার কমেনি। ওই জমিতে বাড়ি করে দেওয়ার দাবি শুরু হয়। এ সব নিয়ে আলোচনার সময়ে সকলের সামনেই কার্তিক স্ত্রীকে মারধর করেন বলে রিনাদেবীর দাবি। গত জুন মাসের শেষের দিকে অগ্নিদগ্ধ হন ভবাণী দাস। শ্বশুর বাড়ির লোকজন কেরোসিন ঢেলে তাঁকে খুনের চেষ্টা করেছে বলে হাসপাতালে জবানবন্দি দেন ওই বধূ। পরে তিনি মারা যান। এই ঘটনার পর থেকে অভিযুক্তেরা পলাতক ছিল বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ঘটনার পর থেকে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য রিনাদেবীর উপরে চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছিল বলে তাঁর দাবি। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কার্তিক কয়েক জন লোককে নিয়ে রিনাদেবীর মুরারিশার বাড়িতে হামলা করে। মাকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে রিনাদেবীর ছেলে সম্রাটকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। ওই রাতেই রিনাদেবীরা অভিযোগ দায়ের করেন হাসনাবাদ থানায়। সেখান থেকে খবর পেয়ে বসিরহাট থানার পুলিশ রাত ২টো নাগাদ কার্তিককে গ্রেফতার করতে দাসপাড়ায় আসে। তখনই বাধা আসে দাস পরিবারের তরফে। পুলিশ কর্মীদের নিগ্রহ করা হয় বলে অভিযোগ। পুলিশের গাড়ির চালককে হেনস্থা করা হয়। কার্তিক এবং তাঁর বাবাকে অবশ্য শেষ পর্যন্ত ধরে থানায় আনতে সক্ষম হয় পুলিশ।
কৃষ্ণপদবাবুর দাবি, বৌমার মৃত্যুর জন্য তাঁরা কেউ দায়ী নন। অতিরিক্ত জেদের বশে সামান্য একটা ঘটনা নিয়ে বাদানুবাদের জেরে ভবাণী নিজেই গায়ে আগুন ধরিয়ে দেন। পুলিশকে নিগ্রহ করা হয়নি বলেও দাবি করেছেন তিনি। অভিযুক্তদের ‘চরম শাস্তি’র দাবি তুলেছেন মৃত বধূর মা। |
|
|
|
|
|