|
|
|
|
চূড়ান্ত পর্বে ফুটছে মুর্শিদাবাদ ফুটবল লিগ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • বহরমপুর |
মুর্শিদাবাদ জেলা সিনিয়র ডিভিশন ফুটবল লিগ থেকে দুটি দল নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় এখন ৮টি দলের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে। রেফারির সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে লালবাগের তরুণ সমিতি এবং ৩টি ম্যাচে বিপক্ষ দলের কাছে হেরে বহরমপুরের চিত্তরঞ্জন ক্লাব নাম প্রত্যাহার করে নিয়ে এ বছর আর লিগে খেলবে না বলে আয়োজক সংস্থা মুর্শিদাবাদ ডিস্ট্রিক্ট স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনকে চিঠি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছে। আয়োজক সংস্থার পক্ষে তরুণ দত্ত বলেন, “গত ১৬ জুলাই হিন্দ ক্লাবের সঙ্গে তরুণ সমিতির খেলা ছিল। পেনাল্টিতে গোল করে হিন্দ ক্লাব ওই ম্যাচ ১-০ গোলে জিতে যায়। এর পরেই তরুণ সমিতির কর্মকর্তারা লিগ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য চিঠি দেন।”
রেফারি হিসেবে ওই ম্যাচ পরিচালনার দায়িত্বে ছিলেন জেলার প্রাক্তন ফুটবলার জঙ্গিপুরের সুবীর ভক্ত। গোলপোস্টের সামনে বিপক্ষের ফুটবলারকে ফাউল করায় রেফারি পেনাল্টি দেওয়ার পরে তরুণ সমিতির কর্মকর্তারা লিখিত অভিযোগ জানিয়ে লিগ থেকে নাম প্রত্যাহার করে নেন। এর পাশাপাশি বহরমপুরের চিত্তরঞ্জন ক্লাব লিগের ৩টি ম্যাচে বিপক্ষ দলের কাছে হেরে যায়। এর পরেই তারা এ বছর আর লিগ খেলবে না বলে জানিয়েছে। চিত্তরঞ্জন ক্লাবের ফুটবল দলের দায়িত্বে থাকা ব্রজগোপাল মৈত্র বলেন, “জেলার বিভিন্ন প্রান্তের যে সমস্ত ফুটবলারদের নাম নথিভুক্ত করা হয়েছে, তাঁদের অনুপস্থিতিতে মাঠে দল নামাতে পারছি না। ফুটবলের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকায় লিগের তিনটি ম্যাচ আমাদের হারতে হয়েছে। ফুটবলাররা যে খেলতে আসছেন না, তার পিছনে ক্লাবের আর্থিক অসচ্ছল অবস্থাও দায়ি।” |
|
ডোমকল ফুটবল লিগ। ছবি: বিশ্বজিৎ রাউত। |
তবে এ বারের লিগে সবচেয়ে বড় চমক যদি বহরমপুরের অভ্যুদয় ক্লাবের শোচনীয় অবস্থা হয়, তাহলে দীর্ঘ দু-দশক পরে লিগে অংশ নিয়ে ১৪ পয়েন্ট পেয়ে ব্রজভূষণ স্মৃতি সমিতির দ্বিতীয় স্থানে থাকা। লিগের ৬টি ম্যাচের একটিতেও তারা পরাজিত হয়নি। ৪টি ম্যাচ জিতেছে, ড্র করেছে ২টি ম্যাচ। অন্য দিকে, গত দু-বারের লিগ চ্যাম্পিয়ান অভ্যুদয় এখন পর্যন্ত ৪টি ম্যাচ খেলে ৭ পয়েন্ট পেয়ে সপ্তম স্থানে রয়েছে। লিগ তালিকায় শীর্ষে রয়েছে বহরমপুরের হিন্দ ক্লাব। ৫টি ম্যাচের সব কটিতেই জয়ী হয়ে তারা ১৫ পয়েন্ট সংগ্রহ করেছে।
লিগের ম্যাচে দুজনের বেশি বহিরাগত ফুটবলার খেলতে না দেওয়ার নিয়মকেই অবশ্য ক্লাবের এই দুরবস্থার জন্য দায়ি করেছেন অভ্যুদয়ের ক্রীড়া সম্পাদক বীরেন মণ্ডল। তাঁর কথায়, “লিগের প্রতিটি ম্যাচে বহিরাগত দুজন ফুটবলারের বেশি মাঠে নামানো যাবে না বলে এ বছর থেকেই আয়োজক সংস্থা নিয়ম চালু করেছে। ফলে গত দু-বছর যেমন প্রতি ম্যাচে ৬-৭ জন বহিরাগত ফুটবলার খেলত, এ বছর তা সম্ভব হয়নি। যদিও এ বছর কলকাতা থেকে দুজন ফুটবলার এনেছিলাম, কিন্তু সাফল্য মেলেনি।” সেই সঙ্গে অনুশীলনের ঘাটতির কথাও তিনি স্বীকার করেন। বীরেনবাবু বলেন, “টিফিন-যাতায়াত খরচ দেওয়া সত্ত্বেও অনুশীলনে ৪-৫ জনের বেশি ফুটবলার আসে না। একসঙ্গে অনুশীলন না করায় দলগত সংহতি গড়ে ওঠেনি।”
৬০-৭০’র দশকে কলকাতার ক্লাবগুলিকে যারা নিয়মিত ফুটবলার সরবরাহ করেছে, সেই ফ্রেন্ডস ইউনিয়ন ক্লাবের অবস্থাও তথৈবচ! লিগে গত ৪টি ম্যাচের ১টিতে ড্র আর তিনটি ম্যাচে পরাজিত হয়ে এক পয়েন্ট পেয়েছে তারা। তবে দুটি ক্লাব নাম প্রত্যাহার করে নেওয়ায় ‘ওয়াকওভার’ পেয়ে অতিরিক্ত তিন পয়েন্ট তাঁদের ঝুলিতে জমা পড়েছে। এ প্রসঙ্গে এফইউসি ক্লাবের সহকারি সম্পাদক সঞ্জয় রায় বলেন, “ফুটবলারদের আকাশছোঁয়া চাহিদা মেটাতে গিয়ে আমরা হিমশিম অবস্থা। ম্যাচের দিন দু-বার টিফিন, দুপুরের খাবার ও যাতায়াত খরচ সীমিত আর্থিক সামর্থ্যে পেরে উঠছি না। গোটা দল নিয়ে অনুশীলন করলে দু-হাজার টাকা খরচ হয়। এত টাকা পাব কোথায়?” তাই ক্লাবঘর সংস্কারের জন্য রাজ্য সরকারের কাছে ক্লাব কর্তৃপক্ষ আবেদন করেছে। ক্লাবের খরচ সামাল দিতে সেখানে জিম, আবৃত্তি ও গানের স্কুল খোলা হবে। সদস্যদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহের চেষ্টা শুরু হয়েছে।
|
দল |
খেলা |
জয়ী |
ড্র |
হার |
পয়েন্ট |
হিন্দ |
৫ |
৫ |
০ |
০ |
১৫ |
ব্রজভূষণ |
৬ |
৪ |
২ |
০ |
১৪ |
বালার্ক |
৬ |
৩ |
৩ |
০ |
১২ |
ভ্রাতৃসংঘ |
৫ |
৩ |
১ |
১ |
১০ |
শিবাজি |
৭ |
৩ |
১ |
৩ |
১০ |
ভেটারেন্স |
৬ |
২ |
২ |
২ |
৮ |
অভ্যুদয় |
৪ |
২ |
১ |
১ |
৭ |
এফইউসি |
৫ |
১ |
১ |
৩ |
৪ |
তরুণ সমিতি |
৫ |
২ |
১ |
২ |
৭ |
চিত্তরঞ্জন |
৩ |
০ |
০ |
৩ |
০ |
|
|
|
|
|
|